ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চার ইস্যুতে মাঠে নামার প্রস্তুতি

চাঁদাবাজির বৈধতা চাই ॥ পরিবহন সেক্টরে অরাজকতার পাঁয়তারা

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ৩০ এপ্রিল ২০১৭

চাঁদাবাজির বৈধতা চাই ॥ পরিবহন সেক্টরে অরাজকতার পাঁয়তারা

রাজন ভট্টাচার্য ॥ সারাদেশে পরিবহন সেক্টরে আবারও অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। মালিক-শ্রমিকরা এক হয়ে আন্দোলনে মাঠে নামছে অন্তত চার ইস্যুতে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, সড়ক পরিবহন আইন প্রতিহত করা বা প্রস্তাবিত আইনে শাস্তি কমানো, চাঁদাবাজির বৈধতা নিশ্চিত করা, বাসভাড়া বাড়ানো ও রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের বৈধতা দেয়া। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭-এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইতোমধ্যে দেশের অন্তত ১৫টি জেলায় বিচ্ছিন্নভাবে পরিবহন ধর্মঘটসহ নানা কর্মসূচী হয়েছে। এদিকে চাপের মুখে আইন পর্যালোচনার জন্য কমিটি গঠন করেছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়। মূল উদ্দেশ্য হলো সড়ক দুর্ঘটনায় দোষী চালকের শাস্তি কমানো। এসবকিছুর নেপথ্যে রয়েছে সরকার সমর্থক পরিবহন নেতারা। গত বুধবার রাজধানীতে মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সরকারের প্রভাবশালী দুই মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। তাদের একজন মালিকদের অন্যজন শ্রমিকদের শীর্ষ নেতা। বৈঠকে দুই মন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করবেন তারা। তবুও আইন পাস হতে দেবেন না। যে কোন মূল্যে আইনটি প্রতিহত করারও ঘোষণা দেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা। আইনটি চূড়ান্তভাবে যেন পাস না হয় এজন্য সারাদেশে আন্দোলনের রূপরেখাও চূড়ান্ত হয় বৈঠকে। ৬৪ জেলায় আন্দোলনের কর্মসূচী নির্ধারণ ॥ ১৯৮৩ সালের পুরনো আইনে পরিচালিত হচ্ছিল গোটা পরিবহন সেক্টর। তাই আইনটি সময় উপযোগী করার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। ২০১০ সাল থেকেই এই উদ্যোগ নেয় সরকার। সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে প্রায় সব মহল থেকেই সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দোষী চালকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের দাবি জানানো হয়। আইনের খসড়ায় প্রথমে বিষয়টি যুক্ত করা হলেও পরবর্তীতে মালিক সমিতির চাপের মুখে ৫ বছর কারাদ-ের বিধান রাখা হয়। সর্বশেষ অনুমোদিত খসড়া আইনে দ-ের মেয়াদ তিন বছর করা হয়েছে। অপরাধ হবে জামিন ও আপোসযোগ্য! এতেও সন্তুষ্ট নন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, নতুন করে গাড়ি চালনায় ২৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমলযোগ্য অপরাধ হলে পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কেউ গাড়ি চালাতে পারবেন না। যদি কেউ তা করেন, তাহলে ছয় মাসের কারাদ- বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। আর কন্ডাক্টরের লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের কারাদ- অথবা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এছাড়া ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালালে এক বছর কারাদ- বা এক লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হবে। আর সড়কে দুটি গাড়ি যদি পাল্লা দিয়ে চালানোর সময় দুর্ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে তিন বছরের কারাদ- অথবা ২৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার জন্য মৃত্যু বা অন্যান্য ক্ষেত্রে আগের মতোই দ-বিধি অনুযায়ী শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, কেউ যদি গাড়ি চালিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নরহত্যা করে, তাহলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে। আর মৃত্যু নয়, এমন ঘটনায় ৩০৪ ধারা অনুযায়ী সাজা দেয়া হবে। শুধু দুর্ঘটনা হলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদ- দেয়া হবে। এই অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের দাবি ছিল সব মহল থেকেই। খসড়া আইনটি মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনের পরপরই মার্চের শুরুতে খোঁড়া অজুহাতে দেশব্যাপী টানা প্রায় তিনদিন পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। এক মন্ত্রী বাসায় আয়োজিত বৈঠকে এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে মন্ত্রী তা স্বীকার