লোনাজলে সয়লাব চকরিয়া

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ চকরিয়া সাহারবিল চোয়ারফাঁড়ি খালের ওপর নির্মিত স্লুইস গেট পরিচালনায় সরকারী নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনের অগোচরে গত দুই সপ্তাহ ধরে স্লুইচগেটটি খোলা রাখায় সামুদ্রিক জোয়ারের লবণ পানি অনায়াসে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এতে উপকূলীয় ছয় ইউনিয়নের অন্তত লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সাহারবিল, ঢেমুশিয়া, পশ্চিমবড় ভেওলা, কোনাখালী ও বিএমচর ইউনিয়নের কৃষকদের মধ্যে চাষাবাদ নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী জনসাধারণ ও ক্ষুব্ধ কৃষকরা অবিলম্বে চোয়ারফাঁড়ি স্লইচটি বন্ধ করতে এবং এটি পরিচালনায় একটি সমন্বিত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। চোয়ারফাঁড়ির ব্যবসায়ী সাইকুল ইসলাম ও কৃষক জামাল হোসেন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে স্লইচগেটটি আটকিয়ে ভেতরের অংশে থাকা মিঠাপানির সেচ সুবিধা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছে কৃষকরা। বর্ষাকালে বানের পানি আসলে গেটটি খুলে দিয়ে তা লোকালয় থেকে অপসারণ করা হয়। মূলত স্থাপনের পর থেকে স্লুইচগেটটি জোয়ার-ভাটার নিয়ন্ত্রক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পূর্ববড় ভেওলার কৃষক বাহাদুর আলম বলেন, স্লুইচগেটটি পরিচালনার ক্ষেত্রে বর্তমানে সরকারী কোন ধরনের নীতিমালা মানা হচ্ছে না। জোয়ারের সময় লবণ পানি উল্টো উজানে দিকে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে লবণ পানিতে সয়লাভ হয়ে আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছে। স্লুইচগেটটি খোলা থাকার কারণে বর্তমানে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে বেশিরভাগ জমি। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন, ওই এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি মাছ আহরণের জন্য পরিকল্পিতভাবে স্লুইচগেটটি খোলা রেখেছে। স্লুইচগেট খোলা থাকলে তারা সেখানে জাল বসিয়ে নিরাপদে মাছ ধরতে পারে। এভাবে কিছু ব্যক্তি লাভবান হলেও কৃষকদের সর্বনাশ হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, চিরিঙ্গা-বদরখালী সড়কের সাহারবিল চোয়ারফাঁড়ি স্লুইচগেটটি খোলা থাকায় জোয়ারের লবণ পানি ঢুকে বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, বন্যার কারণে একদিন আগে স্লুইচগেটটি খুলে দেয়া হয়। এখন লোকালয়ে জোয়ারে সামুদ্রিক পানি ঢুকে থাকলে অবশ্যই বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি বলেন, স্লুইচগেটটি রক্ষণাবেক্ষণে উপজেলা পরিষদের সভার সিদ্ধান্তের আলোকে অতি সহসা একটি কমিটিও গঠন করে দেয়া হবে।