ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বড় ইনিংস খেলার প্রাত্যাশা সাব্বিরের

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২১ জুলাই ২০১৭

বড় ইনিংস খেলার প্রাত্যাশা সাব্বিরের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বড় ইনিংস বলতে যা বোঝায় সাব্বির রহমান রুম্মন এখনও তা খেলতে পারেননি। ৬ টেস্টে বড় ইনিংস বলতে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬৪ রান, ৪৩ ওয়ানডেতে বড় ইনিংস বলতে সর্বোচ্চ ৬৫ রান, ৩১ টি২০তে বড় ইনিংস বলতে সর্বোচ্চ ৮০ রান করেছেন। সাব্বির আরও বড় ইনিংস খেলতে চান। সেই ইনিংসের অপেক্ষাতেই আছেন তিনি। টেস্টে যে ইনিংস খেলেছেন তা কোনভাবেই বড় ইনিংসের কাতারে পড়ে না। ম্যাচও খেলেছেন কম। ব্যাটও করেছেন শুরুতে ৭, ৮ নম্বর পজিশনে। শেষে গিয়ে ৪, ৫ নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করেছেন। গত বছর অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেক হয় সাব্বিরের। প্রথম ম্যাচেই অপরাজিত ৬৪ রান করে নজর কেড়েছেন। এরপর চলতি বছর জানুয়ারিতে যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটন টেস্টে টানা দুই ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করেছেন, সাব্বিরকে যেন টেস্টে আরও পোক্ত করেছে। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে দুই ইনিংসেই ৪২ ও ৪১ রান করেছেন। তবে এবার চার ও পাঁচ নম্বরে নেমে এই রান করেছেন। টেস্টে যেটুকু সুযোগ পেয়েছেন তা কাজে লাগিয়েছেন বলা চলে। ৬ টেস্টের ১২ ইনিংসে ৩৩.০০ গড়ে ৩৩০ রান করেছেন। ওয়ানডেতে ৪৩ ম্যাচে ২৬.৭৬ গড়ে ৯১০ রান করেছেন সাব্বির। ৪৩ ম্যাচের মধ্যে আবার ৩৮ ম্যাচে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছেন। শুরুতে শেষের দিকে ব্যাটিং করতেন। তাই সব ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পাননি। পেলেও শেষেরদিকে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করতে হয় বিধায় সুযোগগুলো কাজেও লাগানো যায়নি। তবে প্রথম ম্যাচেই ২০১৪ সালে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে যে ২৫ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংস খেলেছেন, মারমুখী ব্যাটসম্যানের খেতাব পেয়ে যান। এরপর সাব্বিরের কাছ থেকে সবাই সেইরকম ব্যাটিংই প্রত্যাশা করে। সাব্বিরও তা উপহার দিতে থাকেন। যতটুকু সুযোগ পান তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করে যান। সাব্বিরের কাছ থেকে আরও বড় ইনিংস প্রত্যাশায় ২০১৬ সালে সাব্বিরকে তিন নম্বরে খেলানোর সিদ্ধান্ত হয়। সাব্বিরও ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে থাকেন। এই সময়ে তিনটি ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করেন সাব্বির। সর্বোচ্চ ৬৫ রানের ইনিংসও এই তিন নম্বরে নেমেই। দুইবার এমন ইনিংস খেলেন সাব্বির। কিন্তু বর্তমান সময়ে যেন একটু ঝিমিয়ে পড়েছেন তিনি। সর্বশেষ ৯ ওয়ানডেতে একটি মাত্র হাফসেঞ্চুরি করেছেন সাব্বির। একটিতে ৬৫ রানের ইনিংস আছে। বাকি আট ম্যাচের কোনটিতেই হাফসেঞ্চুরি নেই। এমনকি ৩০ রানের ওপরে ইনিংস মাত্র একটি ম্যাচে রয়েছে। টি২০তে সাব্বির খুব কার্যকর মনে করা হয়। কারণ তা ধুন্ধুমার ব্যাটিং। ৩১ টি২০ ম্যাচ খেলে ২৮.৮৪ গড়ে ৭২১ রানও করেছেন সাব্বির। সর্বপ্রথম তার টি২০ দিয়েই জাতীয় দলে অভিষেক হয়। সাব্বিরও দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকেন। কিন্তু এই টি২০তেও সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে নেই কোন হাফসেঞ্চুরি। এমন অবস্থায় যে কোন ব্যাটসম্যানেরই চিন্তিত হওয়ার কথা। জাতীয় দলে পারফর্ম না করলে যে টিকে থাকা কঠিন। যে ক্রিকেটারই হন পারফর্ম করেই জাতীয় দলে জায়গা ধরে রাখতে হবে। সেখানে সাব্বিরতো আছেন যেন হুমকির মুখেই। আর কয়েকটা ম্যাচ খারাপ খেললেইতো ‘চলে না’ রব উঠে যাবে। তখন আরও চিন্তায় পড়ে যাবেন সাব্বির। তাতে করে খেলাটা আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে। নাসিরের বেলাতেও তো তাই হয়েছে। যদিও এখন নাসির লীগগুলোতে অনেক ভাল খেলছেন। কিন্তু যতই ভাল খেলুক নাসির, এখন জাতীয় দলে আগের পজিশন ফিরে পাওয়া যে কতটা কষ্টের তা নাসিরই ভাল বোঝেন। সাব্বির যদি আর কয়েকটা ম্যাচ খারাপ করতে থাকেন তাহলে তার পরিণতিও তো তেমনই হতে পারে। তাই সাব্বির মরিয়া হয়ে আছেন যেভাবে হোক একটা বড় ইনিংস খেলতে হবে। সাব্বিরই বলেছেন, ‘আমি আসলে খুব মরিয়া একটা ম্যাচ খেলার জন্য। কারণ আমি শেষ তিন চার ম্যাচ ভাল খেলতে পারিনি। ওই স্মৃতি এখনও হয়তোবা ভেতরে খোঁচা দেয় আমাকে যে রান করতে পারিনি। হয়তোবা খারাপ লাগছে বা মন খারাপ। সামনে যে সিরিজই হোক না কেন টি২০ হোক বা ওয়ানডে, টেস্ট ওইখানে যদি আমি ভালো খেলতে পারি তাহলে আমি ওই স্মৃতি গুলো ভুলতে পারবো। আমি চেষ্টা করছি যে ভালো সিরিজ খেলার জন্য, সেজন্যই নিজে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ যে কোন একটি ম্যাচ ভাল খেলতে মরিয়া সাব্বির। একটি বড় ইনিংস খেলতে চান।
×