ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এজবাস্টন বেদনা আর হেডিংলির দুঃসহ স্মৃতি সঙ্গী ক্যারিবীয়দের

স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আজ শুরু দ্বিতীয় টেস্ট

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২৫ আগস্ট ২০১৭

স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আজ শুরু দ্বিতীয় টেস্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দিবারাত্রির টেস্টে বিন্দুমাত্র সুখকর কিছু হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। ফর্মের তুঙ্গে থাকা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এজবাস্টনে মাত্র তিনদিনেই হেরে গেছে তারা। তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এখন ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ইংলিশরা। সিরিজ বাঁচাতে হলে নিদেনপক্ষে ড্র করতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। আজ থেকে হেডিংলিতে মাঠে গড়াবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। এবার দিনের আলোতেই স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে সফরকারী ক্যারিবীয়রা। কিন্তু ১৭ বছর আগের দুঃসহ স্মৃতিটা ফিরে আসছে আবার। সে সময় কিংবদন্তি পেসার কার্টলি এ্যামব্রোস খেলেছিলেন, মাত্র দুইদিনেই ইংল্যান্ডের কাছে বাজেভাবে হেরে যায় ক্যারিবীয়রা। এজবাস্টনে লজ্জাজনক ইনিংস হারের ক্ষত এখনও জ্বলজ্বলে, এরসঙ্গে যোগ হয়েছে পুরনো সেই দুঃসহ স্মৃতি। উজ্জীবিত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাই এবারও দারুণ কিছু করা বড় ধরনের অগ্নিপরীক্ষা হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। ২০০০ সালে ৫ টেস্টের সিরিজে ১-১ সমতা ছিল ৩টি শেষ হওয়ার পর। যে কোন দলই জিততে পারে সিরিজ, এই পরিস্থিতিতে হেডিংলিতে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু মাত্র দুইদিনেই ইংলিশদের কাছে নতি স্বীকার করে ক্যারিবীয়রা। ইংল্যান্ড এগিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে। শেষ টেস্টেও জিতে যায় তারা এবং সফরকারীরা সিরিজ হারে ৩-১ ব্যবধানে। ১৯১২ সালে প্রথমবার ইংল্যান্ড দুইদিনেই টেস্ট জিতেছিল। ওল্ডট্র্যাফোর্ডে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা উপহার দিয়েছিল তারা। ২০০০ সালে তারা ক্যারিবীয়দের দু’দিনে পরাজিত করে ৫৪ বছর পর। অথচ সেই দলটি ছিল কিংবদন্তিদের দিয়ে গড়া একটি দল। তবে সেই সিরিজের ওই একমাত্র জয়টিই গত ১৭ বছরে ইংলিশদের মাটিতে একমাত্র জয় উইন্ডিজদের। এখন ১৭ বছর আগের সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটি নেই। বর্তমানে র‌্যাঙ্কিংয়ে ৮ নম্বরে আছে তারা, আরও একধাপ নিচে নামার শঙ্কায়। আর প্রথম টেস্টে তাদের দুর্দশা প্রমাণ করেছে কতটা দুর্বল হয়ে পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট স্কোয়াড। সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো বেশ কঠিন সফরকারীদের। ব্যাটিং এবং বোলিং কোন বিভাগেই বিন্দুমাত্র আঁচড় কাটতে পারেনি তারা ইংলিশদের ওপর। এখন জো রুটের ইংল্যান্ডের সঙ্গে শক্তিমত্তায় বিশাল পার্থক্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ইয়র্কশায়ারের এ ভেন্যুতে স্থানীয় তারকা জনি বেয়ারস্টো ও অধিনায়ক রুট নিজেদের আরও মেলে ধরবেন সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। তারা প্রথম টেস্টেও দারুণ ভূমিকা রেখেছেন দলের জয়ে। তবে সাবেক অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক আবার নিজেকে উজ্জ্বলভাবে মেলে ধরেছেন এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া ইংলিশদের জন্য। বোলাররাও দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। দুই অভিজ্ঞ পেসার জেমস এ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড ছিলেন দারুণ কার্যকর। সঙ্গে তরুণ রোল্যান্ড জোন্সও ভাল বোলিং করেছেন। তবে স্পিন অলরাউন্ডার মঈন আলী অবশ্য ব্যাটে-বলে নিষ্প্রভ ছিলেন। তিনি এবার জ্বলে উঠলে ক্যারিবীয়দের জন্য আরও বিপদ বাড়বে। সেটা মনেপ্রাণেই চাইছে ইংল্যান্ড। কারণ এই টেস্ট জিতলেই আগেভাগে সিরিজ নিজেদের হয়ে যাবে তাদের। সেজন্য যথেষ্ট অনুপ্রেরণা ও আত্মবিশ্বাস তাদের সঙ্গে আছে। প্রথম ইনিংসে জারমেইন ব্ল্যাকউড এবং দ্বিতীয় ইনিংসে কাইরন পাওয়েল ছাড়া কোন ব্যাটসম্যান সুবিধা করতে পারেননি ব্যাটিংয়ে। আর বোলিংয়ে ভাল করেছেন রোস্টন চেস। এ তিন ক্রিকেটারকে দৃষ্টান্ত হিসেবে নিয়ে ভাল কিছু করার অনুপ্রেরণা পেতে পারে ক্যারিবীয়রা।
×