ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ষড়যন্ত্রকারীরাই মানব বন্ধন করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে টিটু রায়কে ফাঁসিয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

ষড়যন্ত্রকারীরাই মানব বন্ধন করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে টিটু রায়কে ফাঁসিয়েছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ১৬ নবেম্বর ॥ হিন্দু অধ্যুষিত ঠাকুরপাড়ায় ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে যে তান্ডব চালানো হয় তার পরিকল্পনা শুরু হয় মূলত নবেম্বরের ১ তারিখ থেকে। সেদিন স্ট্যাটাসটি ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে গত ৩ নবেম্বর শুক্রবার ঘটনাস্থলে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের আহ্বানকারীরা ওই সমাবেশের ছবি নিজেরাই ফেসবুকে ছেড়ে দেয় এবং ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া টিটু রায়কে গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে জনগণকে ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার জন্য উস্কানি দেয়া হয়। অথচ এ ঘটনার হোতা ও ইন্ধনদাতাদের কাউকেই এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে টিটু রায় লেখাপড়া জানে না, ফেসবুক কাকে বলে জানে না; তার বাড়িতে তান্ডব চালানো হলো। তাকেই গ্রেফতার করা হলো। অথচ ঘটনার মূল হোতারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেল। তারা আরও জানান, ওই সমাবেশ থেকে ১০ নবেম্বর আবারও মানববন্ধন ও সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়া হয়। সেই সমাবেশ সফল করতে পাগলাপীর ও পাশের খলেয়া ইউনিয়ন, সদর উপজেলার মমিনপুর ও তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়াল কুঠিসহ আশপাশের সব মসজিদে জুমার নামাজের সময় ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্য ফতোয়া দেয়া হয় এবং সবাইকে মিছিল-সমাবেশে যোগদানেরও আহ্বান জানানো হয়। জুমার নামাজের পর মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেনÑ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের জেলা সভাপতি বিএনপি নেতা এনামুল হক মাজেদী, মাসুদ রানা, ডাঙ্গিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন জামায়াত-শিবির নেতা। ফেসবুকে কটূক্তি ও অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগে রংপুরের পাগলাপীর শলেয়াশাহ ঠাকুরপাড়া গ্রামে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের মামলায় গঙ্গাচড়া থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা জামায়াত নেতা মোকাব্বের হোসেনকে (৪০) গ্রেফতার করে। একই অভিযোগে রংপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে একজনকে গ্রেফতার করেছে। গঙ্গাচড়া ও কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ তান্ডবের পরিকল্পনাকারী ও ইন্ধনদাতারা হলেন- জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের জেলা সভাপতি বিএনপি নেতা এনামুল হক মাজেদী, মাসুদ রানা, ডাঙ্গিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রকৌশলী জাপাকর্মী ফজলার রহমান, খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির সিরাজুল ইসলাম ও তার ছেলে তারেক, হাড়িয়াল কুঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ভাই পাগলাপীর মসজিদের ইমাম এবং ইকরচালি, তারাগঞ্জ ও আশপাশের মসজিদের ইমামসহ বেশ কয়েকজন।
×