ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মালিঙ্গা-ধোনির রেকর্ডের ম্যাচে কোহলি-রোহিতের সেঞ্চুরি

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

 মালিঙ্গা-ধোনির রেকর্ডের ম্যাচে কোহলি-রোহিতের সেঞ্চুরি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন তিন ফরমেটেই। টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন একেবারে। তবে ওয়ানডে ও টি২০ খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বকালের সেরা এ অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান এবার নতুন এক মাইলফলক ছুঁয়েছেন। বৃহস্পতিবার কলম্বোয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের ৩০০তম ওয়ানডে খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। অবশ্য ভারতীয় দলের জার্সিতে এটি তার ২৯৭তম ম্যাচ আর তিনটি ম্যাচ তিনি খেলেছেন এশিয়া একাদশের হয়ে। ধোনির স্মরণীয় এ ম্যাচের দিনে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন ওপেনার রোহিত শর্মা ও বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলি। দু’জনই হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি। কিন্তু এ ম্যাচে আরেকটি অবিস্মরণীয় মাইলফলক ছুঁয়েছেন শ্রীলঙ্কার পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। কোহলির উইকেট নেয়ার মাধ্যমে তিনি বিশ্বের ১৩তম এবং শ্রীলঙ্কার চতুর্থ বোলার হিসেবে এ কৃতিত্ব দেখালেন। কলম্বোয় টস হওয়ার পরই ধোনির আরেকটি মাইলফলক ছোঁয়া নিশ্চিত হয়ে যায়। ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০০৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিষেক হয়েছিল ৩৬ বছর বয়সী এ উইকেটরক্ষকের। মাত্র ৩ বছর পরই দলের নেতৃত্ব কাঁধে চাপে ধারাবাহিকভাবে দলের জন্য অবদান রাখার কারণে। এরপর তিনি দলকে সবগুলো আইসিসি টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতিয়েছেন। টি২০ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয় করেছে তার অধীনে ভারতীয় দল। সে কারণে সর্বকালের সেরা অধিনায়কও হয়ে যান তিনি ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে। সবমিলিয়ে ১৯৯ ওয়ানডে ম্যাচে তিনি ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভারতের আর কোন অধিনায়ক এত বেশি ম্যাচে দলের অধিনায়কত্ব করেননি। দ্বিতীয় স্থানে আছেন ১৭৪ ম্যাচ নেতৃত্ব দেয়া মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। অজয় জাদেজার মাত্র ১৩ ম্যাচ এবং বর্তমান অধিনায়ক কোহলির ৩৪ ম্যাচের পরিসংখ্যান বাদ দিলে ৫৯.৫৭ ভাগ সাফল্যের হার নিয়েও ভারতের সেরা অধিনায়ক ধোনি। এবার ৩০০তম ম্যাচ খেলে ফেললেন তিনি। অবশ্য বিশ্ব ক্রিকেটে দলকে সর্বাধিক ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়ার রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং সবচেয়ে এগিয়ে। তিনি ২৩০ ম্যাচে, দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের স্টিফেন ফ্লেমিং ২১৮ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ম্যাচ খেলার দিক থেকে ২০তম খেলোয়াড় হিসেবে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ধোনি। সর্বাধিক ৪৬৩ ওয়ানডে খেলেছেন ভারতেরই কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকর। ভারতের মাত্র ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ৩০০ ওয়ানডে খেললেন ধোনি। শচীন ছাড়াও রাহুল দ্রাবিড় (৩৪৪), আজহারউদ্দিন (৩৩৪), সৌরভ গাঙ্গুলী (৩১১) ও যুবরাজ সিং (৩০৪) তিন শতাধিক ম্যাচ খেলেছেন ভারতের হয়ে। তবে ক্রিকেট ইতিহাসে শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারার পর মাত্র দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে তিনি এই বিরল অর্জনের অধিকারী হয়েছেন। এই মাইলফলকের ম্যাচে ধোনি ১ রানের জন্য অর্ধশতক পাননি। ৪২ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। তবে শতক হাঁকিয়ে ম্যাচে সবার নজর ধোনির দিক থেকে ঘুরিয়ে নিয়েছেন রোহিত ও কোহলি। রোহিত ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত সাজঘরে ফেরেন ৮৮ বলে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় ১০৪ রান করে। তাকেও ছাড়িয়ে গেছেন অধিনায়ক কোহলি। তিনি ক্যারিয়ারের ২৯তম শতক হাঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত ৯৬ বলে ১৭ চার ও ২ ছক্কায় ১৩১ রান করেন। তাকে দিলশান মুনাবিরার ক্যাচে পরিণত করে নতুন এক মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ পেসার মালিঙ্গা। ৩৪ বছর বয়সী এ পেসার ক্যারিয়ারের ২০২ ওয়ানডেতে ৩০০ উইকেটের মালিক হয়ে গেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান কোহলিকে শিকার করে। ২০০৪ সালে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মালিঙ্গা ২০০৪ সালের ১৭ জুলাই ডাম্বুলায় আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে। তার আগে বিশ্বের ১২জন বোলার এ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তবে পেসার হিসেবে তিনি বিশ্বের অষ্টম। শ্রীলঙ্কার পক্ষে চতুর্থ বোলার হিসেবে তিনি ওয়ানডেতে ৩০০ উইকেটের মালিক হলেন। সাবেক অফস্পিনার মুত্তিয়া মুরলিধরন ৫৩৪ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে।
×