ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এ অসমতা অন্যায্য

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ৮ জুন ২০১৭

এ অসমতা অন্যায্য

মানুষের বিবেক যেন দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তা না হলে- আমাদের দেশের অনেক স্থানেই নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিক নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হতো না। এটা অতীতে ছিল, বর্তমানেও বিদ্যমান। এটা স্পষ্টই মানবাধিকার লঙ্ঘন। একই জাতীয় চাকরি অর্থাৎ যেসব কর্মস্থলে কাজের ধরন একই সেখানে নারী ও পুরুষের সমান পারিশ্রমিক বা বেতন পাওয়ার আইনগত বৈধতা রয়েছে। তারপরও কেনই বা সমাজের অনেক স্থানে নারীদের পারিশ্রমিকের মানদ-ের দিক থেকে পিছিয়ে রাখা হয় তা বোধগম্য নয়। কেন নারীকে পুরুষের সমান কাজ করেও দিনের শেষে গুনতে হচ্ছে কম পারিশ্রমিক! কেন শুনতে হচ্ছে- ‘তুমি নারী তাই তোমার বেতন কম’? কেন নারীদের প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ? আমাদের সমাজে কিছু অসৎ মানুষের জন্য আজ নারীদের এ দুরবস্থা। এটাকে বিচারের নামে প্রহসন বললে ভুল হবে না। যেমনটি স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে আমাদের দেশের নিরীহ মানুষের উপর ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল পাক শাসকগোষ্ঠী। আমাদের সমাজে তথা দেশের সর্বত্রই যদি নারী-পুরুষের পারিশ্রমিক বা বেতনের বৈষম্য দূর করা না যায়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও নারীদের অন্তরে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। নারীরা হলো সংসারের তথা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। নারীদের ব্যতীত সংসার-সমাজ কল্পনাতীত। বৈঠা ছাড়া যেমন নৌকা তার সঠিক গন্তব্যে পৌঁছায় না, তেমনি নারীদের ব্যতীত সংসার, সমাজ ঠিকমতো চলতে পারে না। বন্যার পানিতে কলার ভেলা যেভাবে ভেসে বেড়ায়, তদ্রুপ যে সংসারে নারী নেই সে সংসারও সংকটাপন্ন। একজন নারী খুব ভোরে উঠে রান্নাসহ তার সংসারে স্বামী, ছেলে-মেয়েদের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে পরিবারের জন্য দু’মুঠো অন্ন জোগাড়ের আশায় কাজে বেরিয়ে পড়ে। সারাদিন রোদ্রতাপে কষ্ট করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিনের শেষে যখন পরিশ্রান্ত নারী মহাজনের কাছে পারিশ্রমিকের জন্য হাত বাড়ায় এবং মহাজন যদি নারীকে পুরুষের সমান কাজ করা সত্ত্বেও ন্যায্য পারিশ্রমিক না দেয়, তখন নারী-পুরুষের এমন বৈষম্য দেখে ওই পরিশ্রান্ত-শ্রমজীবী নারীর মনের অবস্থা কেমন বেদনার্ত হয়- তা একটু ভেবে দেখুন সমাজের বিবেকবান মানুষ! রামপুরা, ঢাকা থেকে
×