ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

জোহরা সালাম

গল্প ॥ মাতৃভূমি

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭

গল্প ॥ মাতৃভূমি

(গত সপ্তাহের পর) সিনেমা হলোই ছিল বিশেষত মধ্যবিত্তদের বিনোদনের জায়গা। ফোন ছেড়ে ফ্রিজ খুলে দেখে একেবারে শূন্য বাজার। আবার ভাবনা, নাহ এই আবহাওয়ার মধ্যে গাড়ি বের করা যাবে না। এই রাস্তাটা এলাকার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু। এখানেও পানি উঠে গেছে। নাজু মনে মনে বলল, ‘হে মাননীয় নগরপিতারা, ১টি করে জলযান আমাদের দরজায় পৌঁছে দিন প্লিজ।’ তারপর একাই হেসে উঠল। হাসান সাহেব বললেন, ‘হাসছো কেন?’ ‘হাসছি কতদিন জলযানে চড়িনি, এই সুযোগে যদি হয়ে যায়।’ সময় যেন নদীর ¯স্রোত থেকেও দ্রুত। রাত পোহালেই ক্যালেন্ডারের পাতায় নতুন দিন। এভাবেই একে একে উল্টে যায় ক্যালেন্ডারের পাতা। একটার পর একটা ক্যালেন্ডারও শেষ হয়ে যায়। হৃদয়ে দাগ পড়ে যায় যা মানুষ নিজে ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করতে পারে না। এটা তার সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যক্তিগত। সোনালি বাক্সে দামী বেনারসির মতোই যা তোলা থাকে। এতদিন শুধুমাত্র নাজুর ঝঝঈ পরীক্ষার জন্য গোটা পরিবারকে আটকে থাকতে হয়েছে। ঝঝঈ পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। এবার চুকাতে হবে এখানকার অবস্থান, যেতে হবে বাবার কর্মস্থল, ঢাকাতে। নাজুর হৃদয় সায় দেয় না, সব ছেড়ে, সবাইকে ছেড়ে যেতে হবে। কুচ্ছিার কোর্ট স্টেশনে সবার থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে নিজেকে সামাল দিতে পারল না নাজু। দুনয়ন বেয়ে নামল গড়াইয়ের ঢল। বার বার ওড়না দিয়ে চোখ মুছতে লাগল। ছোট বোন তমা এসে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল। ‘আব্বা তোকে খুঁজছে, ট্রেন এসে গেছে।’ সেসব কত স্মৃতি চিরদিন রয় অলোখে। ট্রেনে ফার্স্ট ক্লাস কামরাতেই উঠল ওরা। নাজুর সিট জানালার ধারেই। ট্রেন ধীরে ধীরে ছেড়ে দিল। নাজু বিড় বিড় করে বলল, ‘বিদায়, আমার ওড়না ওড়ানো ছেলেবেলা। আমার সব হাসি, কান্না, চাওয়া-পাওয়া সব তোমার কাছে রেখে গেলাম ছোট্ট শহর কুচ্ছিা। তুমি আমার রঙিন ফিতের বিনুনি করা দৌড়ে বেড়ানো সেই কিশোর বেলা; তুমি আমার জীবনের প্রথম ২১ ফেব্রুয়ারিতে খালি পায়ে প্রভাত ফেরিতে সামিল হওয়া। বাবার বকুনী, মায়ের আদর সব তুমি। বান্ধবীদের সঙ্গে স্কুল পালিয়ে সিনেমাতে যাওয়া সে তো তুমিই। মোতার কাছে গচ্ছিত রেখে যাচ্ছি আমার শৈশব-কৈশর, আমার চাওয়া-পাওয়া বড় যতনে।’ এরপরের সময়গুলো কেটেছে বড় কঠিন ব্যস্ততায়। স্বাধীনতা যুদ্ধ, মানুষের মৃত্যু কষ্ট। দলে দলে নিরীহ মানুষের পালানো। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ। দেশের জন্য, মা আর মাতৃভূমির জন্য যুদ্ধ করে হাসি মুখে অকাতরে জীবন বিসর্জন দেয়া। আজও মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে কুষ্টিয়ার কেয়া গ্রামের সেই কিশোর ছেলেটির কথা যে পাক হানাদার বাহিনীর বুলেটের সামনে বুক পেতে দিতে বলেছিল, ‘চালাও গুলি, আমার প্রতিটি রক্তবিন্দু ত্বরান্বিত করবে আমার মাতৃভূমির স্বাধীনতাকে।’ এমন লাখো শহীদের বিনিময়েই তো অর্জিত হয়েছে আমার বাংলাদেশ। হে স্বাধীনতা, তুমি আমার, তুমি আমার শুধুই আমার। আমি তোমায় ভালবাসি। জীবন বসে থাকে না, বসে থাকে না সময়। এরই মাঝে কবে যে কেমন করে নাজু ঐঝঈ, উবমৎবব একে একে সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে বুঝতেই পারে নাই। আশ্চর্য লাগে ভাবতে সেই স্বপ্নের সিনেমার নায়কের কথা একবারও মনে হয় নাই। মনে হয় নাই সে সব পাগলামীভরা দিনগুলোর কথা। হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল ভার্সিটির লাইব্রেরিতে একটি ছেলেকে দেখে। মানুষের সঙ্গে এত মিল হয় নাজু জানত না। লাইব্রেরিতে একটি ছেলের হেয়ার কাট আর স্টাইল দেখে নাজু থমকে গিয়েছিল। ‘আর এই তো আমার সেই স্বপ্নের নায়ক! কি হ্যান্ডসাম! অশোভন হলেও লাজু বার বার ফিরে তাকিয়েছে। কি কাককলীয় ব্যাপার! বই জমা দেয়াও একই সঙ্গে এবার নাজু নিজে যেচে আলাপ করল,‘- আমি নাজিয়া। আপনি...?’ ‘চলুন বাইরে যেয়ে কথা বলি।’ নাজুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দু’জনেই একটা নিরিবিলি জায়গাতে বসে পড়ল। তখন তো সবই নিরিবিলি ছিল। প্রথমে নাজুই মুখ খুলল, ‘আমি এম এ দর্শনের প্রথম বর্ষের। অবশ্য পার্ট ওয়ান পরীক্ষা আসি আসি করছে। ‘—এখানে কোথায় থাকেন?’ এবার হাসান জিজ্ঞাসা করল। ‘—কোথা মানে, গোটা পরিবারই ঢাকাতে। তবে ছাপোষা মানুষ তো’ এভাবেই পরিচয় থেকে প্রেম, পরিণতিতে পরিণয়। গতানুগতিক। বিয়ের তিন বছর পর শৈবালের জন্ম, নাজুর প্রথম সন্তান। বাবার মতো পুড়ুয়া ছেলে। সততা আর নীতির বাইরে একচুল ও নড়ে না। পিএইচডি করার পর বিদেশেই আছে সপরিবারে। সম্প্রতি নাজুর বড় ছেলের একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। প্রতিদিন ভোরবেলা ওকে ভিডিওতে না দেখলে মনটা সারাদিন খারাপ হয়ে থাকে। আর হৈ-হুল্লোর করা বান্ধবীরা? কবি সুফিয়া কামালের সেই কবিতার মতো,’ খেলার সাথীরা কোথায় আজ তারা ভুলিয়াও গেছি নাম।’ না, নাম ভোলে নাই নাজু। তাই এক আশ্চর্য ঘটনার মধ্য দিয়েই সাহেলিকে খুঁজে পেল। সালটা ১৯৯ এর গোড়ার দিক। অফিস তখন দুপুর দুইটা পর্যন্ত। রিকশা করে বাসায় ফিরছিল। তখনকার ঢাকা আর এখন? একটি একতলা বাসার সামনে ছোট একটি ডোবা। পানি শুকিয়ে কাদাময়। বোবাটির অতিক্রম করতে যেয়েই বিপত্তি। রিকশাওয়ালা ব্যালান্স করতে না পেরে রিকশাই ফেলে দিল ডোবার মধ্যে। নাজুও ডোবার মধ্যে। কাদা-পানিতে মাখামাখি, একেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা। দু’জন বয়স্ক লোক ধরে তুলল নাজুকে, সঙ্গে সঙ্গে রিকশাওয়ালাকে গালাগালি। একতলা বাড়িটির বারান্দায় দাঁড়িয়ে এক মাঝ বয়সী ভদ্রমহিলা। চীৎকার করে উঠলেন, ‘সাহেলী তাড়াতাড়ি আয়।’ একরাশ বিস্ময় দৃষ্টিতে সাহেলী এসে দাঁড়ালো বারান্দায় আর সঙ্গে সঙ্গে সেও চীৎকার করে বলে উঠলো,’ ‘আরে এত নাজু, নাজু।’ দৌড়ে এসে নাজুকে ধরে নিয়ে গেল বাসার ভেতর। খালাম্মা তাড়া লাগালেন, ‘যাতো সাহেলী বাথরুমে নিয়ে যা ওকে আর শুকনো কাপড় দে।’ ওদের সবারই তখন দুপুরের খাবার খাওয়া হয়ে গেছে। নাজুকে জোর করে ধরে খাওয়াতে বসালেন খালাম্মা। শিং মাছের তরকারি, সিম দিয়ে রান্না। নাজু খাচ্ছে আর ভাবছে, কেমন করে এসব ঘটলো। এ যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো। নাজুর ছোটবেলা যেন একলাফে সামনে এসে দাঁড়ালো। খালাম্মার হাতের রান্নার স্বাদ আজ ঢাকায় এত বছর পর। ওর মনে হচ্ছিল ওরা যেন কুষ্টিয়াতেই আছে, সেই খালাম্মার ছায়ায়, সাহেলীর সঙ্গে। জীবন আর সময় কখন কোথায় হারিযে গেছে। খালাম্মার রান্না আর মা’য়ের রান্না এক হয়ে গেছে। নাজুর সবকিছু যেন স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। সেই তো শুরু। তারপর সাহেলীর মাধ্যমে পপি। পপির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল রীমা, শেফালীদের। ফলে সবার সঙ্গেই আবার পূর্বের মতো যোগাযোগ, কথাবার্তা কোন অকেশনে গেট-টুগেদার। ওরা ফিরিয়ে আনতে চায় সেই বড়ই আচার, জাম আর আমড়া খাওয়ার সঙ্গে পুকুরে সাঁতার কাটার কুষ্টিয়ার দিনগুলো। আরও কত কি। এমন মধুময় দিনগুলো জীবন থেকে কি হারিয়ে যায়? না যায় না। তাকে ধরে রাখতে হয় মনের মণিকোঠায় সযত্নে। সেদিন বাসায় চায়ের টেবিলে সরগরম, সিনেমার লেজেন্ডারি হিরোদের নিয়ে। খুব ভয়ে নাজু ছোট ছেলেকে বলল তার পছন্দের কথা। প্রবাল জিজ্ঞেস করল, ‘কোন দেশের?’ ‘পাকিস্তানের।’ মুহূর্তের মধ্যে প্রবাল ইউটিউব থেকে বের করে দিল নাজুর সেই স্বপ্নের হিরোর গান, ছবি আর পিকচারাইজেশন, সিনেমা, বায়োগ্রাফি, ট্রিবিউট। অনেক বছর পর রাজু দেখল আবার সব, হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো মোর। মারা যাবার ৩৫ বছর পরেও এত ভক্ত, মানুষের শ্রদ্ধা। নাজুর ভাবতে খুব ভাললাগল। নাজু তার হিরোর কালার ছবিগুলো দেখে নাই। পর্দার রঙিন ছবিগুলো হয়েছে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর। আজ খুব মনে পড়ছে নাজুর তার চকলেটি হিরোর কথা। পানি সরে যাচ্ছে, আজ সে সাহেলীর বাসায় যাবেই। একসঙ্গে বসে চকলেটি হিরোর ছবি দেখবে। সন্ধ্যায় যে এক চমক আছে নাজু চিন্তাও করে নাই। চিনতে কষ্ট হয় নাই। দরজা খুলে দিল সাহেলীই। ‘একটা ফোন করে আসতে পারতি।’ সামনের মানুষটিকে চেনা চেনা মনে হচ্ছে । ‘আরে আমানত ভাইজান। ফোন না করে ভালই করেছিস। বিগ সারপ্রাইজ না?’ ‘আপ নাজু?’ - জিজ্ঞেস করলেন আমানত ভাইজান। বাংলাতে উত্তর দিল নাজু, ‘ঠিক ধরেছেন। এটা বোধ হয় সেকেন্ড টাইম দেখা হলো?’ ‘নো নো আই কাম টু বাংলাদেশ অফেন।’ সাহেলী বলল, ‘বস, মজার মজার কথা আছে।’ আমানতকে বলল সাহেলী, ‘ভাইজান, আপ উর্দু মে বলিয়ে, হাম ট্রানসেলেট কর দেঙ্গী।’ দোভাষীর কাজ করল সাহেলী। এরই মধ্যে একপ্লেট ফল এনে সামনে রেখে বলল, ‘খাঁ, ভাইজান অনেক ফল এনেছেন।’ গম্ভীরভাবে নাজু বলল, ‘আমাদের দেশেও বিভিন্নরকম অনেক ফল পাওয়া যায়। আমরা ভিখারি নই।’ ‘আপ এইসে কিউ বলতে হায়। আপ তো পহেলে বহুত ফ্রুটস সাহেলীকি সাথ খা চুকা যো হাম লে আয়াথা।’ ‘তখন আমাদর ৭১ ছিল না, ছিল না স্বাধীনতা। আপনারা মানুষ না পশু।’ নাজু বরাবরই একটু বেশিই ইমোশনাল। সাহেলী ওকে শান্ত করার চেষ্টা করল। গ্লাসের ঠা-া পানি ওকে জোর করে খাইয়ে দিল। নাজু আমানতের উদ্দেশ্যে আবারও বলল, ‘আমাদের অপরাধ কি ছিল। মুসলমান হয়ে মুসলমানদের রেপ করেছেন, হত্যা করেছেন। তাতে কি আমাদের স্বাধীনতা ঠেকাতে পেরেছেন? বরং আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।’ সাহেলী আর কি করবে?। ও বেচারার দু’তরফে অনুবাদ করতে করতেই মাথাখারাপের মতো অবস্থা। আমানত বলল, ‘আমাকে একটু সুযোগ দিন বলার আর ধৈর্য ধরুন।’ ‘তারপর যা হয় বলুন।’ নাজু কোন উত্তর দিল না। আমানত বলতে আরম্ভ করল। ‘আই রেসপেক্ট ইওর ফ্রিডম এ্যান্ড স্যালুট ইওর পিপ্ল।’ ’৭১ সালে যা ঘটে গেছে তাতে পাকিস্তানের সাধারণ জনতার কোন দায় ছিল না। সে দায় পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর এবং সামরিক বাহিনীর। জেনোসাইড চালিয়েছে ওরা। ‘পাকিস্তানের সাধারন জনগণতো প্রতিবাদ করে নাই।” খুব শান্ত গলায় বললো নাজু। ‘আপনি ওই সময়ের নিউজ পড়েছেন? আমরা মিছিল করেছি। স্টপ জেনোসাইড লিখে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছি। টিয়ারশেল, লাঠির ঘা খেয়েছি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে কথা বলার জন্য। মনে রাখবেন, কোন দেশের জনগণই ভুল করে না, অন্যায় করে না। জনগণ সবসময়ই ন্যায়ের পথে চলে। আপনাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের নৈতিক সমর্থন ছিল।’ নাজুর দু’গাল বেয়ে নামে শ্রাবণের ধারা। আমানত আবারও বলল,’ আজ আবার আমি আপনার কাছে সরি বলছি। আমি যেহেতু পাকিস্তানী, আপনি ঠিকই বলেছেন, আমরা দায় এড়াতে পারি না কখনও। আজ আবার আমি আপনাদের প্রতি ঘটে যাওয়া অন্যায় আর বর্বরতার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। এই ক্রাইমের কোন ক্ষমা হয় না, তারপরেও আপনারা মহান জাতি হিসাবে ক্ষমা করে দিন।’ আমানতের ব্যথিত গলা। সাহেলী বলল চোখ মোছ। তোর জন্য আরও মজার খবর আছে। নাজু আস্তে আস্তে চোখের পানি মুছল। বলল, ‘বলুন আমানত ভাই কি সে মজার খবর?’ উত্তরটা সাহেলীই দিল। ‘দীর্ঘ আট বছর আমানত ভাই তোর সেই প্রিয় নায়কের বিভিন্ন ছবির মিউজিক ‘ডিরেক্টর ছিল, জানিস?’ ‘তাতে আমার কি সাহেলী ?’ ‘তাহলে তার ছবির গানের পিকচারাজাইশেন এতবার কেন দেখিস?’ আমানত বলল, ‘আমি তার খুব নিকটজন হয়ে গিয়েছিলাম।’ ‘আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্মন্ধে তিনি কি কিছু বলেছেন?’ আমানত ভাই বললেন, ‘সেটাইতো বলবো।’ তিনি বলেছিলেন, ‘আমানত, তুমি তো মাঝে মধ্যে বাংলাদেশে যাও। শুনেছি ওখানে তোমার আত্মীয়স্বজন আছেন। কখনও সুযোগ আসলে বাংলাদেশী ভাই-বোনদের বলো ’৭১-এর ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে এবং পাকিস্তানের সকল শিল্পী সমাজের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছি।’ নাজুর চোখের মণি চক চক করে উঠল। ‘আপনি তো মিউজিক ডিরেক্টর, একটি গান শোনান তো দেখি।’ আমানত গাইতে শুরু করল, ‘ইউ আর ইন্্দি বিগিনিং, আই এ্যাম ইন্্দি এনডিং।’ ‘ওহঃ টেগোর সং ইন ইংলিশ।’ আমানত ফিক করে হেসে বলল, ‘তোমার হলো শুরু আমার হলো সারা। তোমায় আমায় মিলে এমনি বহে ধারা।’
×