স্টাফ রিপোর্টার, বেনাপোল ॥ ভারপ্রাপ্তদের ভারে নুয়ে পড়েছে যশোরের শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। জোড়াতালি দিয়ে চলছে পাঠদান। নেমে গেছে শিক্ষার মান। যশোরে এ দুটি উপজেলায় ৬২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এসব বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে বছরের পর বছর। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চলছে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। আর সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ২৪টি বিদ্যালয়ে। এ কারণে লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।
যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় ৩২টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ১৪টি সহকারী শিক্ষকের, শার্শা উপজেলায় ৩০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ১০টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষকরা অবসরে যাওয়ায় এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। এ অবস্থায় জোড়াতালি দিয়ে বিদ্যালয়গুলোতে চলছে পাঠদান। তার ওপর দাফতরিক কার্যক্রমে ভারপ্রাপ্তরা শিক্ষা অফিসে ব্যস্ত থাকায় দিন দিন লেখাপড়ার মান পড়ে যাচ্ছে। এর ফলে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা। একাধিক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য থাকায় বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। আবার অনেকেই বিপিএড করছেন। এ কারণে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে খুবই সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ইজ্জত আলী বলেন, প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সভা, প্রতিবেদন তৈরি ও দাফতরিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। সহকারী শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন। প্রধান শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ করে সহকারী শিক্ষকরা। এর ফলে সঠিকভাবে পাঠদান কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়াও শিক্ষক সঙ্কটের কারণে তাদের অতিরিক্ত ক্লাস নিতে হয়। যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার অধিকারী বলেন, সকল বিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম প্রধান শিক্ষক নিয়ন্ত্রণ করেন। এ কারণে প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সঙ্কট। শিক্ষক সঙ্কটের বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি মামলা বিচারাধীন থাকায় পদোন্নতি আটকে আছে। তিনি বলেন, পিএসসির মাধ্যমে যশোর জেলায় আটজন প্রধান শিক্ষক দেয়া হলেও কেউ যোগদান করেনি। শীঘ্রই শিক্ষক সঙ্কট কেটে যাবে বলে আশা করছি।