ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাজমুল হাসান

প্রযুক্তির অপব্যবহার নয়

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

প্রযুক্তির অপব্যবহার নয়

একটা সময় ছিল মানুষজন মাসের পর মাস অপেক্ষা করত শুধু প্রিয়জনের খবর জানার জন্য। চিঠি লেখার সেই দিন ফুরিয়ে গেছে অনেক আগে। এখন আর কারও খবর জানার জন্য পূর্বের ন্যায় অপেক্ষায় থাকতে হয় না। পৃথিবীর যে কোন স্থানে অবস্থানরত যে কোন মানুষ সম্পর্কে জানতে প্রয়োজন কয়েক মুহূর্তের। পাশাপাশি নয়, তবুও পাশাপাশি বসে কথা বলতে পারছে। ধাক্কাধাক্কি করে টিকেট কাটতে যেতে হয় না। ভর্তি আবেদন, চিকিৎসাসেবা, শিক্ষা, কৃষি প্রভৃতি সকল খাতেই প্রযুক্তির ছোঁয়া পাওয়া যায়। বর্তমান যুগকে বলা হয়ে থাকে তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। এই যুগে সবার হাতে হাতে প্রযুক্তি থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। সেই তুলনায় বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের দিক থেকে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত ৫৮টি দেশের মাঝে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৬। দেশের আনাচে-কানাচে পাওয়া যাচ্ছে সকল ধরনের প্রযুক্তিগত সেবা। তাছাড়া দেশের ১৩ কোটি মোবাইল ব্যবহারকারীর মাঝে ৬ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারী আছে। যদিও পল্লীগ্রামগুলোতে তেমনভাবে পৌঁছায়নি, তবুও বলা যায় শহরে প্রায় ছোট বড় সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বই তথ্যপ্রযুক্তির উপর চরমভাবে নির্ভরশীল। তবে যে কোন বিষয় ভাল খারাপ মিলেই গঠিত হয়। ভালটাকে গ্রহণ করে খারাপ অংশকে পরিহার করতে পারলেই মূলত কোন কিছুর পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। তথ্যপ্রযুক্তির সুফল বলে শেষ করা যাবে না। তবে কুফলও কিন্তু কম না। কুফল বলতে রীতিমতো ভয়ঙ্কর সব ব্যাপার। এসব ভয়ঙ্কর দিকগুলো দিনের পর দিন ধরাছোঁয়ার বাহিরে চলে যাচ্ছে। এমন কোন অভিভাবক খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা চায় না তার সন্তান প্রযুক্তির স্পর্শে বেড়ে উঠুক, নিজে এগিয়ে যাক, সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাক পিছিয়ে যাওয়া দেশটাকে। অথচ প্রযুক্তি হাতে পাওয়া এসব ছেলেমেয়ের একটা বেসরকারী পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরে ৭৭ শতাংশ ছেলেমেয়ে প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে। যার বেশিরভাগই পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। এর প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের মন ও মননে। পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ হারাচ্ছে। পড়ার সময় বইয়ের ভেতর মোবাইল রেখে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করছে। এমন না যে পড়ালেখার জন্য প্রযুক্তির এমন ব্যবহার করছে। তাছাড়া বাবা-মাকে বোকা বানিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইল ব্যবহার করে চলে অনেকেই। আবার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় নব্বইভাগ শিক্ষার্থী তাদের সময় কাটায় ইন্টারনেটে। এসব অবস্থার পরিবর্তন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার প্রথম ধাপটা হওয়া উচিত অভিভাবকদের। সন্তানের হাতে প্রযুক্তি দিয়েই দায়িত্ব শেষ ভাবা উচিত নয়। ছেলে মেয়েকে প্রযুক্তির ভাল দিকগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×