ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশিত: ০৪:১২, ৪ জানুয়ারি ২০১৮

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

বর্তমানে ঢাকাসহ দেশের শহরগুলোতে নিরাপত্তাহীন প্রায় প্রতিটি নাগরিক। সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে অবস্থান কছে নারীরা। নারীরা রাস্তাঘাটে, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি, ছিনতাই অথবা দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এক সমীক্ষায় দেখা যায় নারীদের নিরাপত্তায় নেপাল, নাইজেরিয়া, জর্দান, ব্রাজিল, জিম্বাবুয়ের চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ। অবস্থান ষষ্ঠতে। বাংলাদেশের শহরগুলোতে পঞ্চাশ শতাংশের বেশি নারী কোন না কোন সহিংসতার শিকার হন। ষাট শতাংশের বেশি নারীরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে কোন প্রতিকার পান না এবং দ্বিতীয় দফায় হয়রানির শিকার হন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ কোন অংশে কম নয়। তাদের নিরাপত্তা অত্যাবশ্যক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা অত্যন্ত জরুরী। অনেক সময় পুলিশের সহযোগিতার বদৌলতে অনাকাক্সিক্ষত মন্তব্যই নারীদের শুনতে হয়, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। পুলিশের মনোভাব পরিবর্তন দরকার। দরকার আইনের দুর্বলতা দূর করা। আবার এটাও সত্য যে সহিংসতা করেও অপরাধীরা পার পায় এবং অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা না গেলে অপরাধীরা উৎসাহিত হবে। এখন অবশ্যই তাই হচ্ছে। নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ দায়িত্ব রাষ্ট্রেরও। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর দক্ষতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানো, আইনের দুর্বলতা দূর করাসহ অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা। শহরে শহরে অপহরণ বাণিজ্য ব্যাধিতে রূপ ধারণ করেছে। শিকার হচ্ছে শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, ছাত্রছাত্রী, তরুণ, তরুণী, শিশু এবং নানা পেশার লোকজন। অপহরণের পর নিখোঁজ। খোঁজ না পাওয়া গেলে মৃত অথবা গুম করা হচ্ছে পানির ট্যাংকে ড্রেনে, বিলে, ঝিলে। অপহৃত ব্যক্তি ফিরে এলেও নিরাপত্তার ভয়ে থানা বা আদালতে যান না। ফলে অপহরণকারীরা পুনঃঘটনা ঘটাতে তৎপর হয়। অপহৃত ব্যক্তি যদি ফিরে এসে অপহরণকারীদের সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ আইনের আশ্রয় নেয় তাহলে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সহজ হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা প্রদানে রাষ্ট্রকে নিশ্চয়তা দিতে হবে। চরমপন্থীরা প্রগতিশীলদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রেখে চালাচ্ছে হত্যাকা-। স্বামী দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে নারী, গৃহকর্তা-গৃহকর্তী দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে কাজের লোক। ধর্মান্ধদের রোষানলে পড়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে নারীরা, মুক্তচিন্তার মানুষ। সবই জায়েজ ধর্মান্ধদের কাছে। ধর্মকে ব্যবহার করছে ঢাল হিসেবে। ধর্মান্ধরা নিজেদের আইনে বর্বরতা চালাচ্ছে সমাজে। ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা বিধানে রাষ্ট্রের পাশাপাশি সমাজকে সোচ্চার হতে হবে। মোবাইল মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মোবাইল ব্যবহারে সুবিধা-অসুবিধা দুটোই আছে। কাজেই সতর্ক থাকা বাঞ্চনীয়। মোবাইলে চলছে চাঁদা আদায়ের হুমকি, অপহরণের হুমকি, নির্যাতনের হুমকি। মোবাইল ব্যবহারে বিপদগামী হচ্ছে তরুণ সমাজ। প্রত্যেক পরিবারের উচিত নিজ নিজ সন্তানদের মোবাইল ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা। বিচারহীনতার কারণেই একের পর এক ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবহেলার কারণে নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ। জননিরাপত্তার দিকে নজর দেওয়া যেমন সরকারের দায়িত্ব তেমনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর অধিক তৎপরতাও জরুরি। একটি সমৃদ্ধিশীল সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সমাজের প্রত্যেক নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কাজীপাড়া, বোদা, পঞ্চগড় থেকে
×