ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাস নিয়ে ভাবছেন না কোহলি

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১ জানুয়ারি ২০১৮

ইতিহাস নিয়ে ভাবছেন না কোহলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ১৯৯২-২০১৩, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে মোট ছয় টেস্ট সিরিজ খেলে একটিতেও জয় পায়নি ভারত। সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১০ এ তিন টেস্টের সিরিজ ১-১এ ড্র। বর্তমান ক্রিকেটের মোড়ল দেশ গত ২১ বছরে প্রোটিয়াদের মাটিতে সাদা পোশাকে টেস্ট ম্যাচই জিতেছে মাত্র দুটি। আরেকটি ২০০৬ সালে ২-১এ হেরে যাওয়া সিরিজে। বাকি চার সফরে কেবলই হার। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে আকাশে উড়তে থাকা ভারত কি এবার পারবে ব্যর্থতার ইতিহাসটা বদলে দিতে? অনেকে বলছেন, নাম্বার ওয়ান দলটির সেই সম্ভাবনা রয়েছে। বলিউড-কুইন আনুশকা শর্মার সঙ্গে বিয়ের কারণে ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছোট ফরমেটের দুটি সিরিজে মাঠের বাইরে থাকা অধিনায়ক কোহলি পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, ইতিহাস নয়, সফরে নিজেদের শতভাগ নিংড়ে দেয়াই তাদের লক্ষ্য। তাহলে ফলটা আপনিই আসবে, যেমনটা গত দুই মৌসুম ধরে এসেছে। শুক্রবার কেপটাউন দ্বৈরথ দিয়ে শুরু হচ্ছে শীর্ষ দু-দলের বহুল আলোচিত তিন টেস্টের এ সিরিজ। ‘বিশ্বের যে কোন পরিবেশে টেস্ট জেতার মতো বোলিং আক্রমণ এবং ভারসাম্য আমাদের দলে রয়েছে।’ দক্ষিণ আফ্রিকায় পা রেখে প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই বলেন কোহলি। আর টেস্ট জিততে যে বোলারদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি সেটা তো সবারই জানা। ইতিহাস সৃষ্টি নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না হালের এ রান-মেশিন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সেশনগুলো জেতা, আমরা বর্তমানের উপর মনোনিবেশ করতে চাই। আমাদের নিজেদের দক্ষতার ১০০ শতাংশ কী করে প্রকাশ করা যায়, সেটা নিয়েই ভাবছি। কোন একটা নির্দিষ্ট দেশে এসে ইতিহাস সৃষ্টি করাটা আমাদের লক্ষ্য নয়।’ ২০১৩-১৪ সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সেই দলের সতেরো জনের মধ্যে তেরো জন এ বারেও আছেন। অভিজ্ঞতার দিক থেকে তাই স্বস্তি ভারত অধিনায়কের, ‘আমাদের অনেকেই এখানে খেলেছে। কিন্তু আসল তফাতটা হচ্ছে তখন কতগুলো ম্যাচ খেলে এসেছিলাম আর এখন আরও কত বেশি ম্যাচ খেলে এখানে এসেছি। এখন নিজেদের খেলাটা আরও অনেক ভাল ভাবে বুঝি আমরা। নিজেদের দক্ষতার উপর অনেক বিশ্বাস তৈরি হয়েছে।’ কোহলি পরিষ্কার করে এটাও বলে দিয়েছেন যে, প্রস্তুতি ম্যাচ বাতিল করে ভারত কোন ভুল করেনি। ‘দু-টা দিন নষ্ট করার কোন মানে হয় না। প্রস্তুতি ম্যাচে নেমে হাফসেঞ্চুরি করা যেতে পারে হয়তো। কিন্তু সেই হাফসেঞ্চুরির কোন মানে নেই।’ ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক মনে করছেন, তার চেয়ে নিজেদের ছেলেদের নিয়ে দিনে দুটো করে প্র্যাকটিস সেশন করা ভাল। শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম প্র্যাক্টিসে নেমেই দুটো সেশন করেছেন তারা। কোহলি বলছেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচ খেললে, যে রকম পিচ দেবে তাতেই খেলতে হবে। নিজেদের মতো প্র্যাক্টিস করলে পিচে পানি ঢেলে নিজেদের খুশি মতো পরিস্থিতি তৈরি করে অনুশীলন করা যায়।’ দক্ষিণ আফ্রিকার শক্ত, দ্রুতগতির বাউন্সি পিচে তাদের পরীক্ষা নেবে সে দেশের পেসাররা, মানছেন কোহলি। একই সঙ্গে জানিয়ে দিতে ভুলছেন না যে, তারাও তৈরি হয়ে নামবেন। ‘কেপটাউন টেস্টের আগে আমরা তৈরি হয়ে যাব।’ সংবাদ মাধ্যমে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক ও দুই নম্বর দলের মধ্যে আসন্ন এই সিরিজের সেরা আকর্ষণ হিসেবে ফের তার সঙ্গে এবি ডিভিলিয়ার্সের দ্বৈরথকে তুলে ধরা হচ্ছে। কোহলি যেটা মানছেন না, ‘এমন নয় যে, এই সিরিজে শুধু এই দু-জনই খেলছে। আমরা যেমন এ বিকে আউট করতে চাইব, তেমনই ওরা আমাকে বা পূজারাকে বা রাহানের উইকেট নেয়ার চেষ্টা করবে।’ তার সঙ্গে এ বি-র দ্বৈরথের উপর সিরিজের ভাগ্য নির্ভর করে আছে বলে মনে করছেন না কোহলি, ‘বাইরে যতই মশলা তৈরি করা হোক, মাঠের মধ্যে যে দল ধারাবাহিক ভাবে, দীর্ঘ সময় ধরে ভাল ক্রিকেট খেলবে, তাদেরই সিরিজ জেতার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।’ অভিজ্ঞ ও তারুণ্যের সমন্বয়ে তৈরি দলটার মধ্যে কঠিন প্রতিপক্ষ এবং চ্যালেঞ্জের সামনে ভাল করতে চাওয়ার খিদে রয়েছে বলেও মনে করেন ভারত অধিনায়ক, ‘প্রত্যেকে এই চ্যালেঞ্জকে সুযোগ হিসেবে দেখছে। সেটা খুবই উত্তেজিত হওয়ার মতো ব্যাপার’।
×