বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে রাজনৈতিক কর্মকা-ে সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ। নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি, বিশৃঙ্খলা, পাল্টাপাল্টি চেয়ার ছোড়াছুড়ি করেন। তাই বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিতে পুলিশ বাহিনী ভয় পায়। কিন্তু পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বিএনপিকে অনুমতি দিয়েছে। এটাই সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় ছাত্রলীগ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে সরকারের ওপর দোষারোপ করে। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করলে সরকার সহযোগিতা করবে। না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের মতো যথাযথ ব্যবস্থা নিবে। তিনি বলেন, বিএনপি তাদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে ছোট করতে চায়। ইতিহাসে যারা কানামাছি খেলে এবং খেলছে, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটিকে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে জাতিসংঘ তাদের সঠিক জবাব দিয়েছে। এই ভাষণটি বাঙালী জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে নিয়ে গিয়েছিল, স্বাধীন করেছিল দেশকে। ভাষণটি যত্রতত্র না বাজিয়ে বিশেষ বিশেষ দিনে বাজানোর পরামর্শ দেন তিনি।
সরকারের শরিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটানোর জবাবে তিনি বলেন, জাসদ যদি আওয়ামী লীগকে ছাড়া নির্বাচনে যায়, তার ফল কী হবে- তা ইনু নিজেও জানেন। উল্লেখ্য, বুধবার কুষ্টিয়ায় এক সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আমরা সংখ্যায় বিপুল না হলেও আমাদের ছাড়া হাজার বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ইনুকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, ইনু সাহেব অভিমান, ক্ষোভ থেকে বোমা ফাটিয়েছেন। কেন এ অভিমান? উনি নিজেও জানেন। আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন করলে রেজাল্ট কী হবে? আমাদের দলের শরিক, তবে নির্বাচন এক সঙ্গে করব। সরকারের সঙ্গে নির্বাচন করে কিছু আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন।
বর্তমান ছাত্রলীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, সিলেট ও চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে সেসবকে তথ্য-সন্ত্রাস বলে সত্যকে চাপা দেয়া যাবে না। সত্যকে স্বীকার করতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ছাত্রলীগে কর্মী বেড়েছে কিন্তু তাদের জ্ঞানের গভীরতা বাড়েনি। এ সময় তিনি ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেন।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপত্বিতে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স প্রমুখ। এ সময় কেন্দ্রীয় ও ঢাবির বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।