ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘনিয়ে আসছে বোল্টের কান্নার বিদায়

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৮ মে ২০১৭

ঘনিয়ে আসছে বোল্টের কান্নার বিদায়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবসরে যাওয়ার আগে শেষ লড়াইয়ের পর তিনি কি কাঁদবেন? প্রকৃতপক্ষে কান্নার কোন কারণই নেই। তিনি বিশ্বের সম্রাট। গতির রাজা হিসেবে হয়ে গেছেন সর্বকালের সেরা। জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে ওঠা জ্যামাইকার স্প্রিন্ট মহাতারকা উসাইন বোল্টের বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসছে। ‘বিদ্যুৎ’ বোল্ট না কাঁদলেও বিশ্বের ক্রীড়ামোদীরা, তার কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থকরা অবশ্যই কাঁদবেন। কান্নার সে বিদায় আগামী আগস্টে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপস শেষে। ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডের পরাক্রমশালী সম্রাট পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে গতিধর মানব বোল্ট অবসরে যাবেন এরপরই। আগস্টে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপস আসর। গত অলিম্পিকের সময়ই বোল্ট জানিয়েছিলেন এ আসরটিই হবে তার ক্যারিয়ারের শেষ লড়াই। এরপর অবসরে যাবেন তিনি। তবে অবসরের আগে খুব বেশি প্রতিযোগিতায় অংশও নেবেন না। কিন্তু বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপসের প্রস্তুতি হিসেবে এখন বেশ কয়েকটি আসরে দেখা যাবে বোল্টকে। তিনি জানিয়েছেন সম্ভবত চারটি মিটে অংশ নেবেন। নিজ জন্মস্থান জ্যামাইকায় ক্যারিয়ারের সর্বশেষ মিটে আগামী ১০ জুন কিংস্টনে নামবেন তিনি। ২৮ জুন চেক প্রজাতন্ত্রের অস্ট্রাভায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মিটে নামবেন। লন্ডনকে নিজের দ্বিতীয় জন্মস্থান হিসেবে বিবেচনা করেন। আর সেখানেই ইতি টানবেন ক্যারিয়ারের। বোল্ট এখানে ৫ আগস্ট নামবেন ১০০ মিটারে এবং ১২ আগস্ট লড়বেন ৪ী১০০ মিটার রিলেতে। এ বিষয়ে বোল্ট বলেন, ‘আমি এ বিষয়টি নিয়ে অনেকবার ভেবেছি।’ কথাটি বলার সময় বোল্ট তাকে নিয়ে তৈরি গত বছরের মুভি ‘আই এ্যাম বোল্টে’র একটি দৃশ্য মনে করিয়ে দেন। ওই ছবিতে দেখা গেছে বোল্টকে অবসর ভাবনায় মশগুল থাকতে। অবসরের বিষয়ে বোল্ট আরও বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যেই খুব আবেগপ্রবণ হতে শুরু করেছি। এত বিশাল ভিড়ের সামনে এটাই আমার সর্বশেষ বৃহৎ কোন রেস হতে যাচ্ছে এটা ভেবে খুব দুঃখবোধ হচ্ছে। এটা এমন একটা কিছু যা আমি অবসরের পর খুবই মিস করব।’ বোল্ট অবশ্য আজ পর্যন্ত কোন রেস শেষেই আনন্দে কাঁদেননি। ৯টি অলিম্পিক পদক জিতেছেন, তারপরও আবেগে কান্না করেননি। এমনকি রিলে সতীর্থ নেস্তা কার্টারের ডোপপাপের কারণে একটি পদক ফিরিয়ে দিতে হয়েছে তবু বিন্দুমাত্র আক্ষেপ করেননি। এমনকি হারের জন্যও কাঁদেননি। ২০০৪ সালে ক্যারিয়ারের প্রথম অলিম্পিক রেসে ফলস স্টার্টের কারণে বাদ পড়েছিলেন, ২০১১ সালের বিশ্ব আসরে ফাইনালে একই কারণে বাদ পড়েছিলেন। তবু কান্না আসেনি তার চোখে। এ বিষয়ে বোল্ট বলেন, ‘আামি যখন স্টেডিয়ামে থাকি তখন মনে হয় এটাই আমার পাওনা ছিল। হয়তো সেটা আপনারা বুঝতে না। সেক্ষেত্রে আমি কি করব, কি বলব, কিভাবে ওখান থেকে বেরিয়ে যাব? ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় বোল্ট দাবি করেছিলেন যে তার প্রিয়তম ইভেন্ট ২০০ মিটার। ট্রেডমার্ক সেই ইভেন্টে অংশ নিচ্ছেন না এবার বিশ্ব আসরে। কারণ হারতে চান না বোল্ট। অনুশীলনে খুব বেশি পরিশ্রম করতে নারাজ এই মুহূর্তে তিনি। আর ২০০ মিটারের জন্য কঠোর শ্রমের প্রয়োজন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোনভাবেই আমি সবকিছু গুলিয়ে ফেলতে চাই না।’ বোল্টের কোচ গ্লেন মিলস অবশ্য মনেপ্রাণেই বিশ্বাস করেন যে ২০২০ অলিম্পিকে অংশ নেয়ার সামর্থ্য আছে বোল্টের। কিন্তু আগামী আগস্টে ৩১ বছরে পা দিতে যাওয়া এ জ্যামাইকান জানিয়েছেন তিনি সেটা করতে চান না। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে অনুশীলন সঙ্গী ইয়োহান ব্লেক, টাইসন গে কিংবা জাস্টিন গ্যাটলিন কাউকে হুমকি হিসেবে দেখেননি। কিন্তু নবীন আন্দ্রে ডি গ্রাসিকে আসন্ন লড়াইয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন বোল্ট। তিনি বলেন, ‘একমাত্র যে মানুষটাকে আমি দেখেছি চ্যালেঞ্জ করে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলতে পারে সে হচ্ছে গ্রাসি। মৌসুমের শুরুতেই সে সত্যি দারুণ কিছু করে দেখিয়েছে। আমি এখন ডায়েট শুরু করে দিয়েছি। প্রস্তুত হচ্ছি সবকিছুর জন্য। আমি ট্রায়ালের জন্য অপেক্ষা করছি। সেটার পরই নিশ্চিতভাবে বলতে পারব কে আমার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে।’
×