ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাইভেট না পড়ায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন ॥ প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ৩০ মে ২০১৭

প্রাইভেট না পড়ায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন ॥ প্রতিবাদে মানববন্ধন

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর, ২৯ মে ॥ ভেদরগঞ্জ উপজেলার দুলারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী ইংরেজী শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে রাজি না হওয়ায় ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ফুঁসে ওঠেছে এলাকাবাসী। এদিকে নির্যাতনের শিকার ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। এলাকাবাসী শিক্ষকের বিচার দাবিতে সোমবার মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। জেলা প্রশাসক বলছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক পরিতোষ শিকদারকে শোকজ করা হয়েছে। দুলারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া, দোলা, ইতি, জান্নাত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার দুলারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজী) পরিতোষ চন্দ্র শিকদার ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া সিদ্দিকাকে তার কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। সুমাইয়া সিদ্দিকা শিক্ষক পরিতোষ শিকদারের নিকট প্রাইভেট পড়তে অস্বীকার করায় ওই ছাত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। ২২ মে বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিষয়ে শিক্ষক পরিতোষ চন্দ্র শিকদার একটি গল্প পড়ানোর সময় সুমাইয়া সিদ্দিকা পড়া ভালভাবে বুঝতে পারিনি বললে শিক্ষক ওই ছাত্রীকে গালমন্দ করে এবং চোখ দুটো তুলে ফেলার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে শিক্ষক পরিতোষ ছাত্রীর মুখম-ল লক্ষ্য তার হাতে থাকা কলম দিয়ে আঘাত করলে সুমাইয়া সিদ্দিকা গুরুতর জখম হয়। সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। অভিভাবকদের অভিযোগ, পরিতোষ স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়লে নাম্বার কম দেয়। যারা প্রাইভেট পড়ে না তাদের পেটায়। মেয়েদের শরীরে হাত দিয়ে মাথায় মোচড় দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানায়, পরিতোষ স্যারের কাছে ক্লাসের চেয়ে প্রাইভেট বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে এ ঘটনায় সোমবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী শিক্ষক পরিতোষ চন্দ্র শিকদারের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধনকারীরা লম্পট শিক্ষক পরিতোষ চন্দ্র শিকদারের অনতি বিলম্বে অপসারণ ও শাস্তি দাবি করেন। এ ব্যাপারে নির্যাতিত ছাত্রী সুমাইয়া সিদ্দিকা বলেন, আমার অপরাধ আমি পরিতোষ স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে রাজি হইনি। সে কারণে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ক্লাসে কলম দিয়ে আঘাত করেছে এবং খারাপ ভাষায় গালাগাল করেছে। ওই শিক্ষক ওই স্কুলে থাকলে আমি আর ওই স্কুলে যাব না। আমি এ শিক্ষকের শাস্তি চাই। স্থানীয় মুক্তার হোসেন, মোয়াজ্জেম মিয়া, ইয়াসিন, আলামিন ও কাউসার মিয়া জানায়, ২০১১ সালে পরিতোষ স্যার এ স্কুলে যোগদান করার পর থেকেই নানা ধরনের অপকর্ম করে আসছে। মেয়েদের প্রতি তার আচরণ খুবই নেতিবাচক। আমরা তার বিচার চাই। অভিভাবক সাহিদা বেগম বলেন স্যার হয়ে এমন কা- কেমনে করে। আমরা তার বিচার চাই। সুমাইয়া সিদ্দিকার বাবা জাকারিয়া বলেন, এ ঘটনার আমি উপযুক্ত বিচার চাই। অভিযুক্ত শিক্ষক পরিতোষ চন্দ্র শিকদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে। আমি মেয়েকে কোন আঘাত করিনি। ধমক দিয়েছি। দুলারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসানুল বারি বলেন, আমি তাকে শোকজ করেছি। উপযুক্ত জবাব না পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×