ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ অনুর্ধ-১৮ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ, থিম্পুতে জাফর ইকবাল, রহমত মিয়াদের প্রতিপক্ষ নেপাল

আজ জিতলেই শিরোপা প্রায় নিশ্চিত বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আজ জিতলেই শিরোপা প্রায় নিশ্চিত বাংলাদেশের

জাহিদুল আলম জয় ॥ বাংলাদেশের ঘুমন্তপ্রায় পুরুষ ফুটবল জেগে ওঠার মন্ত্র পেয়েছে। ভুটানে চলমান সাফ অনুর্ধ-১৮ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জয়ের সুবর্ণ সুযোগ লাল-সবুজের দেশের। শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের ট্রফিটি নিয়ে দেশে ফিরতে পারলে ফুটবল নিঃসন্দেহে জেগে ওঠার উৎসাহ পাবে। এ লক্ষ্যে আজ সন্ধ্যায় মাঠে নামছে বাংলার যুবারা। আগের দুই ম্যাচেই জয় পাওয়া বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৮ দলের প্রতিপক্ষ নেপাল। ভুটানের থিম্পুর চালিমিথাং স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়। এই ম্যাচটি জিততে পারলেই শিরোপা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে মাহবুব হোসেন রক্সির দলের। ভারত ও মালদ্বীপকে হারানো বাংলাদেশের তরুণরা নেপালের বিরুদ্ধেও জয়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। রাউন্ড রবীন লীগ পদ্ধতির এ আসরে একে অপরের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষে যে দলের পয়েন্ট সবচেয়ে বেশি হবে তারাই হবে চ্যাম্পিয়ন। বর্তমানে দুই ম্যাচ জিতে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ। সমান পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে স্বাগতিক ভুটান। তবে তারা খেলেছে একটি ম্যাচ বেশি। ভারত ও নেপালের ভা-ারে জমা ৩ পয়েন্ট করে। মালদ্বীপরের ঝুলিতে কোন পয়েন্ট জমা পড়েনি। এখন যে অবস্থা তাতে শিরোপা লড়াইটা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে স্বাগতিক ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে। তবে বাংলার যুবারা আছে সুবিধাজনক অবস্থায়। কেননা ভুটান সর্বশেষ ম্যাচে ভারতের কাছে হেরেছে ৩-০ গোলে। এতে করে বাংলাদেশের ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা আরও উজ্বল হয়েছে। আজ নেপালকে হারাতে পারলে বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ৯। সেক্ষেত্রে বুধবার ভুটান ও বাংলাদেশের ম্যাচটি হবে শিরোপা নির্ধারণী। কিন্তু জাফর ইকবাল, রহমত মিয়ারা এগিয়ে থাকবেন স্পষ্টভাবে। তখন ম্যাচটি ড্র করতে পারলেই চ্যাম্পিয়ন হবে বাংলার দামাল ছেলেরা। যদি বাংলাদেশ হেরেও যায় সেক্ষেত্রেও ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা থাকবে। কারণ তখন বাংলাদেশ ও ভুটান দু’দলেরই পয়েন্ট হবে ৯ করে। কিন্তু অল্প ব্যবধানে হারলে বাংলাদেশই শিরোপা জিতবে। কারণ গোলগড়ে এগিয়ে থাকবে রক্সি বাহিনী। বর্তমানে গোলের হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান +৩ আর ভুটানের Ñ১। নেপালকে হারিয়ে ব্যবধানটা আরও বাড়ানোর সুযোগ থাকছে বাংলাদেশের। এ কারণে আজ জিতলেই শিরোপা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। ২০১৫ সালে কাঠমান্ডুতে সেমিফাইনালে আটকে গিয়েছিল বাংলাদেশের যুবারা। টাইব্রেকারে হেরেছিল ভারতের কাছে। এবার ০-৩ গোলে পিছিয়ে থেকে সেই ভারতকে হারিয়েছে ৪-৩ গোলে। এমন জয় বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে আর কখনও আসেনি। কোন লেভেলেই এত বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। জাফর ইকবাল, রহমত মিয়াদের অবিশ্বাস্য পারফর্মেন্সে ইতিহাস গড়া জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে যুবদল। ভারতের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরের ম্যাচে মালদ্বীপকে গুঁড়িয়ে দেয় ২-০ গোলে। নেপাল আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হলেও এবার তারা বেশ নড়বড়ে। তাই বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন জাফর, রহমত, সৈকতরা। মালদ্বীপকে হারানোর পর চারদিন বিশ্রাম পেয়েছে বাংলার যুবারা। এই সময়ে অনুশীলনে নিজেদের তরতাজা করেছে তারা। টানা দুই জয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৮ দল। দলটির কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি এখন স্বপ্ন দেখছেন শিরোপা জয়ের। শিরোপা জিততে সবগুলো ম্যাচই জিততে চান রক্সি। তিনি বলেন, আমরা প্রথম দুই ম্যাচ জেতার পর বেশ ভাল অবস্থানে আছি। চ্যাম্পিয়ন হতে হলে নেপালকে হারাতেই হবে। দলটি আবার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। তারচেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে ভুটানের কন্ডিশনের সঙ্গে বেশ অভ্যস্ত দলটি। ভারত ম্যাচে আমাদের ফুটবলারদের বেশ কষ্ট হয়েছিল ভুটানের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। এখন অবশ্য মানিয়ে নিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একটি বিষয় খুব পরিষ্কার ছিল। বাংলাদেশের স্ট্রাইকাররা গোল করতে পারছিলেন না। সেটা জাতীয় পর্যায় থেকে জুনিয়রÑ সব লেভেলেই। কিন্তু জাফর ইকবাল এখন পর্যন্ত ৩ গোল করে চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে আছেন। দুই ম্যাচে যুবারা গোল করেছে ৬টি। এই গোল স্কোরিংই স্বপ্ন দেখাচ্ছে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের। জাফর ইকবাল পেশাদার লীগে চট্টগ্রাম আবাহনীর পক্ষে খেলছেন। কিন্তু নিয়মিত খেলার সুযোগ পান না। তারপরও নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ রেখেছেন দুই ম্যাচেই। প্রতিশ্রুতিশীল এই ফরোয়ার্ডকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত কোচ। রক্সি বলেন, জাফর আমাদের দলের তুরুপের তাস। দারুণ খেলছে প্রতিটি ম্যাচে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে তার গোল ক্ষুধা। সে সবসময় গোল করার জন্য মুখিয়ে থাকে।
×