নিস্তব্ধ রাতের কলতায় এখনও কি হেঁটে বেড়ান রবীন্দ্রনাথ
গলিপথ ধরে? পেছনে বেঁধে হাত, সিল্কের জোব্বায় মুড়িয়ে শরীর।
সারাদিনের শেষে যখনই গভীর নীরবতা নিয়ে কলকাতার
রাস্তাগুলো বড় বড় অজগর হয়, তখন কেন চোখের সামনে
রবীন্দ্রনাথ এসে দাঁড়ান? উইন্ডো ব্লাঙ্কেট সরিয়ে তাকালে
কেন মনে হয়- ওই গলিতে তিনি আছেন দাঁড়িয়ে, আর ভাবছেন,
মহেন্দ্র কি সত্যি আবার বের করেছিল পত্রিকা? চারু ছিল তার সঙ্গী?
না বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের দোলায় ভেসে গিয়েছিল মহেন্দ্র?
মনে হয় ডেকে বলি, রবীন্দ্রনাথ, হাত ধরো আমার,
নতুন পত্রিকা বের করতে এসেছি আমি, সঙ্গে নেই কোন চারু
কোন নষ্ট নীড়, আমি শুধু আমার, খবরের মানুষ আর কিছু নেই
পরিচয়। গভীর রাতে তোমার সঙ্গে তা বলে খবর নিয়ে
বলবো না কোন কথা- বরং প্রকৃতি কেমন করে চিত্রাঙ্গদা হয়ে
যায়, কেমন করে আজ চ-ালিকা বৌদ্ধ ভিক্ষু ছাড়াও জল
দেয় রায় চৌধুরীর হাতে গ্লাস তুলে, রায় চৌধুরী শুধু জল
নয় ঠোঁটে খায় তাঁর চুমু- জোড়াসাঁকো থেকে সামান্য দূরে
কলেজ স্ট্রিটে কফি হাউসের সিঁড়িতে। এসব জানাবো তোমাকে
তোমার মনে হয় এতক্ষণে গোলপুকুরের কথা মনে পড়ে গেছে,
সে সভ্যতা আছে কি না আছে জানি না আমি রবীন্দ্রনাথ।
তবু বার বার মনে হয়, তুমি কী সুন্দর অবলীলায়
উপনিষদকে উপন্যাস বানিয়ে নাম দিলে শেষের কবিতা।
আমাদের মনের ভেতর এক অমিত রায় দুইজন হয়ে এখনও
খেলা করে, উপনিষদের দুই পাখি যেন। রাত শেষ হয়ে এসেছে,
আর একটু পরেই পূবে ফর্সা দেবে, তুমি কি খালি পায়ে তখন
গঙ্গার পাড়ে যাবে। তখন ডেকো না আমায়, আমার অভ্যাস নেই
জোয়ারের নদীতে স্থান করা। বাথটাবে আমি প্রিয়াকে খুঁজি,
ভার্চুয়ালে খুঁজি কালিদাস, কেবল কলকাতায় এলে, রাতের
গভীরে গলিপথে তুমি এসে দাঁড়াও জীবন্ত রবীন্দ্রনাথ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: