ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গড়তে তরুণদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন’

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১৩ আগস্ট ২০১৭

বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষ দেশ  গড়তে তরুণদের  অনুপ্রাণিত করেছিলেন’

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র’ এর উদ্যোগে খুলনা মহানগরীর বিএমএ ভবনের কাজী আজহারুল হক মিলনায়তনে দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু : নতুন প্রজন্মের ভাবনা’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। স্বাগত বক্তব্য রাখেনÑ ট্রাস্টি সম্পাদক ডাঃ শেখ বাহারুল আলম এবং সূচনা বক্তব্য রাখবেন অধ্যাপক মোঃ মাহবুবর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন যদি আমরা গ্রহণ না করি, তা যদি আমাদের অনুপ্রাণিত না করে তা হলে শোক দিবসের অনুষ্ঠান যান্ত্রিকতায় পরিণত হবে। বঙ্গবন্ধু তরুণদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য। আজ আমাদের সেই দর্শনে অনুপ্রাণিত হয়ে অসাম্প্রদায়িক সমাজ ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা ও আধুনিকতা সমার্থক। দেশ যতই অথনৈতিকভাবে উন্নত হোক, ধর্ম সহিষ্ণু না হলে রাষ্ট্র, সমাজ আধুনিক হবে না। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। উদ্বোধনী অধিবেশনের পর সেমিনারে প্রথম অধিবেশনে ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোঃ মাহবুবর রহমান। প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আশফাক হোসেন। এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। বিকেলে দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘বঙ্গবন্ধু : নতুন প্রজন্মের ভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক চৌধুরী শহীদ কাদের। আলোচক ছিলেনÑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল এবং কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোঃ মাহবুবর রহমান। প্রবন্ধে শিক্ষা বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়। চৌধুরী শহীদ কাদের উল্লেখ করেন কিভাবে তরুণদের ভুল শেখানো হয়েছে এবং কিভাবে নতুন প্রজন্ম সেই মিথ্যা ইতিহাস পরিহার করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বাংলাদেশ সম্পর্কে জানছে। প্রবন্ধের ওপর আলোচনাকালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প-িত বিজ্ঞানীদের নিয়ে যে শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন তার লক্ষ্য ছিল শিক্ষাকে সামাজিক ও অগ্রগতির হাতিয়ার করা। আমরা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা থেকে অনেকটা সরে এসেছি। সাম্প্রতিককালে হেফাজত ইসলামের চাপে আমাদের পাঠ্যপুস্তকে যে পরিবর্তন করা হয়েছে তা জাতির জন্য ভয়াবহ অমঙ্গল ডেকে আনবে। তিনি বলেন, ইউরোপে নবজাগরণ হয়েছিল পাঠ্যপুস্তকে গ্রীক ক্লাসিক্যাল সাহিত্য অন্তর্ভুক্ত করার ফলে। অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, মুক্তিযুদ্ধকে জানতে হবে, একাত্তরের গণহত্যা সম্পর্কে জানতে হবে, একাত্তরের প্রতিরোধ ও সাহসকে জানতে হবে।
×