ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিমুলিয়ায় পারাপারের অপেক্ষায় চার শতাধিক যান

ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়ায় ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বৃহস্পতিবার সাড়ে ৪ শতাধিক যান পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকায় ১৯টি ফেরি শুধু যাত্রীবাহী বাস ও প্রাইভেটকার পার করছে। এর মধ্যে ছোট গাড়ির সংখ্যাই বেশি। তীব্র স্রোত ও বাতাসের কারণে নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ এবং ফেরি স্বাভাবিক গতিতে চলতে না পারায় দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া ঘাটে এখন তিল ধারণের জায়গা নেই। জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম জানিয়েছেন, অন্য ঈদগুলোর চেয়ে ভালভাবেই যাত্রীরা বিড়ম্বনাহীন পারাপার হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই শিমুলিয়া ঘাটের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ দেখা যায়। গাড়ির দীর্ঘ সাড়ি দেখা যায় সকল ঘাট পয়েন্টেই। ১৯টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ এবং তিন শতাধিক স্পিডবোটে করে পার হচ্ছে যাত্রীরা। ঘাট এবং ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে জেলা পুলিশের সাড়ে ছয়শ’ সদস্য কাজ করছে। তবে ঘাটে পারাপারের ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগ তোলেন যাত্রীরা। লঞ্চ এবং স্পিডবোট অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করছে। স্পিডবোট যাত্রী মনির হোসেন জানান, পদ্মা পারাপারে আগে স্পিডবোটে ১৫০ টাকা করে নেয়া হতো এখন ২০০ টাকা করে আদায় করছে। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মাকসুদা লিমা জানান, যাত্রী নিরাপত্তায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের কাছে যদি কেউ অভিযোগ করে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব। অতিরিক্ত যাত্রী বহন এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাত্রীদের নিরাপদে ঘরে ফেরা ক্ষেত্রে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এদিকে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে পরিবহন সঙ্কটে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মিরপুর, গুলিস্তান, পোস্তাগোলা থেকে শিমুলিয়াগামী গণপরিবহনেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। শিমুলিয়া পর্যন্ত নির্ধারিত বাস ভাড়া ৭০ টাকার স্থলে ১০০ টাকা আদায় করছে। শিমুলিয়া বিআইডব্লিউটিসির এজিএম খন্দকার শাহ নেওয়াজ খালেদ জানান, বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার উপচে পড়া ভিড় বেশী। নদীতে তীব্র স্রোত ও বাতাস রয়েছে। তারপরও পারাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। শিমুলিয়া প্রান্তে সাড়ে ৪ শ’ যান পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ট্রাক পারাপার বন্ধ করা হয়েছে। ট্রাকগুলো শিমুলিয়া ঘাট থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে সিরাজদিখান কুচিয়ামোড়া সিটি মাঠে রাখা হয়েছে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত তিনদিন এই নৌরুটে সকল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। অনুরূপ বন্ধ থাকবে ঈদের পরের তিনদিনও। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম জানান, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নৌরুট নির্বিঘেণে পারাপারের লক্ষ্যে শিমুলিয়া ফেরিঘাটের সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার, কমিউনিটি পুলিশ কাজ করছে। চাপ বেশি থাকলে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা জানান, সার্বক্ষণিক মনিটরিং চলছে। ঘরমুখো মানুষকে নির্বিঘেœ পারাপারে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বহরে ফেরি সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক ঘাটে রয়েছে। কোন অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে যাওয়া মানুষের পথে বিড়ম্বনা সৃষ্টি কোনভাবেই সহ্য করা হবে না।
×