ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গুমের গুজব ॥ অবশেষে উদ্ধার হলেন ছাত্রদল নেতা

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

গুমের গুজব ॥ অবশেষে উদ্ধার হলেন ছাত্রদল নেতা

সংবাদদাতা, মাধবপুর, হবিগঞ্জ, ৪ সেপ্টেম্বর ॥ মাধবপুর উপজেলার ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদল সহসভাপতি ও গাছ ব্যবসায়ী হোসাইন মোঃ রফিক (৩৫) অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা দিয়েছেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ খবর পেয়ে মাধবপুরের সন্নিকটে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চান্দুরা এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের জিম্মায় দিয়েছে। সে কি গুম হয়েছিল নাকি ঋণের দায়ে স্বেচ্ছায় বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেছিল এসব প্রশ্নের কোন উত্তর মেলেনি। গত ২৮ আগস্ট রাত ১০টার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গুম করে ফেলেছে এমন গুজবে বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে তাকে অক্ষত ফিরিয়ে দেয়ার জন্য মাধবপুরে পোস্টার সাঁটানো হয়। কিন্তু তার এই রহস্যজনক নিখোঁজ নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন উঠে। তার পিতা জজ মিয়া থানায় জিডি করেই ঘটনা দায় সারেন। মাধবপুর থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ঘটনা পুলিশ অবহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে উদ্ধারে সারাদেশেই বেতার বার্তাসহ সীমান্তে সোর্স নিয়োগ করেন। তার বাবা ও তার স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তথ্যের গরমিল পাওয়া যায়। তখন পুলিশের সন্দেহ হয় ঋণের দায় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেকায়দায় ফেলতেই নিখোঁজের নাটক সাজানো হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার গোয়াছনগর গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে ছাত্রদল নেতা রফিক বছর দেড়েক আগে সুরমা চা-বাগান থেকে দুই কোটি টাকা মূল্যের আকাশমনি গাছ ক্রয় করার চুক্তিপত্র করেন। শর্ত ছিল টি বোর্ড, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে গাছগুলো কাটা হবে। কিন্তু তাদের অনুমতি ছাড়াই গোপনে গাছ কর্তন করা হয়। এতে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হন। পরবর্তীতে তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় সুরমা চা-বাগান কর্তৃপক্ষ তাকে গাছ কাটায় নিষেধ করে। এরপর ৬/৭ মাস আগে আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে সুরমা চা বাগান থেকে আবার গাছ কেটে জগদীশপুর তেমুনিয়ায় জমা করে। মোটা অংকের লাভের প্রলোভন দেখিয়ে রফিক অনেকের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নেন। বেজুড়ার এক ব্যবসায়ী মাসুদ খানের কাছ থেকে ব্যবসার অংশীদার হিসেবে ৩০ লাখ টাকা নেয়। মাসুদ এ ব্যবসা ছেড়ে দিলে তাকে লাভসহ ৪০ লাখ টাকার মাধবপুর এবি ব্যাংকে একটি চেক দেন। ঘটনার রাতে ২৮ আগস্ট মাসুদকে ১০ লাখ টাকা নগদে দেয়ার কথা ছিল। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই প্রচার হয় রফিককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, এ ঘটনায় জনমনে বিভ্রান্তি ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানান তারা। ঘটনার শুরুতে তদন্তে নিয়োজিত তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানান, সে অসুস্থতার ভান করে অসংলগ্ন কথা বলে। তবে তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।
×