ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্বেতার সাহায্যার্থে ‘হাঁড়ি ফাটিবে’ নাটকের মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১৭ জুন ২০১৭

শ্বেতার সাহায্যার্থে ‘হাঁড়ি ফাটিবে’ নাটকের মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তরুণ কবি শ্বেতা শতাব্দী এষ। শৈশব থেকেই দুরারোগ্য ব্যাধি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এই লেখক। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে নিরন্তর চলেছে তার সৃজনশীল লেখালেখি। স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বিপরীতে দূরবীণে’ শিরোনামের বই লিখে পেয়েছেন আয়েশা ফয়েজ সাহিত্য পুরস্কার। সম্প্রতি এই কবির থ্যালাসেমিয়ার সঙ্গে যকৃতের সমস্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৩০ লাখ টাকা। সেই অর্থ সংস্থানে কবি-সাহিত্যিকদের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। সেই সুবাদে শ্বেতার চিকিৎসা সহায়তায় মঞ্চস্থ হলো নাট্যদল এথিকের প্রযোজনা ‘হাঁড়ি ফাটিবে’। উৎপল দত্তের রচনা থেকে নির্মিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন অপু শহীদ। শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে প্রযোজনাটির ২৭তম প্রদর্শনী হয়। নাটকের গল্পে আবির্ভূত হয় কালিকিংকর বাড়ুয্যে নামের এক আদর্শবাদী প্রতিভাবান লেখক। ভাষা ও সাহিত্যসেবার আদর্শে উজ্জীবিত এই যুবক। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে নিষ্পেষিত। সে সমাজের নানা ক্ষেত্রে ক্ষেত্রপতিদের অনেক অন্যায় ও অবৈধ কর্মকা-ের প্রত্যক্ষ সাক্ষী। সে দেখেছে বিখ্যাত এক সাহিত্যিক কিভাবে তার লেখা উপন্যাসগুলো নিজের নামে চালিয়ে জনপ্রিয় হয়েছে এবং জনপ্রিয়তার সুযোগে রমণীদের সঙ্গে গড়েছে অবৈধ সম্পর্ক। আরও দেখেছে কিভাবে এক পত্রিকার মালিক নেতাজী ফান্ডের নাম করে টাকা লোপাট করেছে এবং নিজের প্রয়োজনে স্ত্রীকে পর্যন্ত ব্যবহার করেছে। দেশবরেণ্য মন্ত্রীর দেশের প্রতিরক্ষার গোপন তথ্য মার্কিন দূতাবাসের হাতে তুলে দেয়ার তথ্যটিও তার জানা। শিশুদের জন্য আনা অনুদানের টাকা মেরে দেয়া এক সমাজসেবিকার জালিয়াতির ঘটনারও সাক্ষী সে। তার জানা আছে, কেমন করে মিল মালিক নিজের প্রয়োজনে নিষ্ঠুরভাবে মানুষ খুন করেছে। প্রতারণার মাধ্যমে সমাজে প্রতিষ্ঠিত এই সমাজপতিদের নগ্ন চরিত্র খুলে দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করে সেগুলো নিয়ে ব্যবচ্ছেদ নামের বই লিখে কিংকর। বইটি প্রকাশিত হওয়ার আগে সেসব সমাজপতিদের আমন্ত্রণ জানায় তার পোড়ো বাড়িতে। দাওয়াতপত্রটি এমনভাবে ছাপায় যাতে কৌতূহলী ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে সবাই আসতে বাধ্য হয়। এবার চলতে থাকে ইঁদুর-বিড়াল খেলা। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন এনামুল, ইমতিয়াজ আসাদ, মায়া, সুকর্ণ আহমেদ, এম আর হাসান, মনি কানচন, শ্রাবণ, কাজী প্যারিস, মিন্টু সরদার, প্রদীপ কুমার ও রাতুল। ঠা-ু রায়হানের আলোক পরিকল্পনায় মঞ্চ ও পোশাক পরিকল্পনা করেছেন আনিস আনন্দ। সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন অপু শহীদ। কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকী উদযাপন আগামী ২০ জুন জননী সাহসিকা কবি বেগম সুফিয়া কামালের জন্মদিন। কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা। সকালে সেগুন বাগিচার মেলা মিলনায়তনে এ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে কবি সুফিয়া কামালের বৈচিত্র্যময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন মেলার সহ-সভাপতি দিল মনোয়ারা মনু, মেলার প্রবীণ সদস্য মোঃ আমিনুর রশীদ, মেলার তরুণ সদস্য সৈয়দা কানিতা মাঈশা ও শিশু বক্তা ফারমিহা আহমেদ শ্রেষ্ঠা। সভাপতিত্ব করেন মেলার সহ-সভাপতি কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন। আলোচনা শেষে ত্রৈমাসিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ী ভাই-বোনদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। আলোচনা পর্ব শেষে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বে কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা পরিচালিত কথাবিতান, সুরবিতান ও নৃত্যবিতানের শিশু শিল্পীরা নৃত্য-গীতসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করে।
×