ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচারে ধর্মের ব্যবহার রোধেরও সুপারিশ ॥ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপ

সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সুশীল সমাজের পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১ আগস্ট ২০১৭

সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সুশীল সমাজের পরামর্শ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনকে জনগণের আস্থা অর্জনের পরামর্শ দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এছাড়া সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্য থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় ইসিকে কঠোর এবং যথাযথ ভূমিকা রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। এছাড়া সংলাপে ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী মোতায়েন, নির্বাচনী আয় নিরীক্ষায় স্বাধীন আইন তৈরি করা, ভোটারদের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতির দূর করার বিষয়ে সুশীল সমাজের নাগরিকরা একমত পোষণ করেছেন। এছাড়াও নির্বাচনী প্রচারে ধর্মের ব্যবহার রোধ, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনকে নিবন্ধন না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তবে ইসির সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে না পড়লেও আগামী নির্বাচনে সহায়ক সরকারের বিষয়েও আলোচনায় অবতারণা করা হয়েছে। এমনকি অনেককেই নির্বাচনকালে সংসদ বহাল না রেখে ভেঙ্গে দেয়ার বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা উল্লেখ করেছেন এ দুটি বিষয় যেহেতু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয় তাই নির্বাচনে আগে কমিশন যাতে সহায়ক সরকারের মতো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বিশেষ বিশেষ মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে রাখার কথাও বলেছেন। নির্বাচনকালে প্রশাসনকে কিভাবে নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করা হবে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন। তবে সংলাপে কয়েকজন নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনে বিরোধিতা করেছেন। এমনকী নির্বাচনকালে সংসদ না ভাঙ্গার পরামর্শ দেন তারা। তারা বলেন, সেনাবাহিনীর কাজ হলো দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা ফলে নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব দেয়া ঠিক হবে না। সোমবার আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পরিকল্পনার বিষয়ে সুশীল সমাজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেন নির্বাচন কমিশন। আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের ষষ্ঠতলার সম্মেলন কক্ষে বেলা ১১টা থেকে এই বৈঠক শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে এ পরামর্শ সভায় সুশীল সমাজের প্রায় ৩৫ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। যদিও ইসির পক্ষ থেকে ৫৯ জনকে এই আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে শারীরিক অসুস্থতা, দেশে অবস্থান না করা এবং ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অনেকেই এই বৈঠকে উপস্থিত হননি। তবে সিইসি জানান, ইসির বৈঠকে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের ৯৫ ভাগ আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসির করণীয় বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। একে অপরের দেয়া পরামর্শের ক্ষেত্রে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তবে দু’একটি বিষয়ে ভিন্নমত এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বলেন সুশীল সমাজের এই পরামর্শ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন আকার সরকার এবং রাজনৈতিক দলের কাছে পৌঁছানো হবে। যাতে করে রাজনৈতিক দলগুলো এই পরামর্শ অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করতে পারেন। তবে তিনি বলেন, সুশীল সমাজের এই মতামত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে। সবাই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গৃহীত পদক্ষেপেরে বিষয়ে একমত পোষণ করলেও নির্বাচন কমিশনের আইন এবং বিধি অনুযায়ী যেসব পরামর্শ এসেছে তা গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে জনগণের আস্থা অর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, জনগণেরে আস্থা অর্জনের অন্যতম একটি মাধ্যম হলো সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ বা আলোচনা করা। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক মনোযোগী ভূমিকা পালন করা হবে। তিনি উল্লেখ করেন, দায়িত্ব নেয়ার পর এখন পর্যন্ত যেসব নির্বাচন এই ইসির অধীনে সম্পন্ন হয়েছে সেসব নির্বাচন নিয়ে বড় কোন ধরনের অভিযোগ আসেনি। নির্বাচনের সময় যেখানেই অভিযোগ পাওয়া গেছে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন পরবর্তী সময়েও কেউ ইসিতে তাদের অভিযোগ নিয়ে আসেনি। ইসির সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। তাদের যে দৃঢ় এবং স্বাধীন ভূমিকা রয়েছে এটা জনমানুষের কাছে দৃশ্যমান হতে হবে। তিনি বলেন, সংলাপের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধির তাদের আলোচ্য বিষয়বস্তু সম্পর্কে একমত পোষণ করেছে ভিন্ন কিছু মতামত ছাড়া। বিশেষ করে তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছে সবাই। এর মধ্যে একটি হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের বেশকিছু আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন স্বাধীন আইন করার বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে প্রশাসন কিভাবে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে, প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে কমিশন কিভাবে কাজ করবে সে বিষয়ও আলোচনায় উঠে এসেছে। তফসিল ঘোষণার আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে কমিশনের করার কিছু নেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার এমন বক্তব্যকে কেউ ভালভাবে নেয়নি। কারণ কমিশনের এখন থেকেই অনেক কিছু করার রয়েছে। তিনি বলেন, আলোচনায় প্রায় সভায় ‘না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়েছে। নির্বাচনের কোন প্রার্থীকে পছন্দ না হলে যে কেউ না ভোটের মাধ্যমে তার মতামত জানাতে পারে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে। এ জন্য না ভোট ব্যবস্থাকে পুনঃপ্রবর্তন করা যেতে পারে। এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই আলোচনা সভায় বড় ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপশি সবাই নির্বাচনী প্রচারে ধর্মের ব্যবহার না করার ক্ষেত্রে একমত হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন তার পক্ষ থেকে নির্বাচনী ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা রক্ষায় নতুন আইন তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। আইনে কোন কোন উৎস থেকে অর্থ নেয়া যাবে তার স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে। এছাড়া তিনি বলেন, নাগারিক সমাজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের বন্ধু রাজনৈতিক দল নয়। তাদের বন্ধু হলো জনগণ গণমাধ্যম এবং আইন আদালত। বিষয়টি মাথায় রেখেই তাদের কাজ করতে হবে। সংলাপ থেকে বেরিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ব্যবহার, সংসদ ভেঙ্গে দেয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, আলোচনায় মূল ফোকাসটা দেয়া হয়েছেÑ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে। আমরা যেন সবার অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চাই। সহায়ক সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অনেকে বলেছে, তত্ত্বাধায়ক সরকার আনা হোক। আমরা বলছি, এটা আনা সম্ভব না, এটা ডেড ইস্যু। আর্মি নিয়ে আসার কথা বলা হচ্ছে। আমরা বলেছি, তাদের ম্যাজিস্ট্রেশিয়াল পাওয়ার দেয়া ঠিক হবে না। আর্মিকে ভোটে আনার দরকার নাই। পার্লামেন্টে ভেঙ্গে দেয়ার কথা তুলেছেন অনেকেই। আমি বলেছি, এটা ভেঙ্গে দেয়া যাবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান সাংবাদিকদের সংলাপের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বলেন, এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করা। অতীতে নির্বাচন কমিশন তার ক্ষমতা প্রয়োগে অনীহা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। নির্বাচন নিয়ে অনেক অভিযোগ আসলেও তারা একটিরও তদন্ত করেনি। নির্বাচন নিয়ে বর্তমানে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি কাজ করছে। আলোচনায় সবাই ভয়মুক্ত পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরামর্শ দিয়েছে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতপ্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এককভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না। কিন্ত সহায়ক সরকারের কথা বলা হচ্ছে এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে তিনি উল্লেখ করেন নির্বাচনকালে সরকারের যারাই থাকুক না কেন নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙ্গে দেয়া জরুরী। এটি ভেঙ্গে দেয়া না হলে নির্বাচনে সারাদেশে ৩০০টি ক্ষমতা বলয় তৈরি হবে। এছাড়া তিনি নির্বাচনের সময় সব মন্ত্রণালয়ের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার কথা বলেন নির্বাচন কমিশনকে। তিনি বলেন, রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ক্ষেত্রে কমিশনের নিজস্ব লোকও হতে পারে। আবার ইসির চিহ্নিত জেলা প্রশাসকও হতে পারে। এ কর্মকর্তা নিয়োগেও