করেছেন। এরপর কৌশল পরিবর্তন করে আইনের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠতে থাকে পরিবহন সেক্টরের লোকজন। টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, সুনামগঞ্জ, সিলেট, শেরপুর, গাইবান্ধা, মেহেরপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ, নোয়াখালী, সিরাজগঞ্জ, বেনাপোল, হালুয়াখাটসহ বিভিন্ন জেলায় পরিবহন ধর্মঘটসহ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। সর্বশেষ গত বুধবার মালিক-শ্রমিকদের বিরুদ্ধে একতরফা শাস্তির অভিযোগ এনে যে কোন মূল্যে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭’ চূড়ান্তভাবে পাস হতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আইনে শাস্তি কমাতে সারাদেশে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের সিদ্ধান্তও নিয়েছে তারা। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭ ও সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে মালিক শ্রমিক প্রতিনিধি সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে মতামত তুলে ধরেন। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নেতাদের অনেকেই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণার দাবি জানান। কেউ কেউ সারাদেশে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘট করারও প্রস্তাব দেন। কারো কারো মত সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিভাগীয় পর্যায়ে পরিবহন ধর্মঘট করার। তারা বলেন, এই আইন পাস হলে শ্রমিকরা রাস্তায় গাড়ি নামাবে না। তাই যে কোন মূল্যে আইনটি চূড়ান্ত পাস হওয়ার আগে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তারা। বৈঠকে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, প্রয়োজনে সরকারে থাকব না। তবুও মালিক-শ্রমিক স্বার্থবিরোধী কালো আইন পাস হতে দেব না। তিনি বলেন, এই আইন পাস হলে পরিবহন সেক্টরে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। সঙ্কট বাড়বে। আমরা চাই না আইনটি এভাবে পাস হোক। আশাকরি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান বলেন, আইনের প্রতি আমাদের সমর্থন নেই। প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে কথা বলব। আপনাদের সঙ্গে বেইমানি করব না। নিশ্চিত থাকুন আমরা থাকতে এই আইন পাস হবে না। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, এককথায় বললে পুরো আইনে শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়নি। ইচ্ছেমতো শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিছু মানুষের চাপের মুখে সরকার নতি স্বীকার করেছে এমন অভিযোগ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা চাইব সরকার শ্রমিকদের উপলব্ধির কথা বুঝবে। তাদের কষ্টের কথা বিবেচনায় নিয়ে আইনটি চূড়ান্ত করার আগে অনেক কিছু সংশোধন করবে। অন্যথায় এটি একটি কালো আইন হিসেবে বিবেচিত হবে। আইনের অনেক ধারা অসামঞ্জস্য দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ২৫ হাজার থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। যা কোনভাবেই যৌক্তিক নয়। তারা বলেন, আইনের বিভিন্ন ধারা সংস্কার চেয়ে দেশের সকল জেলা উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ২০ মে’র মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে। প্রতিটি জেলা-উপজেলার মালিক ও শ্রমিক নেতারা জেলা প্রশাসন, ইউএনও, এসপি থেকে শুরু করে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে বৈঠক করবেন। এ ব্যাপারে জনমত গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করে আইনের অসঙ্গতি তুলে ধরা হবে। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে নতুন সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে আলোচনা করবেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী জনকণ্ঠকে বলেন, বৈঠকে যোগ দেয়া দুই মন্ত্রী বলেছেন প্রয়োজনে আইন ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা সাক্ষাত করব। আগামী ২০মে’র মধ্যে জেলা নেতাদের বলা হয়েছে, আইন বাস্তবায়ন হলে কি ধরনের সমস্যা হতে পারে তা লিখিত আকারে কেন্দ্রে জানাতে। তাছাড়া তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মন্ত্রীদের প্রশ্ন করে বলেছেন, আপনারা মন্ত্রিপরিষদে থাকতে কিভাবে এই আইন হচ্ছে। বৈঠক শেষে সারাদেশের পরিবহন নেতাদের কাছে ঐক্য জোটের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে লেখা সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে, আগামী ২০ মে’র মধ্যে প্রতিটি