ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অপহরণ যেখানে প্রথা

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৫ জুন ২০১৭

অপহরণ যেখানে প্রথা

অপহরণ করে বিয়ে করা অনেক পুরনো দিনের একটি প্রথা পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে। দেশটিতে সাধারণত প্রতিশোধ নিতেই এক পরিবার আরেক পরিবারের মেয়েকে অপহরণ করে তাদের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেয়। দেশটি আয়তনে মাঝারি হলেও জনসংখ্যা খুব বেশি নয়। মাত্র দেড় কোটি মানুষ বাস করে দেশটিতে। দেখা যায়, অপহরণ করে বিয়ের মাধ্যমে কন্যাশিশুরা প্রতিপক্ষের প্রতিহিংসার শিকার হয়। গত বছর ১৫ বছরের ফাতামাতাকে যখন অপহরণ করা হয়, তখন প্রথমে নিজের প্রাণ নিয়ে বেশ শঙ্কিত ছিল সে। কিন্তু যখন সে বুঝতে পারে যে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বিয়ে করার জন্য, তখন নিজের ভবিষ্যত জীবন নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ফাতামাতা। সে জানায়, ‘আমি তখন খুব আতঙ্কে থাকতাম, সারাদিন কান্নাকাটি করতাম। আমি ওই লোকটাকে একেবারেই পছন্দ করতাম না। আর তার জোর করে বিয়ে করার বিষয়টি স্রেফ ঘৃণার ব্যাপার ছিল আমার কাছে।’ জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের মধ্যে যেসব দেশে বাল্যবিবাহের হার বেশি, সেগুলোর মধ্যে মালি অন্যতম। এই দেশটির প্রতি সাতজন শিশুর একজনের বিয়ে হয় ১৫ বছর বয়সের মধ্যে। মালিসহ গোটা পশ্চিম আফ্রিকাজুড়ে বাল্যবিবাহের হার অনেক বেশি। আর দক্ষিণ মালিতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে, অপহরণের পর বিয়ের প্রথা। স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তা ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার কর্মীরা বলছেন, এসব কন্যাশিশুকে জোর করে বিয়ের পর গৃহস্থালি কাজ করতে বাধ্য করা হয়। তাদের নিজেদের পরিবারে যেতে দেয়া হয় না। খুব কম মেয়েদেরই ছেড়ে দেয়া হয়। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, ওই সব লোক মূলত কন্যাশিশুদের অপহরণ করে, যাদের যৌতুক দেয়ার সামর্থ্য নেই। এছাড়া যেসব পুরুষের বিয়ে করতে সাধারণত কোন নারী রাজি হয় না, তারাও অপহরণকেই বেছে নেয়। আর এসব অপহরণের কোন হিসাবও রাখা হয় না। মাহৌ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সনৌ ডায়ারা বলেন, ‘অহরহই এক গ্রামের পুরুষরা আরেক গ্রামের মেয়েকে অপহরণ করছে। এর সঠিক কোন সংখ্যা অনুমান করাও সম্ভব নয়। কারণ, একে অপরাধ হিসেবে নয়, সামাজিক প্রথা হিসেবে দেখা হয়।’-অলআফ্রিকা ডটকম ।
×