ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ধনবাড়ীতে কাজ না করে কাবিটা প্রকল্পের টাকা আত্মসাত

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ১৭ জুন ২০১৭

ধনবাড়ীতে কাজ না করে কাবিটা প্রকল্পের টাকা আত্মসাত

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১৬ জুন ॥ ধনবাড়ীতে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পে কোন কাজ না করে পুরো টাকাই আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প সভাপতির বিরুদ্ধে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা সাধারণ প্রথম পর্যায় প্রকল্পের আওতায় পাইস্কা ভাতকুড়া দেলোয়ারের দোকান হতে কবিরের ফার্ম ভায়া মুশুদ্দি জামতলা মোড় পর্যন্ত সড়কে মাটির কাজ করার জন্য দুই লাখ ১৮ হাজার ২৬৮ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। গত ৩১ মে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু উক্ত প্রকল্পের কাজ মঙ্গলবার পর্যন্ত শুরু না করলেও গত ৩০ মে প্রকল্প সভাপতি পাইস্কা ইউপি সদস্য মারুফ হাসান লিটন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের যোগসাজশে ভুয়া মাস্টাররোল প্রদানের মাধ্যমে প্রকল্পের পুরো টাকাই উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। এ ব্যাপারে পাইস্কা ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ বজলুর সহযোগী শামছুল হক জানান, চেয়ারম্যান সাহেব অসুস্থ থাকায় প্রকল্প সভাপতি মারুফ হাসান লিটন প্রকল্পের কাজ না করে সমস্ত টাকা আত্মসাত করেছেন। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান নিজেও ক্ষুব্ধ। পাইস্কা ইউপি সচিব আব্দুল বারী এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান। অভিযুক্ত প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য মারুফ হাসান লিটন কাজ না করে গত ৩০ মে’র মধ্যে প্রকল্পের সাকল্য টাকা উত্তোলনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, টাকা আমি একা খাইনি। পরিষদের সবার মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছে এবং এর একটি অংশ দু’দফায় (৪০ হাজার টাকা) চেয়ারম্যান আরিফ বজলুকে দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে টাকা ফেরত নিয়ে প্রকল্পের কাজ করে দেয়া হবে। ধনবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু তাহের বলেন, প্রকল্পের কাজ না করে সাকল্য টাকা উত্তোলন করলেও প্রকল্পের কাজ করানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাজ না করলেও কেন যাবতীয় বিল পরিশোধ করা হয়েছে- এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে ধনবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজীব আল-রানা বিষয়টি জানেন না বলে জানান। এ বিষয়ে ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আরা রিনি বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘাটাইলে কর্মসৃজন প্রকল্পে লুট নিজস্ব সংবাদদাতা টাঙ্গাইল থেকে জানান, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে কর্মসৃজন কর্মসূচীতে চলছে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি। আর এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। আবার কোন কোন ইউপি চেয়ারম্যান একঘেঁয়েমিপনা ও দুর্নীতির কারণে খোদ ইউপি সদস্যরাই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। কোন কোন চেয়ারম্যানের দুর্নীতির কারণে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ওই দুর্নীতির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে আপোসরফার মাধ্যমে অভিযোগ প্রত্যাহার করার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে। ঘাটাইলের দেওপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ কর্মসৃজনে ৪০ শ্রমিকের স্থলে ৫-৭ জনকে কাজ করতে দেখা যায়। এ রকম একটি প্রকল্প হচ্ছে কালিকাপুর বাছেদের দোকান থেকে দেওপাড়া বিট অফিস হয়ে বিট অফিসের দক্ষিণ পাশে পাকা রাস্তা পর্যন্ত পুনঃনির্মাণ। প্রকল্পের সভাপতি করা হয়েছে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মালেকাকে। কাগজ-কলমে তাকে সভাপতি রাখা হলেও সব কাজ চেয়ারম্যানের নাতি সোহান তালুকদার ও আনোয়ার হোসেনকে দিয়ে করানো হয়। ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার কামাল হোসেন জানান, চেয়ারম্যান কোন মেম্বারের সঙ্গে সমন্বয় না করে ইচ্ছামতো কাজ করে যাচ্ছেন। মেম্বার বেলায়েত হোসেন বলেন, তাকে একটি প্রকল্পের সভাপতি করা হলেও তার নামে টাকা উত্তোলন করে ৮৫ হাজার টাকা চেয়ারম্যান নিজেই নিয়ে নেন।
×