ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কার কাছে হোয়াইটওয়াশ পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ১১ অক্টোবর ২০১৭

শ্রীলঙ্কার কাছে হোয়াইটওয়াশ পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একসঙ্গে অবসরে যাওয়া দুই গ্রেট মিসবাহ উল হক ও ইউনুস খানের অভাব হাড়ে হাড়ে টের পেল পাকিস্তান। যে আরব আমিরাত তাদের কাছে পয়মন্ত, সেখানেই শ্রীলঙ্কার কাছে দুই টেস্টের সিরিজে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হলো সরফরাজ আহমেদের দল। দুবাইয়ে সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের (ডে-নাইট) শেষদিনে পাকিদের হার ৬৮ রানে। আগেরদিনই হারতে বসা ম্যাচে অসাধারণ ব্যাটিংশৈলী উপহার দিয়ে আলোচনায় ছিলেন সরফরাজ ও আসাদ শফিক। মঙ্গলবার শেষদিনের শুরুতেও ছিল রূপকথার ইঙ্গিত। কিন্তু এ দু’জনে ফিরতেই সব শেষ। ৩১৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে নামা পাকিস্তান অলআউট ২৪৮ রানে। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ২৬২। শ্রীলঙ্কা ৪৮২ ও ৯৬। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচ ও সিরিজসেরা হয়েছেন লঙ্কান ওপেনার দিমুথ করুণারতেœ। স্মরণীয় এই সাফল্যের পর পাকিস্তানকে সাতে নামিয়ে দিয়ে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের ছয়ে উঠে এসেছে লঙ্কানরা। শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে। ২০০০ সালের পর প্রথম দেশের বাইরে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতল শ্রীলঙ্কা। সবমিলিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে লঙ্কানদের এটি ষষ্ঠ সিরিজ জয় এবং ১৬তম টেস্ট। আর কোন দেশের বিপক্ষে এত টেস্ট জেতেনি লঙ্কানরা। প্রথম ইনিংসে ২২০ রানে এগিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ৯৬ রানেই। ৩১৭ রানের লক্ষ্যে নেমে পাকিস্তান এক পর্যায়ে ৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল। সেখান থেকে দারুণ জুটিতে চতুর্থদিন প্রতিরোধ গড়েন আসাদ শফিক ও অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। শেষদিনে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১১৯ রান, শ্রীলঙ্কার ৫ উইকেট। শফিক ও সরফরাজ আরও একটু টানেন পাকিস্তানকে। দ্বিতীয় নতুন বলের খানিক আগে শ্রীলঙ্কা পায় কাক্সিক্ষত ব্রেক থ্রু। উইকেট এনে দেন দিলরুয়ান পেরেরা। প্রিয় সুইপ শটে উইকেট হারান সরফরাজ। ব্যক্তিগত ৬৮ রানে ফেরেন পাকিস্তান অধিনায়ক। ভাঙ্গে ১৭৩ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। ওই উইকেটই খুলে দেয় পাকিস্তনের পতনের মুখ। ১৯৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা দিমুথ করুনারতেœ। সিরিজে ৩০৬ রান করে সিরিজের সেরাও লঙ্কান ওপেনার। নতুন বলে আমিরকে ফিরিয়ে দিলরুয়ান পূর্ণ করেন ইনিংসে পঞ্চম উইকেট। ৮৬ রানে দিন শুরু করা আসাদ শফিক দেখা পান একাদশ টেস্ট সেঞ্চুরির। তবে ১১২ রানে তাকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের শেষ আশাও শেষ করে দেন পেসার সুরাঙ্গা লাকমল। মাত্র ২৩ রানের মধ্যে পাকিস্তান হারায় শেষ ৫ উইকেট। বাঁধনহারা উল্লাসে মাতে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফের সবাই। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ের কাছে পরপর টেস্ট হার, ভারতের কাছে ৩-০তে লজ্জার পথে দুটি টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারা, ওয়ানডেতেও হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট ঠেকেছিল যেন তলানিতে। পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ তাই লঙ্কান ক্রিকেটের জন্য বড় স্বস্তির। অথচ দুবাইয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯৬ রানে গুটিয়ে গিয়ে এক বাজে রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিল তারা। প্রথম ইনিংসে অন্তত ১শ’র বেশি লিড পেয়েও দ্বিতীয় ইনিংসে এর চেয়ে কম রানে আর কোন দল অলআউট হয়নি। আগের রেকর্ডটা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৯৫০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ডারবান টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২৩৬ রানের লিড পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল ৯৯ রানে। ৬৭ বিব্রতকর রেকর্ডে নাম লিখিয়েও দিনেশ চান্দিমালদের এ সাফল্য স্মরণীয় বৈকি।
×