ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাবনায় সড়কের ৫৫ বাঁকে মৃত্যুফাঁদ ॥ বাাড়ছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পাবনায় সড়কের ৫৫ বাঁকে মৃত্যুফাঁদ ॥ বাাড়ছে দুর্ঘটনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ৭ সেপ্টেম্বর ॥ গত দু’বছরে ৮৪৬ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯৫ জন নিহত, আহত হয়েছে ১ হাজার ৫৭৬। বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে সড়কের বিভিন্ন বাঁক ও মোড়ে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের হিসাব মতে পাবনায় অভ্যন্তরীণ ও মহাসড়কে ছোট-বড় ৫৫ বাঁক রয়েছে। পাবনার মহাসড়কের বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে রয়েছে মৃত্যুফাঁদ। প্রতিবছর এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে ঝরছে তাজা প্রাণ। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। বিভিন্নভাবে চালকদের সতর্ক করা হলেও কমছে না দুর্ঘটনা। নাগরিক সমাজের মতে, অদক্ষ চালকদের ওভারটেকিং প্রবণতা ও সড়কে অতিরিক্ত বাঁক দুর্ঘটনার কারণ। দুর্ঘটনা রোধে চালকদের সচেতন করা, বাঁকগুলোতে ডিভাইডার নির্মাণ ও প্রশস্ত করার কথা জানিয়েছেন পুলিশ প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা। পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের আতাইকুলা থানার মধুপুর বাঁকে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল দ্রুতগতির একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে তিনজন নিহত হয়। আহত হয় আরও ৩০ জন। তাদের কয়েকজনের হাত, পা ও বুকের হাড় ভেঙ্গে গেছে। গেল বছর ১৫ আগস্ট একই মহাসড়কের কাশিনাথপুর মোড়ে ঘটে দুর্ঘটনা। সেখানে কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে দুর্ঘটনাস্থলেই মারা যান ৬ জন। পাবনা-রাজশাহী, পাবনা-কুষ্টিয়া, পাবনা-ঢাকা, কাশিনাথপুর-সিরাজগঞ্জসহ জেলার অভ্যন্তরীণ মহাসড়কে এমন দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে মহাসড়কের কোন না কোন বাঁকে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জেলা কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে মোট ৮৪৬। এতে নিহত হয়েছে ১৯৫ জন। আহত হয়েছে ১ হাজার ৫৭৬ জন। মহাসড়কের বিভিন্ন বাঁক বা মোড়কে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে দুর্ঘটনা এড়াতে চালকদের সতর্ক করে পুলিশের পক্ষ থেকে বাঁকের দু’পাশে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড দিয়ে গতি কমানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অনেক চালক সেসব নির্দেশনা না মেনে গতি কমানোর বদলে আরও বাড়িয়ে দেন। এতে ঘটে দুর্ঘটনা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পাবনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইউনুস আলী বলেন, আঁকাবাঁকা মহাসড়কে গাড়ি পাশ কাটানোর সময় বিপরীত দিক দেখা যায় না, অনেক সময় দেখা গেলেও বাঁকে দুটি গাড়ির দূরত্ব চালক ঠিক আন্দাজ করতে পারেন না। এসব কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা এড়াতে বাঁকগুলোতে যানবাহনের গতি কম রাখা উচিত। সে সঙ্গে বাঁকগুলো সোজা করে রাস্তার পাশে গাছগুলো কেটে দিলে দুর্ঘটনা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাবনা থেকে বিভিন্ন দিকে অভ্যন্তরীণ মহাসড়কে ছোট-বড় অন্তত ৫৫টি বাঁক রয়েছে। পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের পাবনা থেকে নগরবাড়ী পর্যন্ত বাঁক রয়েছে ১১টি। এর মধ্যে মধুপুর, আতাইকুলা, তৈলকুপী, মাধপুর, গাঙ্গহাটি, বহালবাড়ি, বনগ্রাম, চিনাখড়া, দুলাই ও কাশিনাথপুর বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
×