ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আরাফাত শাহীন

শিশুর জন্য নিরাপদ পৃথিবী

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ১২ অক্টোবর ২০১৭

শিশুর জন্য নিরাপদ পৃথিবী

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে। আজকের শিশু আগামী দিনের পিতা-মাতা জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। একদিন এই শিশু সমাজ, দেশ এবং বিশ্ব পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদান করবে। সুস্থ ও সুন্দরভাবে মানসিক বিকাশপ্রাপ্ত শিশু যেমন সমাজ এবং দেশকে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে তেমনি কোন কারণে যদি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে সেই শিশু সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে সমাজের জন্য বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য কাম্য নয়। আমরা সবাই চাই আমাদের শিশুরা সুন্দরভাবে বেড়ে উঠুক; হাসি এবং আনন্দ হোক তাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু সবক্ষেত্রেই কি এমনটা হয় বা হচ্ছে? আমরা প্রায়শই শিশু অধিকারের কথা শুনে থাকি। বলা হয়ে থাকে শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা হবে। কিন্তু আমরা বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের দেশের শতভাগ শিশুকে আমরা এখন পর্যন্ত স্কুলে নিয়ে যেতে পারিনি। শিশুদের জন্য নিরাপদ খাদ্য এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য সম্ভব হয়নি। এদেশের শিশুদের একটা বড় অংশ আজও অপুষ্টির শিকার। কীভাবে শিশুদের যতœ করে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করতে হবে এ ব্যাপারে অধিকাংশ পিতামাতা এখনও অজ্ঞ। পরিবার যে একটা শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান এই তথ্য আমরা আজও বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারিনি। এটা আমাদের জন্য বড় ধরনের ব্যর্থতাই বটে! যে বয়সে একটি শিশুর বাবা-মায়ের সান্নিধ্যে থেকে বই হাতে করে স্কুলে যাওয়ার কথা সেই বয়সে একটি শিশুকে যখন রাস্তায় রিক্সা চালাতে কিংবা পথের ধারে ইট ভাঙ্গতে দেখি তখন স্বভাবতই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে। জীবিকার তাগিদে আমাদের দেশের শিশুরা নানা প্রকার শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম করতে বাধ্য হয়। অনেক সময় শিশুদের দিয়ে সমাজের প্রভাবশালী কুচক্রী মহল নানাপ্রকার অপরাধমূলক কাজ করাতে বাধ্য করে। শিশুদের দিয়ে ছিনতাই বা ভিক্ষাবৃত্তি করানোর মতো জঘন্য কাজ করানোর মানুষও আমাদের দেশে বিরল নয়। শিশুরা আমাদের ভবিষ্যত। তাদের প্রতি সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করে তাদের জন্য সুন্দর এবং বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব। শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশে আমরা যদি তাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হই তাহলে এই পৃথিবী ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে। তাই শিশুদের প্রতি আরও বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী থেকে
×