ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘কার্ডিফ ইজ স্পেশাল ফর বাংলাদেশ ক্রিকেট’

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১১ জুন ২০১৭

‘কার্ডিফ ইজ স্পেশাল ফর বাংলাদেশ ক্রিকেট’

স্পোর্টস রিপোর্টার, লন্ডন থেকে ॥ ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে জানান দিয়েছিল, আমরা আসছি। এবার কার্ডিফের সেই সোফিয়া গার্ডেনেই নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে আবারও ঐতিহাসিক জয় মিলেছে। সেই জয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সেঞ্চুরি করেন। তিনি হাল না ধরলে ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ হয়ত হেরেই যেত। মাহমুদুল্লাহ শেষ পর্যন্ত ১০৭ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ১০২ রান করে অপরাজিতও থাকেন। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। ম্যাচ শেষে বলেছেনও, ‘কার্ডিফ ইজ স্পেশাল ফর বাংলাদেশ ক্রিকেট।’ শুরুতেই সেঞ্চুরি নিয়ে মাশরাফি জানান, ‘খুব খুশি। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর অশেষ রহমত।’ শুরু থেকেই এ্যাটাকিং। এটা কি বল বুঝে না কি শুরু থেকেই ইনটেনশন ছিল কাউন্টার এ্যাটাক? মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘আমার ইনটেশন ছিল পজেটিভ থাকব। প্লে মাই শট। কারণ প্রথম ১০ ওভার খুব ভাল বল মুভমেন্ট করতেছিল। সুইং করতে ছিল। প্রথম ১০ ওভার খুব টাফ ছিল। ওদের সেরা দুই বোলার সাউদি ও বোল্ট খুব ভাল বোলিং করতেছিল। ভাল জায়গায় বল করছে। পরে আমি যখন গেছি। তখন অতোটা সুইং ছিল না। তো আমার চেষ্টা ছিল যে পজেটিভ থাকব। আমার জোনে বল পেলে মারব।’ জয়ের ব্যাপারে কী শুরুতে আত্মবিশ্বাস ছিল? মাহমুদুল্লাহ জানান, ‘জেতার কথা চিন্তা ছিল না। প্রথম চিন্তা করি শুধু ব্যাটিং করি। দেখা যাক। কোথায় গিয়ে দাঁড়াই আমরা। যখন আমরা আস্তে আস্তে ক্লোজ হচ্ছিলাম তখন সাকিবকে বললাম যে এখন আল্লাহর রহমতে সুযোগ আছে ছাড়া যাবে না যেভাবে হোক।’ সেই সময়টা কখন? মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘ওইটা যখন আমরা ১৩০/১৪০ রানে, তখন আমরা চিন্তা করছিলাম। তার আগ পর্যন্ত আমি আমার মতো, সাকিব সাকিবের মতো ব্যাটিং করছিল।’ জয়ের পর কেমন লাগছে? মাহমুদুল্লাহও খুব খুশি, ‘জয়ের পর অবশ্যই খুবই ভাল লাগছে। সবাই খুবই বুস্ট আপ। জয়টা খুবই ইম্পর্টেন্ট। আইসিসির মতো টুর্নামেন্টে এমন সিচুয়েশনগুলো ক্রিটিকাল ছিল ৩৩ রানে ৪ উইকেট। তবে আমার মনে হয় বোলাররা খুব ভাল জব করেছে। সাকিব ইকোনমি বোলিং করেছে। মোসাদ্দেক ৩ উইকেট পেয়েছে। ওই স্পেলটা খুবই ক্রুশিয়াল ছিল। রুবেল ডেথে দারুণ বল করেছে। তাসকিন আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। বোলাররা সবাই ভালমতো পুলব্যাক করেছে। না হলে টোটাল রানটা বেশি হয়ে যেত।’ বিশ্বকাপে চার নাম্বারে নেমে ২টা সেঞ্চুরি। এবার ছয় নাম্বারে সেঞ্চুরি। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে কোন কিছু বলার আছে? মাহমুদুল্লাহর কিছুই বলার নেই, ‘না আমার কোন কিছু বলার নেই।’ বিশ্বকাপে ২টা, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১টা সেঞ্চুরি। কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন? মাহমুদুল্লাহ সবগুলোকেই মূল্য দিয়েছেন, ‘আমার কাছে তিনটাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটার চেয়ে আরেকটা কম নয়।’ সকিবের সাথে ব্যাটিং করা আপনি সবসময় ফিল করেন? এ নিয়ে বলেন, ‘সবসময় ফিল করি। ওর সাথে ব্যাটিং করার সময় অতো কথাবার্তা হয় না। ও অর মতো। রিয়াদ ভাই ঠিক আছে। সাকিব ঠিক আছে। ব্যস অতোটুকুই ছিল।’ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও কী একইরকম ছিল? মাহমুদুল্লাহ হ্যাঁসূচক জবাবই দেন, ‘একই রকম ছিল। আমরা চুপচাপ ব্যাটিং করেছি।’ বল মুভ করার সময়ও? মাহমুদুল্লাহ জানান, ‘ওই রকমই ছিল। লাস্টের দিকে বোল্ট বল করতেছিল। রিভার্স করতেছিল। এই জিনিসগুলো নিয়ে কথা হচ্ছিল। এর বেশি কিছু নয়।’ এই ম্যাচের আগে ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়টা বারবার সামনে চলে আসছিল। আগে আশরাফুলের সেঞ্চুরি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আপনার সাকিবের সেঞ্চুরি। আগেও জয় ছিল ৫ উইকেটে। ব্যক্তিগতভাবে আপনার কাছে কতটা ফিলিংস তৈরি করেছিল? মাহমুদুল্øাহ জানান, ‘যখন খেলা শুরু করি তখন আমাদের কার্ডিফে একটা ঐতিহাসিক জয় ছিল। আরেকটা জয় ছিল। তো কার্ডিফ ইজ স্পেশাল ফর বাংলাদেশ ক্রিকেট।’ সাকিবের সেঞ্চুরিটা কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘আমার অবশ্যই খুবই ভাল লেগেছে। কারণ ওর যখন এক শ’ হয়েছে, আমার মনে হয় বেশি এক্সাইটেড ছিলাম। ওর চেয়ে। মনে-প্রাণে চেয়েছিলাম ওর এক শ’টা হোক। খুবই ভাল ব্যাটিং করেছে।’ শেষের দিকে সাকিব যখন মারছিল তখন আপনার কি সন্দেহ ছিল সেঞ্চুরি হওয়া নিয়ে? মাহমুদুল্লাহ চিন্তাহীন থাকার কথাই জানান, ‘ওটা নিয়ে চিন্তা করছিলাম না। আমার ভাগ্যে যদি থাকে এমনিতেই হত।’
×