ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়রের দুই বছর পূর্তিতে সংবাদ সম্মেলন

নির্বাচনী ওয়াদা পূরণে শতভাগ সাফল্য দাবি করলেন সাঈদ খোকন

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৭ মে ২০১৭

নির্বাচনী ওয়াদা পূরণে শতভাগ সাফল্য দাবি করলেন সাঈদ খোকন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর বিগত ২ বছরে ১০ বছরের উন্নয়ন কাজ করেছি। ভঙ্গুর ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) বসবাসরত নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে যেসব উন্নয়ন কর্মকা- সম্পন্ন করেছেন তা অন্য কেউ হলে এই সময়ের মধ্যে কোনক্রমেই করতে পারতেন না বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির প্রধান মেয়র সাঈদ খোকন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে শপথ নিয়ে নির্বাচনকালীন তার দেয়া ওয়াদা পূরণে নিজেকে শতভাগ সফল মেয়র বলে দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে রাজধানীর দক্ষিণ সিটিতে উন্নয়ন কর্মকা-ে প্রতিযোগিতা বাড়াতে প্রথমবারের মতো ‘মডেল ওয়ার্ড’ চালুরও ঘোষণা দেন। শনিবার বেলা ১১টায় ডিএসসিসির নগর ভবনে মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে ‘এগিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ ঢাকা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সাঈদ খোকন এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন উত্তরের চেয়ে নানা কর্মকা-ে এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করেন। সম্মেলনে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোঃ বিলাল, সচিব খান মোঃ রেজাউল করিম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালাহ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এসময় সকল কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর চামেলি আক্তার, কাউন্সিলর হুমায়ূন কবির ও আবু আহম্মেদ মন্নাফি বক্তব্য রাখেন। মেয়র বলেন, বিগত দুই বছরে দৃশ্যমান সকল উন্নয়ন কর্মকা- শুরু করে রাজধানীবাসীর আস্থা অর্জনে সফল হয়েছি। দুই বছরের বিবেচনায় কতটুকু সফল হয়েছি তা জনগণের কাছে জিজ্ঞেস করলেই বলতে পারবেন। আর এই সফলতা-বিফলতার হার নির্ণয় জনগণের ওপরই ছেড়ে দিলাম। বিভিন্ন মিডিয়ায় উন্নয়ন কর্মকা-ে ২ বছরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এগিয়ে রয়েছে বলে যেসব প্রতিবেদন এসেছে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, উত্তর সিটির চেয়ে কোনক্রমেই দক্ষিণ সিটি পিছিয়ে নেই। আপনাদের সামনে সব তথ্য তুলে ধরলাম। যদি উন্নয়ন কম হয়ে থাকে তাহলে আপনারা যাই বলবেন তাই মাথা পেতে নেব। মেয়র বলেন, রাজধানী ঢাকার ইতিহাস কমপক্ষে ৪শ’ বছরের। এই ইতিহাস আর এই নগরীর সমস্যা কোনক্রমেই দুই বছরেই সমাধান করা সম্ভব না বা ইতিহাসকে ঘুরিয়ে দেয়া যায় না। তবে আমি দায়িত্ব নেয়ার পর যে উন্নয়ন কাজ সম্পাদন হয়েছে, যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এতে আগামী ৩ বছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটির চেহারা অবশ্যই পাল্টে যাবে। সরকারের সর্বোচ্চ সহায়তায় আমরা দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছি। দায়িত্ব গ্রহণের ৫ বছর পূর্ণ হলে নাগরিকগণ অকল্পনীয়ভাবে পাল্টে যাওয়া নতুন, আধুনিক ও স্মার্ট ঢাকা দেখতে পাবেন। এ সময় তিনি গত দুই বছরে সম্পাদিত ও চলমান নানা উন্নয়ন কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। সাঈদ খোকন বলেন, গত দুই বছরে নগরীর উন্নয়ন ও শৃঙ্খলামূলক কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানাবিধ হুমকি-ধমকি ও প্রতিরোধ এসেছে। আমার বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন করা, ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার হুমকিসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নগর ভবন থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। তবু আমি কিন্তু কোন চাপে