ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এবার শেবাচিমে চিকিৎসকদের আল্টিমেটাম

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৫ আগস্ট ২০১৭

এবার শেবাচিমে চিকিৎসকদের আল্টিমেটাম

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ বিক্ষোভের মুখে চিকিৎসকের ওপর হামলাকারী নার্সকে মুক্তি দেয়ার প্রতিবাদে এবার চিকিৎসকরা কর্মবিরতির হুমকি দিয়েছেন। শনিবার সকাল থেকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ব্যতীত সব বিভাগে কর্মবিরতি পালন করবেন বলে পরিচালককে মৌখিকভাবে আল্টিমেটাম দিয়েছেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার বেলা ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এসএম সিরাজুল ইসলাম। সূত্রমতে, এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অসুস্থ শিশুসন্তানের কথা বিবেচনা করে মুক্তি দেয়া হয় হামলাকারী নার্স এলিজা খানমকে। আটক নার্স এলিজার মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের ৭৭ জন ডিউটিরত নার্স এবং শিক্ষানবিস নার্সরা কর্মস্থলে যোগদান না করে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেন। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ডিপ্লোমা নার্সেস এ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি সেলিনা আক্তার বলেন, এলিজার সাত মাস বয়সের শিশু হাম রোগে আক্রান্ত। তার চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে শেবাচিমের শিশু বহিঃবিভাগের আবাসিক মেডিক্যাল আফিসার ডাঃ মোঃ ফাইজুল হক পনিরের কাছে গিয়ে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বলা হয়। এ সময় ওই চিকিৎসক সিরিয়াল ভঙ্গ করে নার্স এলিজার অসুস্থ শিশুসন্তানকে দেখবেন না বলে জানান। এ নিয়ে এলিজার স্বামীর সঙ্গে ওই চিকিৎসকের বাগ্বিত-ার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তিনি আরও জানান, ওই ঘটনায় চিকিৎসকদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ নার্স এলিজা, তার অসুস্থ শিশু ও স্বামীকে আটক করে। পরে বৃহস্পতিবার রাতে নার্সরা দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। একপর্যায়ে রাতেই স্টাফ নার্স এলিজাকে তার অসুস্থ শিশুসন্তানসহ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার ফরহাদ সরদার বলেন, যেহেতু অভিযোগ নার্সের স্বামীর বিরুদ্ধে। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে আটক নার্স এলিজাকে রাত এগারোটার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সূত্রমতে, নার্সদের বিক্ষোভের মুখে আটক নার্স এলিজাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন চিকিৎসকরা। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সকালে চিকিৎসকরা জরুরী সভা করে আজ (শনিবার) সকাল থেকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ব্যতীত সব বিভাগে কর্মবিরতি পালনসহ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার কর্মসূচী ঘোষণা করেছেন। মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ শিরিন সাবিহা তন্নি জানান, বিষয়টি তারা মৌখিকভাবে পরিচালক ডাঃ এসএম সিরাজুল ইসলামকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এসএম সিরাজুল ইসলাম জানান, এলিজার শিশুসন্তান অসুস্থ থাকায় মানবিক দৃষ্টিতে তাকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। তবে এলিজার স্বামীর বিরুদ্ধে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছি। চিকিৎসকদের আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা আমাকে শনিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন। আশা করি ওই দিন সকালে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টি সুরাহা করা হবে। অপরদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নার্সদের কর্মবিরতির ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাসপাতালের কয়েক হাজার রোগী।ওই সময়ের মধ্যেই গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তিরত রাহিমা বেগম নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়। তিনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের চাঁদকাঠি গ্রামের সোহাগের স্ত্রী।
×