ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়া কাপে নতুন জার্সি পেলেন জিমিরা

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ৬ অক্টোবর ২০১৭

এশিয়া কাপে নতুন জার্সি পেলেন জিমিরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উন্মোচিত হয়েছে হিরো এশিয়া কাপের বাংলাদেশ দলের লাল-সবুজ জার্সি। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় জার্সি উন্মোচন অনুষ্ঠান। এতে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সভাপতি ও বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও ফেডারেশনের সহ-সভাপতি শফিউল্লাহ আল মুনির, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মোঃ ইয়াহিয়া, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মোঃ আলী। আব্দুস সাদেক বলেন, ‘লাল-সবুজ জার্সিধারীরা খেলবে দেশের জন্য। বুকের মধ্যে দেশকে লালন করে হয়ে যাবে অদম্য লড়াকু। তারা হবে নতুন ধারার নতুন হকির সৈনিক।’ শফিউল্লাহ আল মুনির বলেন, ‘এশিয়া কাপের মাধ্যমে হকির জাগরণের যে প্রত্যাশা তার প্রথম পদক্ষেপ হলো লাল-সবুজ জার্সি। দেশের জন্য খেলবে খেলোয়াড়রা আর লাল-সবুজের ভালবাসায় তাদের পেছনে থাকবে সারাদেশ।’ আবু রেজা মোঃ ইয়াহিয়া বলেন, ‘এশীয় হকির শীর্ষ এই আসর ইতোমধ্যেই দেশে আলোড়ন তুলতে শুরু করেছে। লাল-সবুজের জার্সির মাঝে আমরা যেন বাংলাদেশকেই দেখব।’ সৈয়দ ওয়াসেক মোঃ আলী বলেন, ‘আধুনিক হকির অবকাঠামো পেয়েছে বাংলাদেশ। ফ্লাডলাইটে আলোকিত স্টেডিয়ামে লাল-সবুজ জার্সি পরে জাতীয় দল যখন খেলবে তখন তারা নিজের সেরা নৈপুণ্যই প্রদর্শন করবে। এই ব্যাপারে আমার কোন দ্বিধাবোধ নেই।’ আবু এসরার বলেন, ‘এশিয়া কাপের আয়োজন বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন। আজকের এই জার্সি পরে যারা খেলবেন আমি আশা করব তারা হয়ে উঠবেন অদম্য লড়াকু, অনমনীয় টিম স্পিরিট হবে তাদের পথ চলার পাথেয়। দেশের হকিকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাওয়াই হবে তাদের লক্ষ্য।’ অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমি বলেন, ‘শক্তিশালী এক গ্রুপে খেলছি আমরা। এই নিয়ে আমাদের কোন ভয় বা শঙ্কা নেই। আমরা আমাদের শক্তিতে বিশ্বাসী। নিজের মাঠে এত বড় একটি টুর্নামেন্টে দেশের জন্য দেশের হকির জন্য প্রত্যেকটি খেলোয়াড় নিজের সেরা নৈপুণ্য প্রদর্শনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ প্রধান কোচ মাহবুব হারুন বলেন, ‘আমরা মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছি। গত দুটি মাস ধরে করেছি গেম প্ল্যান। ফিটনেসের ওপর জোর দিয়েছি। সেই সঙ্গে সেটপিসগুলো আরও ধারালো করতে কাজ করেছি। আশাকরি দল হতাশ করবে না। আমাদের লক্ষ্য র‌্যাঙ্কিং কমানো।’ শেষ হয়নি সংস্কার কাজ ॥ আর ক’দিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত এশিয়া কাপ হকির দশম আসর। ৩২ বছর পর আবারও এই আসরটি হবে বাংলাদেশে। অথচ এখনও নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের বিভিন্ন স্থাপনার সংস্কার ও নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন (বাহফে)। সব কাজ শেষ করে গতকাল হকি ফেডারেশনকে স্টেডিয়াম হস্তান্তরের কথা থাকলেও কাজের গতি অনুযায়ী আরও দিন দশেক লাগবে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বলছে সব কাজ আগামীকাল শেষ হবে; বিলম্বে কাজ শেষ করার দায় হকি ফেডারেশনকেই দিচ্ছে তারা। এশিয়া কাপের মতো বড় আসরের ক্ষেত্রে খেলা শুরুর অন্তত ১৫ দিন আগে এশিয়ান হকি ফেডারেশনকে স্টেডিয়াম হস্তান্তর করতে হয়। ফ্লাডলাইট বসাতে বাংলাদেশের অনুরোধে সময় বাড়িয়ে দেয়া হয় ৩০ সেপ্টেম্বর, এক দফা বাড়িয়ে কাল তাও শেষ হয়েছে, কিন্তু সংস্কার কাজ চলছে এখনও। কেন কাজ এখনও শেষ হয়নিÑ এর জবাবে এনএসসি জানিয়েছে, বিলম্ব করেছে ফেডারেশনই, তারা ধাপে ধাপে কাজ বাড়িয়েছে। তারপরও ২৩ আগস্ট কাজ শুরু করে সব কাজ শেষ পর্যায়ে, এখন ফিনিশিং টাচ চলছে। যেসব আবর্জনা রয়েছে আজকালের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে শেষ মুহূর্তে ফ্লাডলাইট নিয়ে অভিযোগ তুলেছে ফেডারেশন। জাতীয় দল নির্বাচক কামরুল ইসলাম কিসমত জানান, ‘পুরো মাঠে যে পরিমাণ আলো দরকার তা নেই। যে বাতি লাগানো হয়েছে তার আলো কীটপতঙ্গ টানে। ভ্যাটার্ন হকি ম্যাচের দিন সব খেলোয়াড়ই ভুগেছে। ইনসেক্ট প্রটেক্ট বাল্ব লাগালে এমন হতো না।’ এখন আসরে খেলা চলাকালে বিদেশী কোন দল টুর্নামেন্ট পরিচালকের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে বিপদে পড়বে বাহফে। তবে এ বিষয়টি স্বীকার করতে নারাজ এনএসসি। তারা বলেছে ফেডারেশনের কথামতোই ফ্লাডলাইট স্থাপন করা হয়েছে। এদিকে দর্শকদের জন্য গ্যালারি উন্মুক্ত থাকলেও নিরাপত্তার স্বার্থে ৮-২২ অক্টোবর হকি স্টেডিয়ামের দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খেলতে পারবেন না সারোয়ার জার্সি উন্মোচন অনুষ্ঠানে দুঃসংবাদটা দিলেন হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক। ওয়ার্ল্ড হকি লীগে লালকার্ড দেখায় এবং আচরণগত সমস্যার কারণে এশিয়া কাপের কোন ম্যাচেই নামতে পারছেন না বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় সারোয়ার হোসেন। ওয়ার্ল্ড হকি লীগে লালকার্ডের কারণে তিন ম্যাচের জন্য নিষেধাজ্ঞা ছিল বাংলাদেশ দলের এই খেলোয়াড়ের। সেই হিসেব করেই এশিয়া কাপের দলে রাখা হয়েছিল তাকে। কিন্তু সাদেক জানান, বুধবার রাতে এশিয়ান হকি ফেডারেশন চিঠি দিয়ে জানিয়েছে যে, পুরো টুর্নামেন্টেই খেলতে পারবেন না সারোয়ার। কিন্তু সেটা কেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারেননি তিনি। জানালেন সমস্ত কাগজপত্র ঘেঁটে এশিয়ান হকি ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে কি কারণে সারোয়ারকে খেলানো যাবে না। যদিও জানা গেছে হকি ফেডারেশনের অবহেলা, গাফিলতি এবং যথাসময়ে যোগাযোগের অভাবেই এমন শাস্তি পেলেন সারোয়ার। বাংলাদেশ দলের কোচ মাহবুব হারুন জানান, ‘সারোয়ারের অনুপস্থিতি আমাদের দলের জন্য বিরাট এক ধাক্কা। এখন তাকে বাদ দিয়েই হয়তো আমাদের আরেক খেলোয়াড়কে দলভুক্ত করতে হবে।’
×