ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চেলসির শিরোপা উৎসব

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৩ মে ২০১৭

চেলসির শিরোপা উৎসব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপাটা আরও আগেই নিজেদের করে নিয়েছিল চেলসি। বাকি ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। রবিবার সেই পর্বটাও সেরে নিল এ্যান্তনিও কন্টের দল। শেষটাও ঠিক চ্যাম্পিয়নের মতোই! নিজেদের মাঠ স্ট্যামফোর্ডব্রিজে মৌসুমের শেষ ম্যাচে সান্ডারল্যান্ডের মুখোমুখি হয় ব্লুজরা। এ্যান্তনিও কন্টের দল ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জিতে ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে। শুধু তাই নয়, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের প্রথম দল হিসেবে ৩৮ ম্যাচের ৩০টিতেই জয় পায় চেলসি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে এদিন একাই দুই গোল করেন মিচি বাটশুয়াই। এছাড়া উইলিয়ান, ইডেন হ্যাজার্ড এবং পেদ্রো প্রত্যেকেই একটি করে গোল করেন। তবে চেলসির উদযাপনটাকে শুরুতেই বিবর্ণ করে দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল সান্ডারল্যান্ডের জাভিয়ের মানকুইলোর গোল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হতে দেয়নি কন্টের শিষ্যরা। সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে মৌসুমের শেষ ম্যাচ জয়ের ফলে ৩৮ ম্যাচ থেকে চেলসির পয়েন্ট সংগ্রহ ৯৩। দ্বিতীয় স্থানে থাকা টটেনহ্যাম হটস্পারের দখলে ৮৬ পয়েন্ট। শেষ ম্যাচে তারা ৭-১ গোলে হারিয়েছে হাল সিটিকে। সুদীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনো শিরোপা ছাড়াই মৌসুম শেষ করতে হলো পেপ গার্ডিওলাকে। তবে শেষ ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটি ৫-০ গোলে হারিয়েছে ওয়াটফোর্ডকে। যার ফলে ৩৮ ম্যাচ থেকে ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে লীগ শেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের টিকেট নিশ্চিত করেছে। লিভারপুল ৩-০ গোলে হারিয়েছে মিডলসবোরোকে। যে কারণেই কপাল পুড়েছে আর্সেনালের। কেননা গানাররা ৩-১ গোলে এভারটনকে হারালেও শেষ চারে থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছে জার্গেন ক্লপের দল। চ্যাম্পিয়নস লীগে খেলা হয়েছে টানা ১৯ মৌসুম। কখনো তা জেতা হয়নি বটে, তবে ইউরোপের সবচেয়ে কুলীন আসরে আর্সেনালের খেলাটা অলিখিত একটা নিয়মই হয়ে গিয়েছিল। সেই ধারা এবার ভেঙ্গে গেল। চার নম্বর জায়গাটা নিয়েই চলছিল লড়াই। রবিবার নিজেদের মাঠে মিডলসবরোকে হারাতেই হতো লিভারপুলকে। নতুবা প্রার্থনা করতে হতো আর্সেনাল যেন এভারটনের সঙ্গে জিততে না পারে। ভাগ্যটা অন্যদের ওপর নির্ভর করতে দেয়নি লিভারপুল, মিডসলবরোকে ৩-০ গোলে হারিয়েই চারে থেকেছে। এই মৌসুমে পয়েন্ট তালিকার নিচের সারির ক্লাবের কাছে পয়েন্ট হারানোটা একরকম অভ্যাসই হয়ে গেছে তাদের। এদিনও শুরুতেই একটা হোঁচট খেতে পারত, ২২ মিনিটে নিজেদের বক্সে ফাউল করেও বেঁচে যান দেয়ান লভরেন। ওটা পেনাল্টি হতে পারত, এমনকি লভরেন লাল কার্ডও দেখতে পারতেন। কিন্তু কোনটাই হয়নি। শেষ পর্যন্ত ৪৫ মিনিটে জিওর্জিও ভিন্ডালামের দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় অলরেডরা। বিরতির পর বাকি কাজটুকুও নিশ্চিত করে ফেলেছে। ৫১ মিনিটে ফিলিপ কুটিনহোর ফ্রিকিক থেকে ব্যবধান বাড়িয়েছে। পাঁচ মিনিট পর এ্যাডাম লালানার গোলে নিশ্চিত হয়েছে জয়। আর্সেনাল দশজন নিয়েও এভারটনকে হারিয়েছে ৩-১ গোলে, সেটা সান্ত¡না ছাড়া আর কিছু হতে পারেনি। আর্সেন ওয়েঙ্গারের এই ‘দুঃসময়ে’ তার পাশে এসে দাঁড়ালেন সাবেক ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ স্যার এ্যালেক্স ফার্গুসন। তার মতে, ‘এই মুহূর্তে তার জন্য পরিস্থিতিটা বেশ জটিল। শুধু এটুকুই বলতে চাই, তাকে সরিয়ে দেয়ার কথা বলাটা খুব সহজ। কিন্তু তাকে সরিয়ে কাকে আনবেন? আগামী ২০ বছরের জন্য কে আপনার ক্লাবকে এভাবে ধরে রাখবে? গত কয়েক মাস ধরেই নানা সমালোচনা শুনতে হচ্ছে তাকে। আমার মনে হয় না তার মতো কোচ আর্সেনাল ভবিষ্যতে পাবে।’ ওয়েঙ্গারের সঙ্গে ভক্তদের এ রকম আচরণে ব্যথিত ফার্গুসন, ‘তার জন্য খুব খারাপ লাগছে। এত সমালোচনার মাঝেও তিনি অটল থেকেছেন। তিনি এই দীর্ঘ সময়ে দারুণভাবে সবকিছু সামলেছেন। অন্য কেউ এটা করতে পারত বলে মনে হয় না। কোচকে বরখাস্ত করলেই যে সাফল্য আসে এর কোন প্রমাণ নেই।’
×