নতি স্বীকার করিনি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নাগরিকদের নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে ফুটপাথে চলাচলের জন্য অবিশ্বাস্য মনে হলেও গুলিস্তান, মতিঝিল, নিউমার্কেটের ফুটপাথ দখলমুক্ত করেছি। এখনও তা বহাল আছে। কর্মদিবসে ‘অফিস আওয়ারের’ পরে হকারদের ফুটপাথে বসার অনুমতিদানের জন্য সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন দিলকুশা, নবাবপুর রোড, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল সংলগ্ন স্থান, সেগুনবাগিচা ও বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় ৫টি হলিডে মার্কেট চালু করেছি। তবে হকারদের কেউ পেশা পরিবর্তন করতে চাইলে সে সুযোগও উন্মুক্ত রেখেছি। কিন্তু জনচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কাউকে ফুটপাথে বসতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলে থাকা সায়েদাবাদ এবং ইংলিশ রোডের অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড উদ্ধার করা হয়েছে। গোলাপবাগ মাঠ, শিশু পার্কের সামনের অবৈধ পার্ক দখলমুক্ত করা হয়েছে। নারিন্দাতে বিশাল আয়তনের দখলে থাকা জমি উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়র বলেন, ক্ষমতা গ্রহণের সময় নগরীতে রাস্তার ১০ ভাগ বিদ্যুত বাতিও জ্বলত না। এখন ৩৭ হাজার ২০০ এলইডি বাতি লাগানোর কাজ চলছে। এরই মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি বাতি লাগানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ জুন-জুলাই মাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। এসব এলইডি বাতি মোবাইল এ্যাপসের মাধ্যমে বাতি নিয়ন্ত্রণে ও নগর ভবনেই এটির কন্ট্রোল রুম স্থাপনের কাজ চলছে। ছোট-বড় অলিগলিসহ রাজপথের মোট ৩শ’ সড়ক নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২শ’ ১৪ দশমিক ৭২ কিলোমিটার রাস্তা, ৪৭ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার ফুটপাথ নির্মাণ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে ২শ’ ৩৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণ, ১শ’ ৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এবং ১শ’ ৪০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, মাত্র ৭ ঘণ্টায় এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে সক্ষম এমন অত্যাধুকি কোল্ড মিলিং মেশিন সংগ্রহ করা হয়েছে। এর ফলে পুরনো সড়কের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করেই মাত্র ৭ ঘণ্টায় এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা যায়। এর ফলে নতুন সড়ক নির্মাণে ব্যয় কমবে প্রায় ৪০ শতাংশ। মাত্র ৩ ঘণ্টায় ১ কিঃমিঃ সড়ক মার্কিং করতে সক্ষম এমন রোড মার্কার মেশিন ক্রয় ও ব্যাটিং প্লান্ট আরসিসি রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতের লক্ষ্যে নিজস্ব ব্যাটিং প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া নর্দমা পরিষ্কারের লক্ষ্যে ৩টি সাকার মেশিন সংগ্রহের কাজ চূড়ান্ত হয়েছে। বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নেয়া মেগা প্রকল্পের আওতায় ২টি অত্যাধুনিক পশু জবাইখানা নির্মাণসহ শিশু পার্ক নির্মাণ, যাত্রী ছাউনি, বাস-বে নির্মাণ, স্বচ্ছ পুলিশ বক্স স্থাপন, সড়কে সুপেয় পানি পানের জন্য ওয়াটার ফাউন্টেন নির্মাণ, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ ও সিসি ক্যামেরা বসানোসহ অনেক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে সড়ক থেকে অবৈধ ৩০ হাজার ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে। এজন্য তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফকে বিশেষ সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। সবুজায়নের অংশ হিসেবে জলসবুজে ঢাকা প্রকল্পের মাধ্যমে ৩১টি খেলার মাঠ ও পার্ক ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ বছরের শেষের দিকে কাজ শেষ হবে। ১১টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে, যার