ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রিটিশ গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে ভয়ানক ব্যাটসম্যান তামিম

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ৩১ মে ২০১৭

ব্রিটিশ গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে ভয়ানক ব্যাটসম্যান তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার বাংলাদেশ দলকে ঘিরেই যত আলোচনা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এমনকি শিরোপা জিতে যেতে পারে সেই সম্ভাবনাটাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। সেই আলোচনার হালে আরও পানি পেয়েছে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রায় সাড়ে তিন শ’ রান করার পর। সম্প্রতিই ত্রিদেশীয় সিরিজে আয়ারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে এখন বিশ্বের ৬ নম্বর দল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এখন বাংলাদেশ দল তাই ডার্ক হর্স। ১১ বছর পর আবার এই মর্যাদার টুর্নামেন্টে ফিরেছে টাইগাররা শক্তিধর দল হিসেবে বিবেচিত হয়েই। তাই এখন প্রতিপক্ষরাও সমীহ করছে মাশরাফি বিন মর্তুজাদের। এই মর্যাদাটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় প্রাপ্য বলেই মনে করেন ওপেনার তামিম ইকবাল। ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে বাংলাদেশ দল নিয়ে। তাদের দৃষ্টিতে ভয়ানক ব্যাটসম্যান হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে এ বাঁহাতি ওপেনারকে। সাম্প্রতিক সময়ে ফর্মের তুঙ্গে আছেন তামিম। তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একাধারে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০ ম্যাচে সর্বাধিক রান করার মাধ্যমে। এছাড়া একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে এই তিন ফরমেটেই তিনি শতক হাঁকানোর অবিস্মরণীয় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ওয়ানডে ও টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকানোর দিক থেকেও তিনি সবার ওপরে। এ কারণেই ব্রিটিশ গণমাধ্যমে তাকে ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান আখ্যা দিয়েছে। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণকারী ৮ দলের মধ্যে অন্যতম ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিপক্ষের জন্য কারা ভীতিকর হবে এমন একজন করে নিয়ে ৮ জনের তালিকা করেছে ডেইলি মেইল। আর সেখানে বাংলাদেশের তামিমও আছেন। বাংলাদেশ ও তামিম ইকবাল সম্পর্কে তাদের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘আমরা দেখছি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ অনেকটা উন্নতি করেছে এবং অবশ্যই তারা এই টুর্নামেন্টের জন্য হুমকি। তাদের বেশকিছু দারুণ স্পিনার আছে যারা যে কোন সময়ে খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তামিম ইকবাল একজন ভয়ঙ্কর টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান যিনি তার দিনে প্রতিপক্ষের যে কোন আক্রমণ ভেঙ্গে দিতে পারেন। প্রথম বল থেকেই তিনি ধ্বংসাত্মক মেজাজে শুরু করেন।’ ২০০৭ সালেও ৯ নম্বরে ছিল বাংলাদেশের অবস্থান। সেই ৯ থেকে এখন ৬ হয়ে গেছে অবস্থান। আর এই উত্থানের পেছনে তামিমের দারুণ ফর্ম বিশাল ভূমিকা রেখেছে। ২০০৯ ও ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে না পারা দলটি এবার ফিরে এসেছে এ আসরে। সমীহও আদায় করতে পারছে যে কোন প্রতিপক্ষের কাছ থেকে। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘এভাবেই এখন সবকিছু চলছে। যখন আপনার দল জিততে থাকবে, ভাল ক্রিকেট খেলবে তখন অবশ্যই মানুষজন সেটার দিকে মনোযোগী হবে এবং সম্মানও করবে। আমরা যে সম্মান পাচ্ছি সেটা এখন আমাদের প্রাপ্য। দল হিসেবে আমরা অনেক লম্বা সময় পার করে এসেছি। আমরা এক সময় ১০ নম্বরে ছিলাম। এখন ছয় নম্বরে। আমি আগেই বলেছি যে এটা এত সহজে আসেনি। আমাদের প্রচুর ম্যাচ পরাজয়ের হতাশার মধ্য দিয়ে আসতে হয়েছে, কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে এবং এর মধ্যে কঠিন সমালোচনাও শুনতে হয়েছে। কিন্তু গত দুই বছর অসাধারণ ছিল বাংলাদেশের জন্য। এ সময়টা বিবেচনায় আনলে সম্ভবত বিশ্বের সফলতম দল হিসেবেই আমাদের দেখতে পাবেন।’ ২০১৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের খেলা ৩৪ ম্যাচের জয়-হারের অনুপাত ১ : ৪৬ যা এশিয়ার অন্য দলগুলোর চেয়ে অনেক ভাল। কঠিন সময়গুলোতে কিভাবে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে চলতে হয় সেটাও শিখে গেছে বাংলাদেশ দল। সেটা বেশ কয়েকবার দেখাও গেছে। এবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লড়াই শুরু হবে টাইগারদের। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘আমরা সাফল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব করেছি তা ধরে রাখতে হবে এবং সেটার উন্নতিও করতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে সফল হওয়ার জন্য আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির চেয়েও অনেক উন্নতি করতে হবে এটা আমরা উপলব্ধি করছি। ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো ভাল দলগুলোকে হারানোর জন্য এটা জরুরী। আমরা আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল করেছি। কিন্তু এখন তারা নিজেদের ঘরের পরিবেশে খেলবে এবং তাদের বেশ কিছু মারাত্মক খেলোয়াড়ও আছে। আমরা যদি আগের ফলাফলের পুনরাবৃত্তি করতে চাই সেক্ষেত্রে প্রতিটি বিভাগে খেলার সময় আমাদের শীর্ষ অবস্থানে থাকতে হবে। কারণ ইংল্যান্ড অনেক শক্তিশালী দল।’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শীর্ষ অবস্থানে থাকা দলগুলোর বিপক্ষে জয় আসলে ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগটাকে আরও সুসংহত করবে। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা কোয়ালিফাই করার খুব কাছাকাছি আছি। আমরা এখন ছয় নম্বর দল। কিন্তু এ ধরনের টুর্নামেন্টে এ বিষয়গুলো ভাবা যায় না। জয়ের কথাই চিন্তা করতে হয়। আমরা জাতির জন্য বিশেষ কিছু করতে এই তিন ম্যাচে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
×