ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে -জাফর ওয়াজেদ

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে -জাফর ওয়াজেদ

চিন্তা চেতনায় মেধা মননে একজন মানুষ যতই উদার হোক না কেন, তার মধ্যেও এক ধরনের সংকীর্ণতা দেখা যায়। আর এই সংকীর্ণতায় গরিবের ভেতরে এক ধরনের প্রতিহিংসাও এসে ভর করে। পরশ্রীকাতরতার জাল এসে বিস্তার ঘটায় চেতনায়। আবদ্ধ করে আষ্টেপৃষ্ঠে। আর তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে অপকর্মের ধারা তৈরি করে। সেই ধারায় অভব্যতা, অসৌজন্য আর অনাচার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এই ওঠার শুরু এবং শেষ খুঁজে পাওয়া না গেলেও, এর রেশ অনেক কিছু ভস্মীভূত করতে পারে। আর সেই ছাইয়ের মধ্যে চাপা থাকা আগুন জ্বলে উঠতে পারে আকস্মিক। সেই আগুন অবশ্য লকলক করে না। কিন্তু বিষাক্ত ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে চারপাশের পরিবেশ। ধোঁয়াচ্ছন্ন বাতাস শ্বাসকষ্ট বাড়ায়। চোখ জ্বালা করে। এই দুর্বিষহ অবস্থা সৃষ্টিতে রাজনীতিকরাও কম যান না। বিএনপি চেয়ারপার্সন তার কর্মকা-ে দূষিত বায়ু আর দূষিত পরিবেশ বিস্তার করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। তার এহেন ক্রিয়াকলাপে বহে না সুবাতাস। দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলময় অনেক কিছুকেই তিনি অতি সহজে উপেক্ষা শুধু নয়, অনিষ্টও করতে পারেন। স্বাভাবিক ধারায় যা কিছুর বিকাশ ঘটুক না কেন, তার টুঁটি চেপে ধরার মধ্যে তিনি সম্ভবত খুঁজে পান সোয়াস্তি। আর তখনই তার কণ্ঠ নিসৃত হতে থাকে ‘দেখে নেব’ জাতীয় প্রচ্ছন্ন হুমকির বার্তা। ‘ধরাকে সরা জ্ঞান করায়’ মোহাবিষ্ট হয়ে তিনি অঘটন ঘটন পটিয়সিতে পরিণত হতে পারেন অনায়াসে। দেশকে ভয়াবহ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে তিনি পূর্বাপর কোন চিন্তাই করতে চান না। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচারের মধ্যে সামান্য আত্মগ্লানিও তার মধ্যে বিচ্ছুরিত হয় না। বরং জোর গলায় তিনি বলতেই থাকেন, তিনি নির্দোষ। সপরিবারে নিরাপরাধ। তার সন্তানকুল পূতঃপবিত্র এবং দেশের মঙ্গল কামনায় সর্বদা উদগ্রীব ও ব্যতিব্যস্ত। সত্যের কাছাকাছি পৌঁছার কাজটি তিনি কখনও করতে পারেননি। বরং মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করার দুরূহ কাজে এতই পারদর্শী হয়ে উঠেছেন যে, তার মুখনিঃসৃত বাণী সত্যের অপলাপ হলেও তার মিথ্যাচারের আদর্শে অনুপ্রাণিতরা বেদবাক্য হিসেবে সেসব মিথ্যাকে বারবার প্রচার করে আসছে। আর এই নির্গলিত মিথ্যা ভাষণে অনেক প্রগতিমনার মস্তিষ্কে ঠাঁই নেয় এমনভাবে যে, এর বাইরে অন্য কিছু ভাবার মতো শক্তিমত্তা আর থাকে না। দুর্নীতি ও টাকা লোপাট মামলায় আদালতে দাঁড়িয়ে বেগম জিয়া নিজেকে অপাপবিদ্ধ ঠাহর করে যেসব বক্তব্য রেখেছেন, তাতে দম্ভই প্রকাশ পেয়েছে। এক মাস আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় দাঁড়িয়ে দাম্ভিকতার বাহুবল প্রদর্শন করে যেসব বিষোদগার করেছেন, তাতে তার হীনম্মন্যতার সংস্কৃতিকেই তুলে ধরেছেন। মিথ্যার আবরণে সবকিছুকে চাপা দিতে গিয়ে তিনি আসলে তার অন্তরে যে সত্তা কাজ করে, তাকেই উপস্থাপন করেছেন। প্রমাণ করেছেন তার মানসিকতার সামান্য পরিবর্তনও ঘটেনি। বিষোদগার করার যে স্বভাব তিনি ধারণ করে আসছেন দীর্ঘকাল ধরে, তার বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছেন। যাকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অন্ধ আক্রোশের বহির্প্রকাশ।’ আক্রোশ যদি অন্ধ হয়, তবে তার মধ্যে প্রতিহিংসার বিস্তারই ঘটে। যে হিংসার বশবর্তী হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের সঙ্গে সম্বোধন করে আসছেন। রাজনীতিতে আকস্মিকভাবে আবির্ভূত জেনারেলের স্ত্রী হুমকি-ধমকি ছাড়া যখন নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন না, তখন তার সঙ্গে সভ্যভব্য কারও পক্ষে কথা বলা সহজসাধ্য হয় না। সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি সংসদ সদস্যদেরও ‘চুপ বেয়াদব’ বলার মতো স্পর্ধার প্রদর্শন করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, স্বৈরতান্ত্রিকতার, সামরিকতন্ত্রের প্রতিভূ তিনি। দেশ-জাতি, দেশের সমস্যা, অগ্রগতি, উন্নয়নÑ এসব বিষয়ে কোন ইতিবাচক ভাষ্য তার পঠিত এবং অধীত বিষয় নয়। বরং নিজেকে সর্বোচ্চপদে সমাসীন দেখতে পছন্দ করেন। আর মানুষের প্রতি তার অবজ্ঞা ও ঘৃণার চরম নিদর্শন অজস্র। মানুষকে মানুষ হিসেবে ভাবার মতো মানসিকতা তিনি লালন করেন না। দেশের সম্পদকে ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে ভাবেন। আর তাই সে সম্পদ বিদেশে পাচার করার মধ্যে কোন অপরাধ বোধ কাজ করে না। এই যে জনগণের অর্থ সম্পদ লোপাটে পুত্র ও স্বজনসহ সক্রিয় ছিলেন ক্ষমতায় থাকাকালে, তার গোপনীয়তা বেশিদিন চাপা রাখা যায় না। অর্থ-বিত্ত-বৈভবে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছেন তিনি ও তার পরিবার, সে তথ্য এক-এগারোতে তারই সৃষ্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার উদ্ঘাটন শুধু নয়, মামলাও করেছে। এতিমের টাকা লোপাটের মামলায় অভিযুক্ত আসামি তিনি। সেই মামলায় তিনি যথাসময়ে হাজিরা দিতে পছন্দ করেন না। আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয় বলেই, আদালতের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনে বিন্দুমাত্র গ্লানিবোধ করেন না। তার শাসনামলে বিচার বিভাগকে তিনি নিয়ন্ত্রিত করে রেখেছিলেন। দলীয় লোককে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিচারকের আসনে বসিয়েছিলেন। তারই আবিষ্কৃত ও ক্ষমতার আসনে বসানো তিন উদ্দিন সরকার দুর্নীতির মাত্রা পুত্র হিসেবে খালেদা-তারেককে চিহ্নিত করে আইনের অধীনে নিয়েছিলেন। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার ক্ষেত্রে তিনি এখনও পিছিয়ে আছেন। আদালতে যথাসময়ে হাজিরা না দেয়ায় সেসব মামলার নিষ্পত্তিতে বিলম্ব ঘটছে। প্রয়াত স্বামী সামরিক জান্তা শাসক ও রাজাকার পুনর্বাসনকারী জিয়ার নামে তিনি ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ করে তহবিল গঠন করেছিলেন। এই তহবিলের অর্থের উৎস তিনি প্রকাশ করেননি, ২০০৮ সালের ৩ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলা করেছিল। নয় বছর পেরিয়ে গেলেও সেই মামলাকে যথারীতি পরিচালিত যাতে না হয়, সে জন্য নানা অজুহাত দেখিয়ে তিনি আদালতে প্রায়শই গরহাজির ছিলেন। অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের তহবিল থেকে। অভিযোগ এনে খালেদাসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করেছিল দুদক। সেই মামলার বিচার কাজ বিলম্বিত করতে বেগম জিয়া সবসময় সচেষ্ট ছিলেন। তার দু’দফা শাসনামলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন ধারণা প্রবল যে, দেশে ন্যায় বিচারের উপযোগী সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ এবং পরিস্থিতি নেই। বিচার বিভাগ স্বাধীন ও স্বাভাবিকভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করতে পারছে না। শাসক মহলের নানামুখী তৎপরতা, হস্তক্ষেপ ও প্রভাব বিস্তারের কারণে বিচারকরা আইনানুযায়ী ও বিবেক শাসিত হয়ে বিচার করতে পারেনি। আদালতের রায়ের কপি বাড়ি এনে বিএনপি নেতাদের পড়ে শোনানোর কাজটি করেছিলেন, তারই নিয়োজিত দলীয় ব্যক্তি বিচারক হিসেবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজটিও তিনি করতে দেননি। রায়, সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ প্রদানের ক্ষেত্রে বিচারকদের তোয়াক্কা করতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও তদীয় পুত্র হাওয়া ভবনের স্রষ্টার ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। খালেদা-তারেক জিয়া তুষ্ট এবং কিসে রুষ্ট হবেন সে কথা মাথায় রেখে বিচারকদের বলতে হয়েছে। বিচারকদের পদোন্নতি ও নিয়োগ এবং হয়রানি ও বদলির ক্ষমতা ছিল হাওয়া ভবনের হাতে। দেশে যে কোন কাজের জন্য হাওয়া ভবনকে কমিশন দিতে হতো। সেসব অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। যার বদৌলতে দুর্নীতি মামলায় পলাতক তারেক লন্ডনে দীর্ঘদিন ধরে রাজকীয় হালে বসবাস করছে। আরেক পুত্র প্রয়াত কোকোর পাচার করা অর্থের একাংশ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। দুর্নীতির মাতা-পুত্র নামে একটি গ্রন্থ বেরিয়েছিল, যাতে সব ফিরিস্তি ছিল। রেজা রায়হান রচিত গ্রন্থটিও প্রামাণ্য দলিল বলা যায়। ক্ষমতা দখল করার পর জান্তা শাসক জিয়া প্রায়শই বলে বেড়াতেন ‘মানি ইজ নো প্রবলেম।’ এর সত্যতা এবং বাস্তবতা পাওয়া যায় তার পরিবারে, দুর্নীতির মাতা-পুত্রের কাজকর্মে। তাদের কাছে অর্থ কোন সমস্যা নয়। যেখানেই টাকা কড়ি, সেখানেই হাওয়া ভবনের হাত প্রসারিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেনও বেগম জিয়াকে উদ্দেশ করে ‘এতিমের টাকা চুরি করে খেয়েছেন। এতিমের নামে টাকা এসেছে। মামলায় হাজিরা দিতে যান। একদিন যান তো দশদিন যান না, পালিয়ে বেড়ান। ব্যাপারটা কী? এতেই তো ধরা পড়ে যায় যে চোরের মন পুলিশ পুলিশ।’ সর্বশেষ আলজাজিরাসহ বিদেশী টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রে এবং দেশী গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে খালেদা-তারেকের অভাবনীয় দুর্নীতির বিবরণ। সৌদিতে জিয়া পরিবারের সম্পদ থাকার দুর্নীতি তদন্তে দুদকও ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, জিয়া পরিবারের দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণিত। তাদের দুর্নীতি নতুন করে প্রমাণ করার কিছুই নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সংবাদ সম্মেলনে এ টাকা পাচার ও সৌদিতে লগ্নী করার কথা উল্লেখ করেছেন। তথ্য প্রমাণ আছে বলেই প্রধানমন্ত্রী একথা বলেছেন। এতে গাত্রদাহ হয়েছে বিএনপির নেতা-নেত্রীদের। তারা অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন সত্যকে চাপা দেয়ার জন্য। ‘শাক দিয়ে যে মাছ ঢাকা যায় না’ এটা তার নমুনা বৈকি। সৌদি আরব নিজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার পর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এরকম তথ্য হয়ত সামনে আরও বেরিয়ে আসবে। ২০০৫ সালে ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন ডেকে বলেছিলেন খালেদা-তারেকের তিনশ সুটকেস বিদেশে পাচারের। সেসব সুটকেসে কী ছিল তার জবাব বিএনপি আজও দিতে পারেনি। সর্বশেষ তথ্য বলছে, সৌদি আরব ও কাতারসহ বিশ্বের ১২টি দেশে বাণিজ্যিক বিতানসহ পেট্রো কেমিক্যাল ব্যবসায় জিয়া পরিবারের ১২ হাজার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। প্যারাডাইস পেপার্সেও এসেছে বিদেশে অর্থপাচারের কাহিনী। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও পাচারের দায়ে বেগম জিয়াকে বিচারের সম্মুখীন হতেই হবে। দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে তিনি যেসব কর্মকান্ড- চালিয়েছেন, তার তথ্য ক্রমশ প্রকাশ হবেই। এদিকে উইকিলিক্স প্রকাশ করেছে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টির প্রতিবেদন, যা তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছিলেন। দুর্নীতির সেসব ফিরিস্তি নিয়ে প্রতিবেদনটি দৈনিক জনকণ্ঠ গত ১০ ডিসেম্বর প্রকাশ করেছে। মরিয়ার্টি উল্লেখ করেছেন, তারেক রহমান তার মায়ের সরকারের আমলে শত শত মিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক হন। স্থানীয় বড় বড় ব্যবসায়ীকে হুমকি দিয়ে বড় অঙ্কের চাঁদা আদায় ছিল তার নিয়মিত ব্যাপার। ভারতের সাবেক আইপিএস কর্মকর্তা শান্তনু মুখার্জীর গত ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে তারেক আন্ডার ওয়ার্ল্ডের মাফিয়ার সঙ্গে অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের সঙ্গে তারেকের ঘনিষ্ঠতা সর্বজনবিদিত। দুর্নীতির মাতা তকমা পেতেই পারেন বেগম জিয়া। আদালতে দাঁড়িয়ে কেঁদেছেন তিনি। হয়ত এই অপরাধবোধ থেকে যে, তিনি সম্পাদ লুটেরা। সেই খালেদার সঙ্গে আলোচনা বা সংলাপ করার জন্য যেসব সুশীল বা বুদ্ধিজীবী নামধারীরা সরব হয়ে উঠেছেন, তারা খালেদার দুর্নীতিকে বৈধতা দিতে চান। দুর্নীতিতে আক্রান্তের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা প্রসঙ্গে। আলোচনা হতে পারে দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অংশ না নেয়া প্রসঙ্গে। বেগম জিয়া মাসখানেক আগে জনসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘তিনি আওয়ামী লীগকে মানুষ বানাতে চান।’ নিজে দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত থেকে অপরকে মানুষ বানাতে চান, তখন নানামুখী প্রশ্ন আসে। বেগম জিয়া সম্ভবত রবীন্দ্রনাথের ‘বঙ্গমাতা’ কবিতাটি গভীর অনুধ্যান নিয়ে পাঠ করেছেন। কিন্তু নিজের জীবনে তার প্রতিফলন ঘটাতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে/মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে।’ কিন্তু দুর্নীতির গহন গভীর সমুদ্রে সাঁতরে বেড়ানো বেগম জিয়া নিজের সন্তানদের মানুষ বানাতে না পেরে আওয়ামী লীগকে বানাতে চান। সত্যি সেলুকাস। চোরের মার গলা যে বড় হয় তা আবার প্রমাণ হলো।
×