ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নানা কর্মসূচীতে ৭ নবেম্বর পালন

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৮ নভেম্বর ২০১৭

নানা কর্মসূচীতে  ৭ নবেম্বর  পালন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ৭ নবেম্বর পালন করেছে। বিএনপি দিবসটি পালন করেছে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে। জাসদ পালন করেছে ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে। আর খালেদ মোশাররফ বীরোত্তম স্মৃতি পরিষদ দিবসটি পালন করেছে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে। এবার সিপিএ সম্মেলনের কারণে ৭ নবেম্বর উপলক্ষে শেরেবাংলা নগরে জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যাননি বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন ও ‘ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প’ চালুর মধ্য দিয়ে ৭ নবেম্বর পালন করেছে বিএনপি। আর অনুমতি পেলে ১২ নবেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ উপলক্ষে সমাবেশ করবে দলটি। সকাল ৯টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় কার্যালয়ে ড্যাব আয়োজিত দিনব্যাপী ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাবের মহাসচিব ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রফিকুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ। এছাড়া ৭ নবেম্বর উপলক্ষে একটি ভিডিও গান প্রকাশ করেছে বিএনপির মিডিয়া এ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগ। ৬ নবেম্বর এ গানটি ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে বলে জানান চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান। ‘৭ই নবেম্বর’ শিরোনামের গানটির কথা লিখেছেন শায়রুল কবির খান ও মনিরুজ্জামান মনির। আহমেদ কিসলুর সুরে গানটি গেয়েছেন ফাতেমাতুজজোহরা। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার সময়ের কিছু স্টিল ছবি আর ভিডিও ব্যবহার করে বানানো হয়েছে মিউজিক ভিডিওটি। ৭ নবেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে কর্নেল তাহের মিলনায়তনে জাসদের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনী ও ক্ষমতালোভী অফিসারদের কামড়া-কামড়ির বিরুদ্ধেই ৭ নবেম্বর সিপাহীরা বিদ্রোহ করেছিল। সেদিন সিপাহীরা বিদ্রোহ না করলে ক্যান্টনমেন্টগুলো কসাইখানায় পরিণত হতো। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ৭ নবেম্বরের সিপাহী বিদ্রোহ একটি বিপ্লব প্রচেষ্টা। জিয়ার বিশ্বাসঘাতকতায় সিপাহী বিদ্রোহের মহিমা ম্লান হয়। তিনি বলেন, ৭ নবেম্বরের মহানায়ক তাহের, খলনায়ক জিয়া। জিয়া সিপাহীদের সঙ্গে বিদ্রোহ করে, নিজের প্রাণ রক্ষাকারী কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দিয়ে নিজেকে মীর জাফর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। আর সিপাহীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার রাজনীতিই খালেদা জিয়া-বিএনপি বহন করে চলেছে। বিএনপির রাজনীতির ভিত্তিই বিশ্বাসঘাতকতা। তিনি বলেন, শোষণ-বঞ্চনা-বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কর্নেল তাহের ও ৭ নবেম্বর চির প্রেরণার উৎস। জাসদের সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নুর সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর হোসাইন আখতার, এ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত, উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম বীর প্রতীক, সহ-সভাপতি আফরোজা হক রীনা, শফিউদ্দিন মোল্লা, মোহর আলী চৌধুরী প্রমুখ। এদিকে ১৯৭৫ সালে ৭ নবেম্বর গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফসহ যেসব মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, সে হত্যার বিচার দাবি করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’। মঙ্গলবার বিকেলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (১০ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ দাবি জানানো হয়। মঙ্গলবার সকালে খালেদ মোশাররফ বীরোত্তম স্মৃতি পরিষদ জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, খন্দকার মোস্তাক, জিয়াউর রহমান ও জাসদ হত্যাকা- সংগঠিত করার মূল হোতা। বক্তরা আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবসকে সিপাহী জনতার বিপ্লব এর নামে বিএনপির এবং বিপ্লব ও সংহতি দিবস নামে জাসদের অপপ্রচার ও ইতিহাস বিকৃতির নিন্দা জানান। পাশাপাশি ৭ নবেম্বরের মূল ইতিহাস সংরক্ষণ এবং বিচারের রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান। তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ৩ নবেম্বর ও ৭ নবেম্বরের হত্যাকা- একই সূত্রে গাথা। এসব হত্যাকা- খন্দকার মোস্তাক ও জিয়াউর রহমানের সরাসরি মদদে সংগঠিত হয়। তারা জিয়াউর রহমানকে খুনী আখ্যায়িত করে তার বীরোত্তম খেতাব প্রত্যাহারের দাবি জানান। খালেদ মোশাররফ বীরোত্তমের স্ত্রী সালমা খালেদের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, মাহজাবিন খালেদ এমপি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত কাদীর গামা প্রমুখ। চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশ ॥ চট্টগ্রামে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিএনপি পালন করেছে ৭ নবেম্বর। দিবসের কর্মসূচীর মধ্যে ছিল নগরীর ষোলশহর বিপ্লব উদ্যানে সমাবেশ। এতে মহানগর বিএনপির নেতারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নবেম্বর নস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী ষড়যন্ত্র। আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসন থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সৈয়দ আজম উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী, হারুন জামান, সৈয়দ আহমদ, কমিশনার মাহবুবুল আলম, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, ইকবাল চৌধুরী, এ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার সরওয়ার, যুগ্ম সম্পাদক এসএম সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, মোঃ শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা প্রমুখ।
×