ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশে টাকা পাচার করে জনগণের ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৩ জুলাই ২০১৭

বিদেশে টাকা পাচার করে জনগণের ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদেশে টাকা পাচার করে দেশের মানুষের ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন আজকে যে শিশুটি জন্মগ্রহণ করেছে তাকেও ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, জুন ক্লোজিংয়ের নামে সারাদেশে দুর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে আর্থিক খাতগুলো ধ্বংস করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা সারাদেশে ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারী বরাদ্দ আত্মসাত করছেন। জুনে সারাদেশে জেলা-উপজেলায় ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা লুটপাটের মহোৎসবের খবর গণমাধ্যমে এখন প্রধান শিরোনাম। মসজিদ-মন্দিরের নামে ভুয়া কমিটি তৈরি করে অথবা নামসর্বস্ব ধর্মীয় ও সামাজিক ক্লাব-সংগঠন দেখিয়ে সরকারী বরাদ্দ নিজেদের পকেটে ঢুকাচ্ছেন ক্ষমতাসীনরা। রিজভী বলেন, লুটপাটের ঘটনা দেশের সর্বত্রই বিরাজমান। লুটপাটের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করে পুরো দেশটাকে ধ্বংস করেও তাদের ক্ষুধা মিটছে না। এখন তাদের থাবা সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকেও। বিভিন্ন ধরনের অবিচার অনাচারের নৈরাজ্যময় পরিস্থিতিতে দেশবাসী এখন বিপর্যস্ত। কিন্তু প্রতিবাদ করলেই মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের আঁতে ঘা লাগে। কারণ তাদের প্রচারিত কথা মিথ্যা হলেও সবাইকে তা বিশ্বাস করতে হবে। গায়ের জোরে তারা মিথ্যাকে সত্য বলে জনগণের ওপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ব্যাংক-বীমাসহ সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান গিলে ফেলে সরকারী দলের লোকেরা এখন সব জায়গায় হাত দিচ্ছে। মৌলভীবাজারে কুলাউড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মোট ৬৭ কোটি ৬৫ হাজার ৪ শত ৫৮ টাকা বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে বরমচাল ইউনিয়নের আটটি প্রকল্পে মোট ৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। লালমনিরহাটে চলতি অর্থবছর শেষে টিআর-কাবিখা প্রকল্পে ১০ কোটি টাকা লোপাট করা হয়। নতুন অর্থবছরের বাজেটকে গরিব মারার বাজেট আখ্যায়িত করে রিজভী বলেন, ঋণের বোঝা নিয়ে নতুন অর্থবছর শুরু হয়েছে। আজকে যে শিশুটি জন্মগ্রহণ করবে, তার মাথায়ও ঋণের বোঝা পড়বে ৪৬ হাজার ১৭৭ টাকা। বছরে বছরে এই ঋণের বোঝা শুধু বাড়ছেই। সরকার দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। রিজভী বলেন, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের ক্রোধকে প্রশমিত করার জন্য সরস মিথ্যার বাতাস বইয়ে দেয়ার টেকনিক গ্রহণ করেছেন বর্তমান সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা। সত্যের লেশ তারা সহ্য করেন না। কিছু নেতা আছেন যারা মন্ত্রীত্ব হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এদের দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। সরকার এবার চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বিশাল বাজেট সংসদে পাস করেছে। বাজেট পাসের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তারা দেশকে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে নিজের পায়ে দাঁড় করিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। কিন্তু বিশাল ঘাটতির এই বাজেট পুরোটাই ঋণনির্ভর। এই ঋণ প্রতিবছর বাড়ছে। ফলে জনগণের ওপর ঋণের বোঝাও বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী সংসদে আরও বলেছেন, তার সরকার বিদেশীদের কাছ থেকে কোন ঋণ নিচ্ছে না। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের শেষে দেশী-বিদেশী মিলিয়ে রাষ্ট্রের ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা।
×