জেলায় মালিক-শ্রমিক সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭ এর অগ্রহণযোগ্য ধারাগুলো চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা। একই সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়রসহ স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা, প্রতি জেলায় মালিক শ্রমিক সমন্বয়ে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করে একই সময়ের মধ্যে করণীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অফিসে জানানো প্রভৃতি। চাঁদা আদায়/অন্যান্য ইস্যু সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাজধানীর চারটি বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে। এর সঙ্গে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা উভয়েই জড়িত বলে দাবি করেছেন সংগঠনের নেতারা। তারা বলছেন, বিআরটিএ এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে বাসের সংখ্যা ৪০ হাজার ৬১৬টি। মিনিবাসের সংখ্যা ২৭ হাজার ৪৫৭টি, ট্রাকের সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৩২৩টি। সব ধরনের পরিবহনের সংখ্যা ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৬টি। ঢাকাসহ বাংলাদেশের পরিবহনের বেসিক ইউনিয়নের সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। এই বেসিক ইউনিয়নগুলো বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত। প্রত্যেকটি বেসিক ইউনিয়ন গঠনতন্ত্র মোতাবেক শ্রম আইন অনুযায়ী সদস্যরা ইউনিয়নের চাঁদা দেন। কিন্তু এর বাইরে মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নগুলো বাড়তি টাকা আদায় করছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইনসুর আলী জনকণ্ঠকে বলেন, প্রতিদিন ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৬টি পরিবহন থেকে ৭০ টাকা করে চাঁদা আদায় করলে (প্রায়) বিশ কোটি চৌষট্টি লাখ তেইশ হাজার চারশত বিশ টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে। তারা বলছেন, পরিবহন সংশ্লিষ্ট এক শ্রেণীর চাঁদাবাজরা অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কিন্তু শ্রমিকদের কল্যাণে এই টাকা ব্যয় হয় না। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি দাওয়া তুলে ধরেছি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য কমে আসবে। এদিকে চাঁদাবাজির বৈধতা দিতে ইতোমধ্যে জেলা পরিবহন মালিকদের কাছে, আরেকটি চিঠি পাঠানো হয়েছে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে। তারা নতুন কায়দায় চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছে। যদিও শ্রম আইনের পরিপন্থি বাড়তি চাঁদা আদায়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা চাঁদা নেয়ার বিষয়টি একটি কাঠামোতে নিয়ে আসতে চাই। কেউ যেন পরিবহন সেক্টরে বাড়তি চাঁদা আদায় করতে না পারে। এজন্য মালিক ও শ্রমিক কমিটিগুলোকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সারাদেশে বাস ভাড়া বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরকারের ওপর অব্যাহত চাপ সৃষ্টি করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। যদিও এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তাছাড়া তেলের দাম কমানোর পর ভাড়া কমানো হয়েছিল যদিও বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া কোথায়ও কার্যকর হয়নি। বিশেষ করে দূরপাল্লার বাসে একেবারেই নয়। তাছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামে অটোরিক্সার ভাড়া বাড়ানোর জন্য অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে আলাদা প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আইন না থাকলেও রাজধানীতে চলছে সিটিং সার্ভিস। এসব বাস বন্ধের ঘোষণা দিয়ে আবারও অবস্থান থেকে সরে আসে বিআরটিএ। সিটিং সার্ভিস বৈধতা দিতেই এত নাটক করা হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। পরিস্থিতি বিবেচনায়, বিআরটিএ ১৫ দিনের জন্য সিটিং সার্ভিসের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের অভিযান বন্ধ রেখেছে। নতুন করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে সিটিং সার্ভিসের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। কিমিটির সুপারিশ এ ব্যাপারে ইতিবাচক হলে আইন সংশোধন করে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের বৈধতা দেয়া হবে। ইতোমধ্যে সিটিং সার্ভিসের পক্ষে করা কমিটি কাজ শুরু করেছে। তবে বাড়তি ভাড়া আদায় কোন অবস্থাতেই বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।
×