মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ গণপরিবহনের যাত্রীদের নিরাপত্তা ও বিভিন্ন সড়কে পরিবহন চলাচল ব্যবস্থায় সুনিদিষ্ট নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিআরটি এর অনুমোদিত রুটে গাড়ি চলাচল নিশ্চিত করা। অভিযোগ রয়েছে, অনেক গাড়ি মালিক ও চালক নির্দিষ্ট রুট বাদ দিয়ে অতি মুনাফা আদায়ে অবৈধভাবে অন্য রুট গাড়ি চালানো শুরু করেছে। এ ধরনের অনিয়ম বন্ধে সিএমপির এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি। অপরদিকে, যেসব গাড়ি মালিক সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেÑ তাদের মধ্যেও কাজ করছে আতঙ্ক। অভিযোগ রয়েছে, কিছু গাড়ির মালিক পরিবহনের বডি বা বেয়নেটের নিচে থাকা খোদাইকৃত ইঞ্জিন নাম্বার ও চেসিস নাম্বার পরিবর্তন করে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন।
এ ক্ষেত্রে গাড়ির মালিকানা নিশ্চিত করতে ও চোরাই গাড়ির ব্যবহার পরিহার করতে এ ধরনের জরিপ করা। নগরীর রাস্তায় চলাচল করা বেশিরভাগ গাড়িই অবৈধভাবে ও জাল কাগজপত্র দিয়ে চলাচল করছে। বেশিরভাগ গাড়ি ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে গাড়ির রেজিস্টেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন ও ইন্স্যুরেন্স সার্টিফিকেট না নিয়েই রাস্তায় গাড়ি নামাচ্ছে। এতে গাড়ি মালিক সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে আয় বাড়াচ্ছে।
ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ পশ্চিমের দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই সিএমপির সভাকক্ষে এ বিষয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির পক্ষ থেকে সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় চলাচলের জন্য রুট পারমিটধারী গণপরিবহন নিশ্চিত করা। এর মধ্যে রয়েছে বাস মিনিবাস, হিউম্যান হলার, অটো-টেম্পো।
আগামী ৫ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত রেলের পলোগ্রাউন্ড মাঠে ২০ দিনব্যাপী এ সংশ্লিষ্ট কমিটি কর্তৃক রুট জরিপ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। জরিপের উদ্দেশ্যে রুট পারমিটধারী যানবাহনগুলো নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন ও ইন্স্যুরেন্স সার্টিফিকেটসহ প্রত্যেক গাড়ির মালিকপক্ষকে সময়মতো হাজির হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে ট্রাফিক বিভাগ।
বিশেষ করে রুট পারমিট পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব গাড়িতে বিশেষ স্টিকার লাগানো হবে। ফলে পরীক্ষিত গাড়ি যেমন চিহ্নিত হবে তেমনি এক রুটের গাড়ি অন্য রুটে চলাচলের সুযোগ থাকবে না। আরও জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।
আগামী ৫ আগস্ট থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত বাস ও মিনিবাসের রুট পারমিট পরীক্ষা করা হবে। তবে ইপিজেড কেন্দ্রিক চলাচলরত বাস বা মিনিবাসের রুট পারমিট পরীক্ষা করা হবে আগামী ১০ আগস্ট। ১২ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত হিউম্যান হলার এবং ১৯ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত অটো-টেম্পোর রুট পারমিট পরীক্ষা করা হবে। বিআরটি এর হিসাব অনুযায়ী এ কার্যক্রমে ১ হাজার ৪শ’ বাস, ১ হাজার ৩১৪টি হিউম্যান হলার ও ২ হাজার ২৪৭টি অটো-টেম্পোর রুট পারমিটসহ গাড়ি পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র।