সক্রিয় থাকতে হবে। ইসির সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সুশীল সমাজের প্রতিনিধি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিপপের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ইসির কর্মকর্তা, কর্মচারীদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ দরকার। প্রশিক্ষণ থাকলে ৭৫ শতাংশ অনিয়ম দূর করা সম্ভব। কমিশনের ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিবন্ধী ও বেদে সম্প্রদায়ের চাহিদা ও বিশেষ প্রয়োজন মিটিয়ে নির্বাচনে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও তিনি নির্বাচনে প্রবাসী ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগের ওপর জোর দেন। বলেন, আমাদের প্রায় এক কোটি ভোটার দেশের বাইরে রয়েছে। কিন্ত নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকার তাদের রয়েছে। এই প্রায় এক কোটি ভোটারকে নির্বাচনের সময় ভোট দেয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন আহমেদ খান বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আগামী নির্বাচনে ইসিকে আস্থা এবং বিশ্বাসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, যেসব আইনে দুর্বলতা আছে সেগুলো আইন সংস্কার করা দরকার। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য তাদের কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। যারা অভিবাসী তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কমিশনকে উদ্যোগ নিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, নির্বাচনেকে অবাধ সুষ্ঠু করতে কমিশনের ভূমিকাই বেশি। এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব নেয়ার সময় থেকেই স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ মেরুদ-সম্পন্ন নির্বাচন কমিশনই কেবল সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে। একই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোন দলকে নিবন্ধন দেয়া যাবে না। মুসলিম লীগের নিবন্ধন কিভাবে দেয়া হলো তা খতিয়ে দেখার দরকার। তিনি মুসলীম লীগের নিবন্ধন বাতিল ছাড়া পানামা পেপার্সে যাদের নাম এসেছে তারা যেন নির্বাচনে অংশ না নিতে পারে সে বিষয়ে কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক তারেক শামসুর রহমান বলেন, আলোচনায় অনেকে সহায়ক সরকারের কথা বললেও আইনে সহায়ক সরকারের কিছু নেই। কিন্তু সহায়ক সরকারের মতো দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকালে সংসদ ভেঙ্গে না দিয়ে নির্বাচন করা হলে সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। প্রশাসকে ব্যাপকভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। দলীকরণ প্রশাসন নিয়ে নির্বাচন করতে হলে কমিশনকে বিশেষ বিশেষ মন্ত্রণালয় নিজের কর্তৃত্বে অধীনে আনতে হবে। সোমবার বেলা ১১টা থেকে শুরু হয় নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসির সংলাপ। তা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সুশীল সমাজের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন সুশীল সমাজের যারা সংলাপের অংশ নিয়েছে তারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। নির্বাচন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছে। কমিশনও তাদের এসব পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। তবে তিনি বলেন, সংলাপের আলোচ্য বিষয়বস্তু সম্পর্কে অধিকাংশই একমত পোষণ করেছেন। তবে ভিন্নমত কিছু এসেছে। তবে তিনি বলেন, প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের যে পরামর্শ এসেছে এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। এটা বাস্তবায়ন করা সহজ হবে না। তারপরও ইসি একটি প্রক্রিয়া গ্রহণ করবে। এছাড়া পানামা পেপার্সে যাদের নাম এসেছে তাদের সম্পর্কে ইসির কাছে স্পষ্ট কোন তথ্য নেই। নির্বাচনে কারা অংশগ্রহণ করতে পারবে আর কারা পারবে না তা আইনে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইন এবং বিধি অনুযায়ী প্রার্থীর হওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে তিনি বলেন, সহায়ক সরকার এবং সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার যে মত এসেছে তারা নিজেরাই আবার স্বীকার করেছে এটা ইসির বিষয় নয়। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সমাধান খোঁজার জন্য আলোচ্য বিষয়ের ওপর একটি প্রতিবেদন রাজনৈতিক দল এবং সরকারে কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে। রাজনৈতিক দল এসব পরামর্শ বিবেচনায় করে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করতে পারবে। সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- অজয় রায়, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদারসহ প্রায় ৩৫ জন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি।
×