ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ড্রামের ভেতর লাশ

স্কুল শিক্ষিকা নার্গিস হত্যার রহস্য ৪ দিনেও উদ্ঘাটন হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

 স্কুল শিক্ষিকা নার্গিস হত্যার রহস্য ৪ দিনেও উদ্ঘাটন হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ নিখোঁজের দু’দিন পর গাজীপুরে সড়কের পাশে পরিত্যক্ত ড্রামের ভেতর থেকে ঈদের দিন উদ্ধার হওয়া নরসিংদীর স্কুল শিক্ষিকা নার্গিস বেগম হত্যার রহস্য চার দিনেও উদ্ঘাটন হয়নি। এমনকি এ ঘটনায় জড়িত কাউকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ আটক করতে পারেনি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এ হত্যাকা-টিকে পারিবারিক কলহে পরিকল্পিত হত্যাকা- বলে দাবি করা হয়েছে। এদিকে নিহতের ভাই আহমদ হোসেন মানিক বাদী হয়ে সন্দেহভাজন চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনকে আসামি করে জয়দেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের ভাই আহমদ হোসেন মানিক ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টিলিজেন্সের (এনএসআই) কর্মকর্তা আনসার উল্লাহর সঙ্গে নার্গিস আক্তারের বিয়ে হয়। নার্গিসের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। আনসার উল্লাহর এটি দ্বিতীয় বিয়ে। বর্তমানে আনসার উল্লাহ চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। এর আগেও আনসার উল্লাহ একটি বিয়ে করেন। বিষয়টি তারা আগে জানতেন না। ওই সংসারে আসমা নুসরাত বাবলী (৩২) ও মান্নী (৭) নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামীর (আনসার উল্লাহর) ফ্ল্যাট, বাড়ি, জায়গা সম্পত্তি ও তার অবসরকালীন ভাতা নিয়ে আনসার উল্লাহর প্রথম স্ত্রী টিংকু বেগম (৫৭) তার মেয়ে ও মেয়ের জামাতা আলো’র সঙ্গে নার্গিস বেগমের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। যা নিয়ে ঢাকার নাখালপাড়ার বাসায় একাধিকবার বিচার সালিশ হয়। নার্গিস বেগম ও তার সন্তানদের অর্থসম্পদ হতে বঞ্চিত করার জন্য তারা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আসছিল। তারা একাধিকবার প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়। নিহতের ভাই আহমদ হোসেন মানিক আরও জানান, নার্গিস বেগমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের লাশ গুম করে হত্যার রহস্য গোপন করার জন্য লাশ ড্রামে ভর্তি করে গাজীপুরে ফেলে দিয়ে আসে। তিনি এ ঘটনার জন্য তার ভগ্নিপতি আনসার উল্লাহ, প্রথম স্ত্রী, তার মেয়ে ও মেয়ের জামাতাকে অভিযুক্ত করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার এসআই মন্তোষ চন্দ্র দাস জানান, স্কুল শিক্ষিকা নার্গিস বেগম হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে এ হত্যা ঘটনাটির তদন্ত চলছে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ভোরে আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার কথা বলে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন নরসিংদীর ঘোড়াদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নার্গিস বেগম (৫৪)। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে তার কোন সন্ধান পায়নি। নিখোঁজের দু’দিন পর ঈদের দিন শনিবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোগড়া পেয়ারা বাগানের কাছ থেকে ঢাকা-বাইপাস সড়কের পাশে কাঁচা তরকারির কাওরান বাজার আড়তের গেটের সামনে ঢাকনা দিয়ে আটকানো প্লাস্টিকের একটি ড্রাম পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। ওই ড্রাম থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং ড্রামের ভেতর থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। নিহতের বুকে ও পেটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে স্বজনরা নিহতের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় রবিবার রাতে নিহতের ভাই গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
×