ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন ১০ বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে ব্যাংকিং খাত থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা চায় বিদ্যুত বিভাগ

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

নতুন ১০ বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে ব্যাংকিং খাত থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা চায়  বিদ্যুত বিভাগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত উৎপাদন বাড়াতে নতুন ১০টি বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে ব্যাংকিং খাত থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ চেয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। স্বল্প সময়ে এ অর্থ ছাড় ব্যাংকিং নীতিমালা বিরোধী হলেও এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদনে ব্যয় বাড়বে, চাপ পড়বে গ্রাহকের ওপর। কোন চক্রের ফাঁদে পড়ে স্বল্প মেয়াদী ব্যবস্থাপনায় অর্থের অপচয় না করে প্রয়োজন সাপেক্ষে বিদ্যুত আমদানির পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বেসরকারীভাবে বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য নতুন করে অনুমোদন দেয়া প্রায় ১৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১০টি বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে ব্যাংকগুলোকে দ্রুত ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছে বিদ্যুত মন্ত্রণালয়। অল্প সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এ পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ ব্যাংক নীতিমালা বিরোধী। এজন্য অনেক ব্যাংক মিলে সিন্ডিকেট বা বন্ডের মাধ্যমে ঋণ দেয়ার সুযোগ থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শর্ত শিথিল করলে এ খাতে বিনিয়োগ লাভজনক বলে জানায় শীর্ষ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। এ প্রসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ওবায়দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘পাওয়ার প্ল্যান্টে লোন দেয়ার সুবিধা হচ্ছে, সরকার যে টাকা দিয়ে বিদ্যুত কিনল, সেই টাকাটা সরাসরি ব্যাংকে দিয়ে দিচ্ছে। ফলে ঘাটতি পূরণটা খুব ভাল হয়।’ ২০১০ সালের পর থেকেই বিশেষ আইনে কুইক রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ৮ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। নতুন আরও ১০টি কেন্দ্র করা হলে দাম নিয়ে ভোগান্তিতে পড়বে গ্রাহকরা। বিদ্যুত বিভাগ বলছে, সার্বিক চাহিদা পূরণে করতেই এ উদ্যোগ। তবে দীর্ঘমেয়াদী এ সিদ্ধান্ত সুখকর নয় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। পাওয়ার সেল-এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, প্রতি মাসে প্রায় পাঁচ লাখ নতুন সংযোজন হচ্ছে। সুতরাং আমরা এক বছরের শূন্যস্থানে পড়ে যাচ্ছি। তাই কিছু বিদ্যুত কেন্দ্র দ্রুত দরকার। অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, কুইক রেন্টাল একটা মাফিয়া হয়ে গেছে। তারা চায় না বাংলাদেশ বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কম মূল্যে বিদ্যুত সরবরাহ করুক। এই চক্রটা অনেক শক্তিশালী এবং তাদের জন্য সরকারকে হাজার হাজার টাকা ঘাটতি দিতে হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি। গ্যাস সঙ্কটে তেলভিত্তিক অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের চেয়ে আমদানি করা বিদ্যুতে খরচ কম। এজন্য ভারত থেকে দ্রুত বিদুত আমদানির পাশাপাশি বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে জোর দেয়ারও পরামর্শ এই অর্থনীতিবিদের।
×