ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটের একমাত্র ব্যায়ামাগার বন্ধ ১৪ বছর

প্রকাশিত: ০৫:১১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

 বাগেরহাটের একমাত্র ব্যায়ামাগার বন্ধ ১৪ বছর

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের একমাত্র ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্রটি গত চৌদ্দ বছর বন্ধ আছে। চালু করতে নেই কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ। ছাদের রড খুলে গেছে। দেয়ালের প্লাস্টার উঠে গেছে। খসে পড়ছে। আক্ষরিক অর্থেই ভবনটি এখন পরিত্যক্ত। সহায় সম্বলহীন এক রোগী এসে থাকছে কয়েক মাস ধরে। তারও মৃত্যুর ঝুঁকি আছে ওখানে থাকায়। তারপরও থাকেন তিনি, কারণ তার থাকার জন্য কোন জায়গা নাই। এসব কিছু চলছে বাগেরহাটের একমাত্র ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্রে। জানা যায়, বাগেরহাটের যুবকদের ক্রীড়া ও শরীরচর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে ১৯৭৭ সালে শহরের পিএনজি মাঠে পৌরসভার জায়গায় এটি তৈরি করা হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অর্থায়নে ভবন ও স্থাপনা করেন স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীরা। ১৯৭৮ সালের ২৪ অক্টোবর ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এএসএম মোস্তাফিজুর রহমান। তারপর থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে চলত যুবকেন্দ্রটি। সারাদিন খেলাধুলা ও অনুশীলন করত স্কুল-কলেজ পড়ুয়া যুবকরা। সন্ধ্যার পর থেকে আসতেন চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা। ক্রীড়াপ্রেমীদের পদচারণায় যুবকেন্দ্রটি থাকত উৎসব মুখর। এটিই ছিল বাগেরহাটের একমাত্র ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্র। এখানে ইনডোর ও আউটডোর দুই ধরনের শরীর চর্চা ও খেলাধুলা করার সুযোগ ছিল। ইনডোরে ছিল ক্যারাম, দাবা ও টেবিল টেনিস। আউটডোরে ছিল বক্সিং, ভার উত্তোলন, যোগাসনসহ অনেক কিছু। ২০০৩ সালে যুবকেন্দ্রের পাশে পিএনজি মাঠে জেলা পরিষদ স্বাধীনতা উদ্যানের মঞ্চ ও ছাউনি করার সময় যুবকেন্দ্রের অফিস কক্ষটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। তখন ভবনের ছাদ ফেটে অচল হয়ে যায় কেন্দ্রটি। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত যুবকেন্দ্রটি অচল আছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি, ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্র পরিচালনা কমিটির উপ-পরিচালক শেখ হায়দার আলী বাবু বলেন, কেন্দ্রটি বাগেরহাটের মানুষের প্রাণের প্রতিষ্ঠান ছিল। এখানে অনুশীলন করে অনেকে জাতীয় পর্যায়ে ভাল করেছে। জাতীয় পর্যায়ে পদকপ্রাপ্ত বক্সার এনায়েত, পারভেজসহ অনেকে এখানে অনুশলীন করত। কিন্তু দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বাগেরহাটের অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে। যুবকেন্দ্রটির ভবন সংস্কারসহ ব্যবহার উপযোগী করতে পণের লক্ষাধিক টাকা প্রয়োজন। শরীর চর্চার সরঞ্জামাদি ক্রয়ে লাগবে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। আমরা অনেকবার উদ্যোগ নিয়েও এটি সচল করতে পারি নাই। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যায়ামাগারটি চালু করলে বাগেরহাটের যুব সমাজ উপকৃত হবে। বাগেরহাট ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্রটির পরিচালক, অধ্যাপক বুলবুল কবির বলেন, স্বাধীনতা উদ্যানের মঞ্চ ও চাউনি করার সময় যুবকেন্দ্রের অফিস কক্ষটি ভেঙ্গে দেয় জেলা পরিষদ। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সরদার সেলিম আহমেদ বলেন, বাগেরহাটের ব্যায়ামাগার ও যুবকেন্দ্রটি সচল করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
×