ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

৩৫তম বিসিএসে উত্তীর্ণ আরও ১৩৯ জনকে প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ১৯ জুন ২০১৭

৩৫তম বিসিএসে উত্তীর্ণ আরও ১৩৯ জনকে প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৩৫ বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েও যারা ক্যাডার পদ পাননি, তাদের মধ্য থেকে আরও ১৩৯ জনকে প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা অনুযায়ী মেধাক্রম ও বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির ভিত্তিতে রবিবার তাদের নিয়োগের এ সুপারিশ করেছে সরকারী কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার ৩৮তম বিসিএস নিয়ে বৈঠকে বসছে কমিশন। এ বৈঠকের পরই ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। ৩৮তম বিসিএসে কার্যকর হতে যাচ্ছে বেশকিছু নতুন উদ্যোগ। রবিবার নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, ১৩৯ জনকে প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডারের বিভিন্ন পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছি আমরা। এর আগে প্রথম দফায় ৩৯৮ জনকে এবং পরে আরেক দফায় ১৬০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। এ নিয়ে মোট ৬৯৭ জনকে প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হলো। এবারের সুপারিশ করা প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেয়েছেন। এ সংখ্যা ৬০ জন। এছাড়া ৩৪ জন সাবরেজিস্ট্রার, ১০ জন সহকারী মহাপরিদর্শকসহ বাকিদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পাসপোর্ট অধিদফতরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। জানা গেছে. ঈদের ছুটির পর দ্বিতীয় শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করতে পারে পিএসসি। এর আগে ৩৫তম বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাঁচ হাজার ৫১৭ জন যোগ্য বিবেচিত হলেও তাদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাডারে ২ হাজার ১৫৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। উত্তীর্ণ হয়েও যারা ক্যাডায় পাননি, তাদের মধ্যে যারা প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে যোগ দিতে আগ্রহী, তাদের কাছে আবেদন চায় কমিশন। তাতে দুই হাজার ৬০০ জন আবেদন করেন। গত ২৮তম বিসিএস থেকে এভাবে প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দিয়ে আসছিল সরকার। এক বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর আরেকটি বিসিএসে উত্তীর্ণদের নিয়োগের আগ পর্যন্ত আগের বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ১৭ জুন নন-ক্যাডার নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা ২০১০ সংশোধন করে বিসিএস উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়। এদিকে ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি আসছে চলতি সপ্তাহেই। আগামীকাল এ পরীক্ষার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক। তিনি জানান, এ বৈঠকেই বিজ্ঞপ্তিসহ এ সংক্রান্ত সব বিষয় চূড়ান্ত হবে। জানা গেছে, এ পরীক্ষা থেকেই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিষয়াবলীর ২০০ নম্বরের মধ্যে থাকছে ৫০ নম্বরের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রশ্ন। এছাড়া জতীয় পরিচিতি নম্বর (এনআইডি) ছাড়া কেউ বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। ৩৮তম বিসিএস থেকেই এ নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। সরকারের প্রায় প্রতিটি কাজে এনআইডি নম্বর দরকার হলেও এতদিন বিসিএস পরীক্ষার আবেদনে তা প্রয়োগ করা হয়নি। এ নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন বিভিন্ন সময়। যেহেতু পরীক্ষার্থীরা প্রত্যেকেই ১৮ বছরের ওপরে এমনকি অধিকাংশই ২২ বছরেও ওপরে, সেখানে এনআইডি নম্বর ছাড়াই চলছিল বিসিএসের আবেদন প্রক্রিয়া। তবে এবার সরকারের অন্যান্য কাজের মতো বিসিএসেও লাগবে এনআইডি। কমিশনের চেয়ারম্যান বলছিলেন, ৩৮তম বিসিএসের অনলাইনে আবেদন করতে বাধ্যতামূলকভাবে এনআইডি নম্বর লাগবে। একটা সিম কিনতে যদি এনআইডি লাগে, ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট করতে যদি এনআইডি লাগে, তো বিসিএস পরীক্ষা দিতে কেন আইডি নম্বর চাইব না? এতদিন যে এটা হয়নি এটাই তো বরং ভাল না। কারও এনআইডি না থাকলে কী হবে- এমন প্রশ্নে ড. সাদিক বলেন, তাহলে আমি তার পরীক্ষা নিতে পারছি না। যার আইডি নেই, আইডি সম্পর্কে যার সন্দেহ থাকবে, এটা তো একটা সমস্যা। আর ১৮ বছরের নিচের কেউ তো পরীক্ষা দিচ্ছে না। ফর্মে শুধু নাম আর ছবি লাগিয়ে আবেদন করা হয়। কেউ যদি ছবি বদলে ফেলে আপনি তো তাকে চিনতে পারবেন না। এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন, যদি এনআইডি না থাকে? এক্ষেত্রে আমার কথা হলো, কেন থাকবে না? যদি কোন বিশেষ কারণে দু’-একজনের এমন ঘটনা ঘটে থাকে তবে সেক্ষেত্রে তারা আবেদন করলে আমরা বসে বিবেচনা করতে পারি। অলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তাদের বিষয়ে। তবে এনআইডি নম্বর নিয়ে আবেদন করতে হবে এটাই নিয়ম, এটাই এখন থেকে কার্যকর হবে। চেয়ারম্যান আরও জানান, দুই হাজার এক শ’ পদে নিয়োগ দিতে ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এ বিসিএস থেকেই পরীক্ষার্থীরা বাংলা ও ইংরেজীর যে কোন মাধ্যমে উত্তর দেয়ার সুযোগ পাবেন। এছাড়া প্রথমবারের মতো খাতা ‘ডাবল চেকিং’ হবে। উল্লেখ্য, এর আগে পিএসসি চেয়ারম্যানের উদ্যোগ ছাড়াও রাষ্ট্রপতি খাতার সঠিক মূল্যায়নের জন্য দু’বার মূল্যায়নের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
×