ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিইসির সঙ্গে হাইকমিশনারের সাক্ষাত

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য

প্রকাশিত: ০৫:১০, ৭ জুন ২০১৭

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য। ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার এ্যালিসন ব্লেক মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাত করে দেশটির অবস্থান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় যুক্তরাজ্য। অবশ্য সিইসিও বলেছেন, তারা আগামী নির্বাচন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে সকল দলের অংশগ্রহণমূলক ও দেশী-বিদেশী সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে চান। মঙ্গলবার ব্রিটিশ হাইকমিশনারের নেতৃত্বে চার সদেস্যর একটি প্রতিনিধি দল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসে। তাদের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা হয়। ব্রিটিশ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেনÑ ব্রিটিশ হাইকমিশনের রাজনৈতিক শাখার প্রধান এ্যাড্রিন জনস, রাজনৈতিক পরামর্শক এজাজুর রহমান ও ইউকে এইডের প্রতিনিধি আইসলিন বেকার। সাক্ষাতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষাত শেষে ব্রিটিশ হাইকমিশনার এ্যালিসন ব্লেক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কারও পক্ষ হয়ে আসিনি। আমরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার জন্য এসেছি। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিতকরণ এবং এ লক্ষ্যে যারা কাজ করছেন তাদের পক্ষে সমর্থন জানানোর জন্য আমরা এসেছি। সাক্ষাতে ইসি ঘোষিত রোডম্যাপ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান। সাক্ষাতের বিষয়ে ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, এটা সিইসির সঙ্গে তার প্রথম ও সৌজন্যমূলক সাক্ষাত। সিইসি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সিইসিও তাকে ইসিতে স্বাগত জানিয়েছেন। বৈঠকে উন্নয়ন সহযোগী ও পুরনো বন্ধু দেশ হিসেবে অনেক বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন সিইসি। সচিব জানান, সিইসির সঙ্গে আলোচনায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার আমাদের আগের কিছু নির্বাচনের নেতিবাচক দিক তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ না থাকার বিষয়টি তাদের আলোচনায় উঠে এসেছে। এছাড়া, দু-একটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সহিংসতার কথাও তারা জানিয়েছেন। জবাবে সিইসি তাদের বলেছেন, তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছেন। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন, কয়েকটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন কেবল দেশে নয়, সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। ইসি সচিব আবদুল্লাহ আরও জানান, হাইকমিশনার বলেছেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এভাবে অন্যসব নির্বাচন করতে পারলে ইসির গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। বৈঠকে তাদের মধ্যে রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেটাকে সামনে রেখেই এ রোডম্যাপ করা হয়েছে। সিইসি জানিয়েছেন রোডম্যাপের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এটি চলতি মাসেই চূড়ান্ত করা হবে এবং জুলাই থেকে রোডম্যাপ অনুসারে কাজ শুরু হবে। মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ইনক্লুসিভ ও পার্টিসিপেটরি নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছেন। আমাদের নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একই ধরনের। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, অংশগ্রহণমূলক হলে নির্বাচন পরিচালনা করতে সুবিধা হয়। আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও দেশী-বিদেশী সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে চাচ্ছি। ব্রিটিশ হাইকমিশনার নির্বাচনের বড় চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা বড় চ্যালেঞ্জ। সিইসি প্রত্যাশা করেছেন, জুলাই থেকে তারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করবেন। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তারা অনেকবার দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার দূরত্ব কমে আসবে এবং ইসির প্রতি তাদের আস্থা বাড়বে। আশা করি, সকল দল নির্বাচনে অংশ নেবে।
×