ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পটিয়ায় বাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দী ১০ হাজার মানুষ

প্রকাশিত: ০৪:০১, ২৪ জুলাই ২০১৭

পটিয়ায় বাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দী ১০ হাজার মানুষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া, চট্টগ্রাম, ২৩ জুলাই ॥ পটিয়ার শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পুনরায় উপজেলার ভাটিখাইন, ছনহরা ইউনিয়নের অনন্ত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। শনিবার রাত ও রবিবার দিনে একটানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মূলত পটিয়া বাইপাস সড়কের ঠিকাদারের অবহেলার কারণে ভাটিখাইন স্ট্রিলের ব্রিজের পশ্চিম পাশে তৃতীয় দফায় শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেড়িবাঁধের আশপাশের সহস্রাধিক পরিবার বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। সরেজমিন দেখা গেছে, ঠিকাদারের অবহেলায় পটিয়ার ইন্দ্রপুল-গিরিজ চৌধুরী বাজার বাইপাস সড়কে ভাটিখাইন স্ট্রিল ব্রিজের পশ্চিমে শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তৃতীয় দফায় ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর আগে ভাটিখাইন ইউনিয়নের ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের প্রায় অর্ধশতাধিক মাটির ঘর ভেঙ্গে পড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান পটিয়ার এমপি সামশুল হক চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিম নবী, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন।ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী, নগদ অর্থ ও ঢেউটিন বিতরণ করেন তারা। এখনও ভাটিখাইন-ছনহরা গ্রামের বহু পরিবার নিজ ভিটেবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছে। ভাটিখাইন ইউনিয়নের বাসিন্দা এ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম জানিয়েছেন, ঠিকাদারের অবহেলায় বাইপাস সড়কের শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তৃতীয় দফায় ভাটিখাইন ও ছনহরা গ্রামের কৃষক ও মৎস্যচাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভাটিখাইন এলাকায় যেসব মাটির ঘর ভেঙ্গে গিয়েছিল বর্তমানে ওই সব পরিবারের সদস্যরা ভাড়া বাসা কিংবা অন্যের বাড়িতে রাতযাপন করছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বাইপাস সড়কের ঠিকাদার শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ কাটার কারণে তৃতীয় দফার বৃষ্টিতে এ ক্ষতি হয়েছে। এলাকার স্বার্থে তিনি জেলা প্রশাসকসহ সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। চৌহালীতে যমুনার তীর রক্ষা বাঁধে ফের ধস স্টাফ রিপোর্টার সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, করালগ্রাসী যমুনার ছোবলে চৌহালী উপজেলা সদর রক্ষা বাঁধ এখন একটি বিধ্বস্ত স্থাপনায় রূপ নিয়েছে। পানির প্রচ- স্রোতে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে রবিবার ভোরে বাঁধের খাসকাউলিয়া পশ্চিম পাশের এলাকার ২০ মিটার ধসে গেছে। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ কিলোমিটারজুড়ে নির্মিত এ বাঁধ প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ধস নামছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে দশ দফায় ধস নেমেছে। গত এ সপ্তাহের ব্যবধানে চার বার ধস নেমেছে। প্রমত্তা যমুনা পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় সাধারণত ভাঙ্গন প্রবণতা বাড়ে। বর্ষা মৌসুমে যমুনার পানি কমতে থাকায় নদীতে প্রচ- স্রোতে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে রবিবার ভোরে বাঁধের খাসকাউলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পশ্চিম পাশের এ এলাকার ২০ মিটার হঠাৎ ধসে পাথরের সিসি ব্লকের পাড় ভেঙ্গে যায়। এলাকাজুড়ে দেখা দেয় আতঙ্ক। যেখানে নদীর তীর রক্ষায় বাঁধটি বারবার যমুনার কাছে পরাস্ত হচ্ছে। নির্মাণে ক্রুটি না অন্য কোন কারণ তা করিয়ে দেখা দরকার বরে এলাকাবাসী দাবি করেছে। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চৌহালী উপজেলা সদরের পৌনে ৪ কিলোমিটার এবং টাঙ্গাইলের সোয়া ৩ কিলোমিটার মিলে ৭ কিলোমিটার এলাকা রক্ষায় এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক ১০৯ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়। নদীর পূর্ব পাড়ের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সরাতৈল থেকে দক্ষিণে নাগরপুর উপজেলার পুকুরিয়া, শাহজানীর খগেনের ঘাট, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ঘোরজানের চেকির মোড়, আজিমুদ্দি মোড়, খাসকাউলিয়া, জোতপাড়া পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার বাঁধ ২০১৫ সালের ২৪ নবেম্বর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্পের প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহজাহান সিরাজ জানান। তিনি জানান, ধসে যাওয়া বাঁধের সব এলাকা নতুন করে সংস্কার করা হবে। এতে আতঙ্কের কিছু নেই।
×