ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দূষিত হচ্ছে পরিবেশ উজাড় হচ্ছে বন

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১১ অক্টোবর ২০১৭

দূষিত হচ্ছে পরিবেশ উজাড় হচ্ছে বন

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের ধুলগ্রাম খেয়াঘাট সংলগ্ন নদীর চরে ঘনবসতি এলাকায় প্রতিদিন শত শত মণ কাঠ পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে কয়লা। এতে একদিকে এলাকার বন উজাড় হচ্ছে, অন্যদিকে কাঠ পোড়ানোর ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশী মাসোয়ারার বিনিময়ে চলছে এসব কারবার। জানা গেছে, এখানে কয়লা তৈরির জন্য ৪১টি চুলা গড়ে উঠেছে। দুই শতাধিক শ্রমিক কর্মরত আছেন কয়লা তৈরির কাজে। একটি চুলায় একদিন পর একদিন ৭০ মণ পর্যন্ত কয়লা উৎপাদন হয়। এসব কয়লা কামারশালা, গৃহস্থালি ও ইটভাঁটির খনিজ কয়লার সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহৃত হয়। ২৫ কেজির প্রতিবস্তা কয়লা ৪৫০-৫০০টাকায় বিক্রি হয়। কয়লার কারখানায় অধিক লাভ দেখে এলাকার অনেকে নেমে পড়েছেন এ ব্যবসায়। এদিকে কাঠ পোড়ানো ধোঁয়ায় চর্তুদিকে সব সময় কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে। এলাকার কয়েকজন বলেন, দীর্ঘদিন এই কাঠ পোড়ানো ধোঁয়ায় অনেকের শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। ধোঁয়া ও আগুনের কারণে এলকার গাছপালা দিনদিন পুড়ে যাচ্ছে। ছোট বাচ্চাদের দূরে কোন আত্মীয়ের কাছে রেখে লালন-পালন করতে হচ্ছে। কথা হয় কয়লা কারখানার এক মালিক সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার কবির আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার ৭ টি চুলা রয়েছে, যে চুলায় আমি দীর্ঘদিন ধরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছি। শতাধিক লোক আমার কারখানায় কাজ করে। আমি এদের সংসার চালানোর দায়িত্ব নিয়েছি। আমরা কয়লা কারখানার মালিকরা মিলে প্রতিমাসে সিদ্দিপাশা পুলিশ ক্যাম্পে মাসোয়ারা দিয়ে কাজ করি। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এখানকার সব চুলার মালিক এলাকার প্রভাবশালী। রোকসেদ আলী নামে আরেকজন কয়লা কারখানার মালিক জনান, তার ছয়টি কারখানা আছে। কাঠ পুড়িয়ে তিনি কয়লা তৈরি করেন। কারখানার কোন অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কার অনুমোদন আনব, আমাদের কোন সংস্থা অনুমোদন দেবে না। নাম প্রকাশে না করার শর্তে কয়লা কারখানার এক শ্রমিক জানান, একটি চুলা তৈরিতে ৫০-৭০ হাজার টাকা খরচ হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আমি এ উপজেলায় সবেমাত্র এসেছি, অবৈধভাবে সিদ্দিপাশা ইউনিয়নে কয়লা কারখানা গড়ে উঠেছে এ বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্য আনিচুর রহমান বলেন, গত মাসের আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে এ বিষয়ে কথা উঠেছিল। সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান বলেছিলেন কয়েকবার প্রশাসনের অভিযানের পর কয়লার কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। যদি আবার তারা কারখানা চালায় তা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×