ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোগীর পেটে পাথর নেই, তবু অপারেশন!

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ৪ নভেম্বর ২০১৭

রোগীর পেটে পাথর  নেই, তবু অপারেশন!

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ শহরের সারদা ঘোষ রোডে অবস্থিত জামায়াতে ইসলামীর মালিকানাধীন একটি বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ‘নামকরা’ এক সার্জনের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজনরা। শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এসে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। অভিযোগ, ‘পিত্তথলীতে পাথর আছে, জরুরী অপারেশন লাগবে’- রোগী ও স্বজনদের এমন ভয় দেখিয়ে শহরের পুরহিতপাড়ার গৃহবধূ শিলাকে (৪০) অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। প্রথমে ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে পাথর বের করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় পাথর না পেয়ে পরে পেট কেটে পিত্তথলী থেকে পাথর বের করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পিত্তথলীতে কোন ধরনের পাথর না পেয়ে রোগীকে অপারেশন থিয়েটার থেকে কেবিনে আনা হয়। অপারেশনে অংশ নেয়া সার্জন অধ্যাপক ডাঃ এমএ গফুর রোগীর স্বজনদের জানান, পিত্তথলীতে কোন পাথর পাওয়া যায়নি। তাহলে কেন অপারেশন করলেন- এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়েই সার্জন ডাঃ গফুর চলে যান। বৃহস্পতিবারের এ ঘটনা নিয়ে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। রোগীর স্বামী মোখলেছুর রহমান অভিযোগ করে জানান, পেটে পাথর না থাকার পরও কেবল মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেই রোগীর অপারেশন করা হয়েছে। এতে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দাবি করে মোখলেছুর রহমান জানান, এ ধরনের ভুল চিকিৎসার প্রতিকার চেয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন। রোগীর স্বজনরা জানান, পেটের সামান্য ব্যথার অস্বস্তি নিয়ে শিলা প্রথমে চলতি সালের গত ৯ অক্টোবর ময়মনসিংহের নামকরা মেডিসিন বিশেষজ্ঞকে দেখান। তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষার পর রোগীকে সার্জনের পরামর্শ নিতে বলেন। ময়মনসিংহের এক খ্যাতিমান আল্ট্রাসনোলজিস্ট পরীক্ষা করে রোগীর পিত্তথলীতে মাল্টিপোল পাথর আছে বলে রিপোর্ট দেন। ওই রিপোর্টসহ রোগী শিলা গত ২৫ অক্টোবর যান শহরের জামায়াতে ইসলামীর মালিকানাধীন হাসপাতালের সার্জন অধ্যাপক ডাঃ এমএ গফুরের কাছে। তিনি এক্স-রে, ইসিজিসহ রক্তের কিছু পরীক্ষা করান। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সার্জন ডাঃ গফুর রোগীকে ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিকে অপারেশনের পরামর্শ দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দরদাম ঠিক করে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন রোগী ও স্বজনরা। গত বৃহস্পতিবার অপারেশন বাবদ নগদ ২০ হাজার টাকা ও ওষুধ বাবদ নগদ আরও ছয় হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এর সঙ্গে হাসপাতালের কেবিনসহ অন্যান্য চার্জ তো আছেই। কিন্তু টাকা নিয়ে অপারেশনের পর বলা হয় রোগীর পেটে কোন পাথর পাওয়া যায়নি! বিষয়টি জানতে চাইলে শুক্রবার বিকেলে অধ্যাপক ডাঃ এমএ গফুর জনকণ্ঠকে জানান, তিনি সত্য কথাই বলেছেন। রোগীর পেটে কোন পাথর পাওয়া যায়নি।
×