ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘরের মাটিতে ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটাতে পারলেন না তামিম

প্রকাশিত: ০৫:১০, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ঘরের মাটিতে ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটাতে পারলেন না তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে ॥ বাংলাদেশ দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। তিনি সেটা প্রমাণ করেছেন ইতোমধ্যেই দেশের ক্রিকেটে তিন ফরমেটেই সর্বাধিক রান ও সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে। এ কারণে ক্রমেই বাংলাদেশ দলও যেন নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে এ বাঁহাতি ওপেনারের ওপর। তামিম যখন ভাল ইনিংস খেলেন তখন দলের জন্য সুফল বয়ে আসে। প্রমাণ এবারের সিরিজটিই। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক বিজয়ে মিরপুর টেস্টে উভয় ইনিংসে অর্ধশতক হাঁকিয়ে বিপর্যস্ত দলকে বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টে উভয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন তামিম। আর দলকেও হারতে হয়েছে চারদিনে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। কারণ তামিমের ব্যর্থতার ছাপ পড়েছে অন্য ব্যাটসম্যানদের ওপরÑ বিপর্যস্ত হয়েছে একের পর এক উইকেট হারিয়ে। ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান যতটা সমৃদ্ধ এ বাঁহাতির, তারচেয়ে খারাপ নিজ শহরের মাঠ সাগরিকায়। তামিম মিরপুর টেস্টে করেছিলেন ৭১ ও ৭৮ রান। দুই ইনিংসেই তিনি দলকে চরম বিপদ থেকে রক্ষা করেন দারুণ ধৈর্যশীল এ ইনিংসগুলো খেলে। আর সে কারণেই ম্যাচশেষে হেসেছে বাংলাদেশ দল বিজয়ের উদ্ভাসিত হাসিতে। তামিম ব্যাট হাতে ভাল করলে দলের জয় কিংবা ড্র পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেক। এমনটা বেশ কয়েকবারই হয়েছে। ১০২ টেস্টে বাংলাদেশ দল ১০ জয়, ১৫ ড্র করেছে। এর মধ্যে ১৮ ম্যাচেই দুর্দান্ত ভূমিকা রেখেছেন তামিম। ড্র কিংবা জয়ের ১৮ টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ৫২.১৫। ৫ সেঞ্চুরি ও ৮ হাফসেঞ্চুরিসহ করেছেন ১৬৬৯ রান। অথচ ৫১ টেস্টের ক্যারিয়ারে ৩৯.৬৫ গড়ে ৩৮৪৭ রান করেছেন এ বাঁহাতি ওপেনার। এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় দলের সাফল্যের পেছনে তামিমের ভূমিকা কতখানি। সেটার প্রমাণ মিরপুর টেস্টেই দিয়েছেন উভয় ইনিংসে অন্যরা যখন ব্যর্থ সে সময়ে ৭১ ও ৭৮ রানের দুটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলে। ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান যেমনই হোক নিজ শহরে বরাবরই কোন এক অজানা কারণে আহামরি কিছু করে দেখাতে পারেননি তামিম। ১৩ টেস্টে (২৫ ইনিংস) চট্টগ্রামে মাত্র ৩২.১২ গড়ে ৮০৩ রান করেছেন। ১০৯ রানের একটিই বড় ইনিংস এবং ৬টি মাত্র অর্ধশতক। অথচ তামিম ভাল ব্যাট করলে দলের জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বাংলাদেশের ১০ জয়ের ম্যাচের মধ্যে ৯টিতেই খেলেছেন তামিম। এই ৯ টেস্টে তিনি ৫৪.৭২ গড়ে ৪ সেঞ্চুরি ও ৪ হাফসেঞ্চুরিসহ করেছেন ৯৮৫ রান। আবার ৯টি টেস্ট ম্যাচ ড্রয়ের সাক্ষী হয়েছেন তিনি, সেগুলোতে করেছেন ৪৮.৮৫ গড়ে ৬৮৪ রান। ১ সেঞ্চুরি ও ৪ হাফসেঞ্চুরি আছেÑ সেই শতকটি ব্যক্তিগত সেরা ২০৬ রানের ইনিংস। ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসেও তামিমের উইলো থেকে বড় রান আসলে তা ফলপ্রসূ হয়েছে বাংলাদেশের জন্য। এর বড় প্রমাণ খুলনায় ২০১৫ সালে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে তার ২০৬ রানের ইনিংস বিপদে পড়া বাংলাদেশকে প্রথমবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্যভাবে ড্র করার গৌরব এনে দিয়েছিল। বাংলাদেশ দলের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে দারুণ সফল তামিম। এক্ষেত্রে তার ব্যাটিং গড় ৪৩.০৪ যা ক্যারিয়ার গড়ের (৩৯.৬৫) চেয়ে বেশি। কিন্তু এবার চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৯ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১২ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আর তামিমের ওপর নির্ভরশীল দল আত্মবিশ্বাস হারিয়ে একের পর এক উইকেট খুইয়ে এসেছে। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে আর কোন ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেননি অসি বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে। যার ফলাফল হিসেবে নেমে এসেছে পরাজয়।
×