ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটায় ১১ কিমি সড়ক বেহাল ॥ ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১ নভেম্বর ২০১৭

কুয়াকাটায় ১১ কিমি সড়ক বেহাল ॥ ভোগান্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৩১ অক্টোবর ॥ কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাখিমারা থেকে মৎস্য বন্দর মহিপুর পর্যন্ত ১১ কিমি খানাখন্দে একাকার হয়ে গেছে। এই ১১কিমির চরম বেহাল দশা। ফলে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। অটো-টমটম-রিক্সাসহ ছোট যাবাহনে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। দুই/তিন মাস পরপর সড়ক ও জনপথ বিভাগ শরীরের ক্ষত ঘায়ে মলম লাগানোর মতো খানাখন্দে খোয়া-বালু দিয়ে মেরামত করে আসছে কিন্তু এক/দুই পশলা বৃষ্টির পরে যানবাহনের চাকায় ওইসব উঠে যায়। আবার একই অবস্থা। ঠিকাদারের একটি মামলার কারণে সড়কটি সম্পূর্ণভাবে ফের টেন্ডার দিয়ে মেরামত করার সুযোগও নেই বলে সওজের দাবি। দেখা গেছে, পাখিমারা থেকে মৎস্য বন্দর মহিপুর পর্যন্ত সড়কটির বিভিন্ন স্থানের কার্পেটিং উঠে গেছে। বের হয়ে গেছে ইট-বালু-খোয়া। অধিকাংশ পথে বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমে সড়কটির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন জানান, ২০০৯-২০১৪ অর্থবছরে এ সড়কের উন্নয়ন কাজ করে দ্য রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই কাজ মানসম্মত না হওয়ায় তখন ঠিকাদারের বিল আটকে দেয় সওজ কর্তৃপক্ষ। প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দুটি দল তদন্ত করে গেছে। তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকেও কাজের গুণগত মান ভাল হয়নি বলে প্রতিবেদন দেয়া হয়। বিল আটকে দেয়ার প্রেক্ষিতে রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম পটুয়াখালী দেওয়ানি আদালতে ২০১৪ সালে একটি এবং ২০১৫ সালে দুটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলার প্রেক্ষিতে পাখিমারা-মহিপুর অংশের ১১ কিমি সড়কের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। যার ফলে তিন বছর ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে এ অংশের সড়কটি। তারপরও বিভাগীয় উদ্যোগে জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে মহাসড়কটি পর্যটকের স্বার্থে সচল রাখা হচ্ছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে পূর্ণাঙ্গভাবে টেন্ডার দিয়ে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। বাস চালকরা জানান, পাখিমারা থেকে মহিপুর পর্যন্ত যাওয়া-আসা করতে গর্তের কারণে ধাক্কায় ধাক্কায় যাত্রীদের খুব ভোগান্তি হয়। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের তিনটি সেতু চালু হওয়ায় কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন বহুগুণে বেড়েছে। কিন্তু কুয়াকাটার জন্য এখন প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ১১ কিলোমিটার ভাঙ্গা সড়ক। টাঙ্গাইল নিজস্ব সংবাদদাতা টাঙ্গাইল থেকে জানান, মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া, চাপড়ী ও আলোকদিয়া পাকা সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ আট কিলোমিটার এ সড়কটি টানা বর্ষণে ভেঙ্গে ইট, পাথর, সুড়কি উঠে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবুও প্রয়োজনের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও পথচারীরা। ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে এ সড়কে মাঝেমধ্যেই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, এ সড়কে প্রতিনিয়ত যাত্রীবাহী বাস, মালবাহী ট্রাক, সিএনজি অটোরিক্সা, ইজিবাইকসহ নানা ধরনের ভারি যানবাহন চলাচল করে। রক্তিপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ্ জানান, সড়কের বর্তমান বেহাল দশা দেখে মনে হয় এটি সড়ক তো নয়, যেন মরণফাঁদ। তার মতে, উপজেলা, জেলা তথা রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা এ সড়কটি। ব্যস্ততম এ সড়কটি পাহাড়ী অঞ্চলের রক্তিপাড়া, শিবরামবাড়ী, কালামাঝি, লাউখুলা, মাইঝবাড়ী, আলোকদিয়া, আমোআটা, ধামাবাশুড়ী, চাপড়ীসহ অর্ধশত গ্রামের কৃষিজীবী মানুষের উৎপাদিত আনারস, কলাসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য পরিবহনের একমাত্র অবলম্বন। এককথায় সড়কটি এলাকার মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। এলাকার শিক্ষার্থী আমিনুল হক, বাবলু, আসমা, সুবর্ণাসহ অনেকেই জানান, সড়কটি অনেকদিন যাবত মেরামতের অভাবে যানবাহন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হওয়ায় শিক্ষার্থীসহ জনজীবন চরম দুর্ভোগে পড়েছে। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সংস্কারের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম এ সড়কটি বর্তমানে পথচারীদের প্রাণনাশের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাবেক ইউপি মেম্বার হেকমত আলীসহ এলাকাবাসী এ সড়কের বড় বড় গর্তের স্থানগুলো জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।
×