ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ রশিদ আলম

বিআরটিসির শক্তি বাড়ান

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৭ এপ্রিল ২০১৭

বিআরটিসির শক্তি বাড়ান

কিছুদিন আগে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করার পর রাস্তা থেকে বেসরকারী পরিবহন মালিকরা প্রায় চল্লিশ থেকে ৫০% গাড়ি রাস্তায় নামতে দেননি। এরাই সুকৌশলে সরকারী পরিবহন বিআরটিসিকে জীবন্মৃত পরিবহনে পরিণত করেছেন। রাজনৈতিক কোন দল যেখানে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে সফল হয় না ঠিক সেখানেই পরিবহন মালিকরা অঘোষিত ধর্মঘট ডেকে বসেন এবং সফল হয়ে যান। সুকৌশলে সরকারকে চাপের মধ্যে রেখে তাদের অন্যায্য দাবি আদায় করে নেন। দেশবাসী আশাবাদী হয়েছিলেন সিটিং সার্ভিস বন্ধের পর জনসাধারণের দুর্ভোগ কমে আসবে। কিন্তু পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কারণে এই উদ্যোগটা সফল হতে পারেননি। আমরা লক্ষ্য করেছি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী পর্যন্ত পরিবহন মালিকদের কাছে কিছুটা যেন অসহায় হয়ে পড়েছেন। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন হয় কিভাবে পরিবহন মালিকরা সরকারী নির্দেশ অমান্য করতে পারেন? এই সাহসটা তাদের কে দিল? কি তাদের পরিচয়? বেসরকারী মালিকানাধীন গাড়িগুলো প্রায়ই ত্রিশ থেকে চল্লিশ বছর পর্যন্ত সড়ক পথে চলাচল করে অপরদিকে সরকারী বিআরটিসির বাসগুলো চার-পাঁচ বছরের মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে। রহস্যটা কি? এর পেছনে কি মাফিয়া চক্র কাজ করছে? সরকারী পরিবহন ব্যবস্থাকে অকার্যকর প্রমাণ করার পর নিজেদের পরিবহন ব্যবসাকে চালু রাখার জন্য তারা বিআরটিসির মধ্যে কোন দানবকে বসিয়ে রেখেছেন কিনা এটা আমাদের প্রশ্ন। যেখানে বেসরকারী বাসগুলো ৪০ বছর সার্ভিস দিচ্ছে সেখানে বিআরটিসি বাসগুলো ৪-৫ বছরের মধ্যে অকেজো কিভাবে হয়ে যায়? গত ক’দিন জনসাধারণের দুর্ভোগের চিত্র আমরা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রত্যক্ষ করেছি। পরিবহন মালিকরা মনে হচ্ছে একটি অঘোষিত সরকার দ্বারা পরিচালিত। আগামী দিনগুলোতে যদি কোন রাজনৈতিক দল বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারকে সরাতে চায় তাহলে তারা বেসরকারী পরিবহন ব্যবসায়ীদের সহায়তা নেবেন। রাজনৈতিক দলগুলো যানে পরিবহন ব্যবসায়ীদের না আছে দেশপ্রেম না আছে সরকারের প্রতি আনুগত্য। এদের দ্বারা যে কোন রাজনৈতিক অপকর্ম করানো সম্ভব। এখন থেকেই যদি পরিবহন মালিকদের, শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণে না আনা যায় তাহলে সরকারের সব সাফল্য-ব্যর্থতায় পরিণত হয়ে যাবে। সাধারণ জনগণ সাফল্যগুলো ভুলে ব্যর্থতাটাইকে মনে রাখবেন। এই দানবরা এমন এক সমাজ থেকে উঠে এসেছেন যেখান থেকে তারা নৈতিক ও মানবিক কোন শিক্ষাই লাভ করতে পারেননি। কিছু প্রস্তাব পেশ করছি, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি বন্ধে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে নিয়োগ, পরিবহন সেক্টর থেকে চাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণ, সরকারী বিআরটিসিকে আরও শক্তিশালী করা, পরিবহন মালিকদের কঠোর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্মানিত সম্পাদক এবং মালিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা যারা পরিবহন সেক্টরে অরাজকতা তৈরি করছেন তাদের দমন করার ব্যাপারে এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যে দিকনির্দেশনা দেবেন সরকার সেটাকে অনুসরণ করবে। মিরপুর, ঢাকা থেকে
×