ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসা করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৮ অক্টোবর ২০১৭

টাকার বিনিময়ে  ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসা করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ৭ অক্টোবর ॥ সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাকসিঁড়ি এলাকায় শালিস বৈঠকের মাধ্যমে একটি ধর্ষণের ঘটনা দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করেছেন বলে ধর্ষিতার বাবা স্বীকার করেছেন। জানা যায়, সদর উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের বাকসিঁড়ি এলাকার আরমান আলীর ছেলে বক্কর (১৬) প্রতিবেশী এক দিনমজুরের কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দির্ঘদিন ধরে প্রেম ও দৈহিক সম্পর্ক চালিয়ে আসছিল। শুক্রবার রাত ৮টায় বক্কর ওই কিশোরীর ঘরে প্রবেশ করে। এরই মধ্যে এলাকার কিছু লোক বিষয়টি টের পেয়ে যায়। পরে রাত ১১টায় বক্করকে অনৈতিক কার্যকলাপের সময় প্রতিবেশীরা কিশোরীর ঘরে হাতেনাতে ধরে ফেলে। প্রতিবেশীরা ছেলে ও মেয়েকে আটক করে স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও ওয়ার্ড মেম্বার সুরেনকে খবর দেয়। শনিবার সকালে অনৈতিক কার্যকলাপের ঘটনায় এলাকাবাসী ছেলে ও মেয়েকে বিয়ের জন্য উভয় পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। ছেলের বাবা আরমান আলী ও স্থানীয় মেম্বার সুরেন ঘটনাটি মীমাংসার জন্য উঠে পড়ে লাগে। পরে দুপুরে এক শালিস বৈঠকের মাধ্যমে রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম প্রভাব দেখিয়ে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে মেয়ের পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করে। মেয়ের বাবা দিনমজুর হওয়ায় বৈঠকে মীমাংসা করতে বাধ্য হয় বলে অনেকেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এলাকাবাসী জানায়, আমরা সকলে চেয়েছিলাম ওই ঘটনায় ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দেয়া হোক। কিন্তু ছেলের বাবা প্রভাবশালী হওয়ায় চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ম্যানেজ করে ঘটনাটি ভিন্নভাবে মীমাংসা করেছেন। শালিসে আগামী মঙ্গলবার দেড় লাখ টাকা মেয়ের পরিবারকে দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেয় চেয়ারম্যান। মেয়ের বাবা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি মানুষের বাড়িতে দিনমজুরির কাজ করি। আমি চেয়েছিলাম আইনের আশ্রয় নিতে কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেব বিষয়টি দেখবেন বলে শালিসের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা ওই ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে। ওরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে আমি কিছু বলতে ও করতেও পারছি না। ওয়ার্ড মেম্বার সুরেন জানান, ঘটনাটি স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসা করা হয়েছে। ছেলে আর মেয়ের বয়স না হওয়ায় তাদেরকে বিয়ে দেয়া হয়নি। রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের সঙ্গে মীমাংসার ঘটনাটি জানার জন্য একাধিকবার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, মেয়ের পরিবারকে থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×