ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুস্থদের দুম্বার মাংস ‘চেয়ারম্যানের ঘরে’

প্রকাশিত: ০৮:০১, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭

দুস্থদের দুম্বার মাংস ‘চেয়ারম্যানের ঘরে’

বিডিনিউজ ॥ বগুড়ার ধুনটে সৌদি আরব থেকে আসা দুম্বার মাংস দুস্থদের না দিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। ধুনট উপজেলার দশটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা দুম্বার মাংস ভাগাভাগি করেছেন বলে গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের চিথুলিয়া গ্র্রামের বাসিন্দা বাদশাসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকের অভিযোগ । উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আট কেজি থেকে ১৪ কেজি ওজনের মোট ১২৬ প্যাকেট দুম্বার মাংস সৌদি আরব থেকে ধুনটে এসেছিল।তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১টায় দশটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদস্যের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়, যাতে তারা মাংসগুলো এতিমখানা ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করেন। উপজেলার গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের ফয়জুল উলুম ইসলামী কওমি হাফেজিয়া মাদ্রাসার পরিচালক মাশরুর আলম বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে দুটি হেফজখানা। আমার মাদ্রাসা বা অপর এতিমখানায় দুম্বার মাংস দেয়া হয়নি। গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য জয়েদা বেগম বলেন, গভীর রাতে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ওরফে দুলা হুজুর ও আরেক ইউপি সদস্য আব্দুল হাই আমাকে এসে দেড় কেজি মাংস দেন। আমি রান্না করে ছেলেদের নিয়ে খেয়েছি। আমার ফুফাত ভাইকেও দিয়েছি। এ নিয়ে কথা বলতে মোবাইলে যোগাযোগ করেও ইউপি সদস্য সাইফুল, ইউএনও রাজিয়া সুলতানাকে পাওয়া যায়নি। আর এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি আরেক ইউপি সদস্য আব্দুল হাই। ধুনট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাল মিয়া বলেন, আমার বরাদ্দ পাওয়া তিন কার্টন এতিমখানা ও হেফজখানায় দিয়েছি। বাকিগুলো ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশরা নিয়েছেন। তবে গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি। মতুরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ বলেন, বগুড়ার বাইরে থাকায় মাংসগুলো এক মেম্বারকে দিয়ে আমি আনিয়েছিলাম। দুস্থরা মাংস পায়নি বলে আমিও শুনেছি। রবিবার বগুড়ায় ফিরে এ নিয়ে খোঁজ নিবেন বলে জানান তিনি। নান্দাইলে ২০২ কার্টন দুম্বার মাংস লুট ॥ সংবাদদাতা, নান্দাইল, তেকে জানান ,জেলার নান্দাইল থেকে ২০২ কার্টন দুম্বার মাংস লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার নান্দাইল মডেল থানা গেট থেকে ওই মাংস লুট করে দুর্বৃত্তরা। অপেক্ষা করে মাংস না পেয়ে এতিম ও দুস্থরা সকালে থানা থেকে ফিরে যায়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা যায়, এতিমদের মধ্যে বিতরণের জন্য ২০২ কার্টন দুম্বার মাংস বরাদ্দ দেয়া হয় এই উপজেলায়। এ জন্য পিআইওর কার্যালয় উপজেলার এতিমখানা (শিশু সদন) ও দুস্থদের নামের তালিকা করে। তালিকাভুক্ত এতিমখানা ও দুস্থদের মাংস নেয়ার জন্য ডাকা হয়। সে অনুযায়ী শুক্রবার সকালে দুস্থরা নান্দাইল মডেল থানার গেটে আসে। ময়মনসিংহ শহর থেকে মাংসভর্তি পিকআপ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসার কথা থাকলেও আসে শুক্রবার সকালে। থানায় পৌঁছানোর পর প্রশাসন তালিকা ধরে পুলিশের উপস্থিতিতে মাংস বিতরণের উদ্যোগ নিলে একদল দুর্বৃত্ত সেখানে হামলা চালিয়ে মাংসের কার্টন লুট করে নিয়ে যায়। পরে কয়েক জনকে আটক করলেও ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মাংস নিতে আসা দুস্থ মহিলা চ-ীপাশার হোসনে আরা, কাকচর গ্রামের নুরজাহান ও ফিরোজা খাতুন বলেন, গরিবের জন্য আসা মাংস প্যান্ট-শার্ট পরা লোকজন ও অন্যরা নিয়ে গেছে, আমরা পাইনি।
×