মধ্যে ৪৭টি নির্মাণাধীন। ১৭টি সংস্কার কাজ চলমান। চলতি বছরে ৮টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ ও ১৭টি সংস্কারের কাজ চলছে বলেও উল্লেখ করেন মেয়র। এসময় মেয়র ২০১৭ সালের মধ্যেই নগরের পাবলিক টয়লেট সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন ও আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিজ্ঞাপন প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান। মেয়র বলেন, জনতার কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কমপক্ষে বিশটি ওয়ার্ডে জনতার মুখোমুখি জনপ্রতিনিধি বিষয়ক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি। মেয়র দক্ষিণ সিটিতে উন্নয়ন কর্মকা-ে প্রতিযোগিতা বাড়াতে প্রথমবারের মতো ‘মডেল ওয়ার্ড’ চালুর ঘোষণা দেন। নাগরিক দুর্দশা লাঘবেও নাগরিকদের সহায়তায় যেসব ওয়ার্ডে বেশি উন্নয়ন কাজ করা হবে সেই ওয়ার্ডকে পুরস্কার প্রদানেরও ঘোষণা দেন তিনি। পুরনো যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, ৮১ চালককে কারাদ- ও এক হাজার ২শ’ ৩০টি মামলা ও ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ৫টি এসটিএস নির্মাণ করা হয়েছে। ২৩টির কাজ চলমান রয়েছে। পাঁচ হাজার ৭শ’ ওয়েস্টবিন নির্মাণ করা হয়েছে। মাতুয়াইলে আধুনিক ল্যান্ডফিল নির্মাণের জন্য ৮১ একর জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, গুলিস্তান, নিউ মার্কেট ও তার আশপাশের এলাকার ফুটপাথ থেকে লাইনম্যান নামধারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। যেসব চাঁদাবাজ বাস, লেগুনা বা অন্য যানবাহনে চাঁদাবাজি শুরু করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকা- তুলে ধরে সাঈদ খোকন বলেন, এ পর্যন্ত ৩টি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। আজিমপুর কবরস্থানের সংস্কার কাজ, আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন মসজিদ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সংস্কার কাজটি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া পোস্তগোলাতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য মহাশ্মশানঘাট নির্মাণ করে উদ্বোধন করা হয়েছে। ২১টি ব্যায়ামাগারের মধ্যে বর্তমানে ১৫টি চালু আছে এবং ৬টির সংস্কার কাজ চলছে। নাগরিক সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় এবং ট্রেড লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রাজধানীর একটি রোডকে মডেল রোড হিসেবে তৈরি করতে ইতোমধ্যে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংযোজন করে ধানম-ি শেখ কামাল সরণি পুরাতন ২৭নং রোড থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টের ডিজাইনে একটি মডেল রোড নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া, মহানগরীকে মশকমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত ও মশকবাহিত রোগ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পরিমাণ মশক নিধন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, পুরনো সীমানার সঙ্গে ঢাকার আশপাশের নতুন করে যুক্ত হওয়া ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল ও সারুলিয়া ইউনিয়নে ১শ’ ৫২ কিলোমিটার সড়ক, ফুটপাথ ও নর্দমা নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এর মাধ্যমে এলাকার নাগরিকগণ সুফল ভোগ করতে শুরু করবেন। মেয়র বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের সময় নগরীর রাস্তাঘাট ছিল ভাঙ্গাচোরা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভেঙ্গে পড়েছিল। মশক নিধনের ওষুধ ছিল না বললেই চলে। বাজেট বহির্ভূত ব্যয়ের কারণে ঠিকাদারদের বহু বিল বকেয়া থাকায় নগর ভবনের বিদ্যুত লাইন বিচ্ছিন্ন করার উপক্রম হয়েছিল। তবে তরুণ হিসেবে দায়িত্ব পালনে কখনও ভীত হইনি। ঢাকাকে সবুজ বৃক্ষশোভিত তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা ১৩টি স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় প্রায় ১০০ স্থপতিবিদকে নিয়ে ৩১টি খেলার মাঠ ও পার্ক ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে “জলসবুজে ঢাকা” প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এ বছরের শেষ নাগাদ এটি সমাপ্ত হলে ঢাকা এক অনন্য সাধারণ রূপ পাবে। শান্তিনগর এলাকায় হাঁটুপানি সমান জলাবদ্ধতা হতো। এলাকাবাসী অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করতেন। এ অবস্থা নিরসনে আমরা শান্তিনগরে ড্রেনেজ নির্মাণে নেয়া প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। জুলাই মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আগস্ট মাস থেকে শান্তিনগর এলাকায় কোন জলাবদ্ধতা হবে না বলে দাবি করেন মেয়র। এছাড়া শতভাগ ই-টেন্ডার চালু, ১১টি আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও ৪৭টির নির্মাণ কাজ চলমান ও ১৭টির সংস্কার কার্যক্রম চলছে। এর বাইরে ৩১টি খেলার মাঠ ও পার্কেও আধুনিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। গণকটুলি ও ধলপুরে ক্লিনারদের বসবাসকারী ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। দয়াগঞ্জের ভবন ভাঙ্গার কাজ চলছে। এছাড়া নিউ মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, ঢাকেশ্বরী মন্দির মার্কেট, চানখারপুল মার্কেট, সদরঘাট লেডিস পার্ক মার্কেট, বঙ্গবাজার মার্কেটসমূহ আধুনিকায়নের পরিকল্পণা গ্রহন করা হয়েছে। মহানগরীতে যানজট নিরসন ও সুষ্ঠু যানবাহন ব্যবস্থাপনার জন্য ২৩টি বাস-বে ও স্বচ্ছ পুলিশ বক্স নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও কমন ইউটিলিটি ডাক্ট নির্মাণ পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া নাগরিকদের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের মাধ্যমে বিগত দুই বছর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এক অভাবিত উন্নয়ন সাধন করেছে। আগামী কোরবানির ঈদগুলোতেও এভাবে স্বল্পতম সময়ে বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেয়া হবে। জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে পুরনো ঢাকায় বিদ্যমান কেমিক্যাল কারখানা অপসারণের লক্ষ্যে বিস্ফোরক অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে সঙ্গে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে । এছাড়া এবিসি রেডিও এফএম ৮৯.২তে নিয়মিত ‘হ্যালো মিস্টার মেয়র’ অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের সঙ্গে বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা নিয়ে জবাবদিহি করা হয়ে থাকে। মেয়র বনেন,ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে ৫৭টি ওয়ার্ডে নগর ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ডিজিটাল হাজিরা চালু, পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাজে উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য লোকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু। ওয়াই-ফাই, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, শতভাগ ই-টেন্ডারিং চালু করা হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় এবং ট্রেড লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সাইদ খোকন বলেন, দুই বছরে ৮৩ লাখ ৩ হাজার ৫০০ রোগীকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে প্রায় ২১ লাখ লোককে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও ১০ তলাবিশিষ্ট শহীদ নগর মাতৃসদন কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এর বাইরে নন্দীপাড়া খালের নাব্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে খাল দখল করে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসময় সব কাজে সফলতার জন্য তিনি সাধারণ নাগরিক, মিডিয়াকর্মী ও সংরক্ষিত নারী এবং সাধারণ কাউন্সিলরগণকে ধন্যবাদ জানান। নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যেই ঢাকাকে একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মেয়র।
×